শেষ যাত্রায় ব্রাত্য, পথ হেঁটেছিলেন মাত্র কয়েকজন
শেষের সেদিন
একসময় রীতিমতো শরীরের যত্ন নিতেন জহর। ‘বাতাসার মধ্যে পেঁপের রস ভিজিয়ে খেত, ছাগলের দুধ খেত,’ বলেছেন স্বয়ং ভানু। কিন্তু অতিরিক্ত মদ্যপান লিভারের সর্বনাশ করেছিল। তিনবার জন্ডিস হয়ে শরীর একেবারে ভেঙে গিয়েছিল। ১৯৭৪-৭৫ নাগাদ যখন ‘ব্রজবুলি’ বা ‘যুক্তি তক্কো আর গপ্পো’র শুটিং করছেন তখন কঙ্কালসার চেহারা হয়ে গিয়েছিল তাঁর। চেনা যেত না সুস্বাস্থ্যের অধিকারী সেই পুরোনো জহরকে। সিনেমায় বিশেষ কাজ পেতেন না সে সময়ে। রঙমহলে কাজ করতেন।
১৯৭৭-এর পয়লা আগস্টের সকালে মেডিক্যাল কলেজে মারা যান জহর। খবর পেয়ে ভানুকে সঙ্গে নিয়ে ছুটে আসেন সৌমিত্র। কান্নায় ভেঙে পড়েন ভানু। ‘তখন আমরা শুধু দু’জন। আর কেউ নেই। পাড়ার লোকজন গেছে জিনিসপত্র কিনতে। আমরা উপরে গিয়ে দেখলাম, জহরদাকে সবুজ রঙের একটি কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে,’ স্মৃতিচারণ করেছিলেন সৌমিত্র। শেষ যাত্রায় ব্রাত্যই রইলেন জহর। ইন্ডাস্ট্রির খুব বেশি শিল্পী আসেননি সেদিন। তবে এসেছিলেন সুচিত্রা সেন। বেথুন কলেজের সামনে শোক মিছিল থামিয়ে গাড়ি থেকে নামলেন তিনি। চিরকাল জহরকে ‘ভাইয়া’ বলে ডেকে এসেছেন তিনি। লরিতে উঠে মৃতের কপালে বিদায়চুম্বন এঁকে দিয়ে বলেছিলেন ‘তুমি চলে গেলে চার্লি!’
আরও পড়ুন: নিখোঁজ যমুনা, খোঁজ সোশ্যাল মিডিয়ায়
স্ত্রী কমলা, তিন মেয়ে সর্বাণী, ইন্দ্রাণী, কল্যাণী ও এক ছেলে সব্যসাচীকে রেখে গেছেন জহর। ২০১৯-এ তাঁর জন্মশতবর্ষ পূর্ণ হলো। হয়নি কোনও অনুষ্ঠান। আজও প্রতিবছর বাবার জন্মদিন নিয়ম করে পালন করেন সব্যসাচী, জহরের মৃত্যুর সময় যাঁর বয়স ছিল মাত্র তেরো-চোদ্দ বছর।