তুমুল নাকি নেচেছেন? রহস্য রাখলেন টোটা
RBN Web Desk: মুম্বইয়ের হিন্দি ছবিতে ‘দম্পতি’র নতুন সংযোজন টোটা রায়চৌধুরী ও চূর্ণী গাঙ্গোপাধ্যায়। করণ জোহরের ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কহানি’র রানি, মানে আলিয়া ভট্টের বাবা-মায়ের ভূমিকায় টোটা-চূর্ণীর যুগলবন্দি টালা থেকে টালিগঞ্জ ক্রমশ প্রত্যাশার পারদ চড়িয়েই চলেছে। সেই কৌতূহলের প্যান্ডোরার ঢাকনা মেলে ধরল ছবির ‘ঢিন্ডোরা বাজেরে’ গানটির মুক্তির সময়।
সম্প্রতি ছবির প্রচারে কলকাতায় এসেছিলেন রকি আর রানি, অর্থাৎ রণবীর সিংহ ও আলিয়া। বাইপাসের ধারে এক সাততারা হোটেলের ব্যাঙ্কোয়েটে লাল কার্পেটে মোড়া মঞ্চে দাঁড়িয়ে জমকালো জামাই বরণে কোনও খামতি রাখলেন না চূর্ণী ও টোটা। রণবীরকে কাছে টেনে নিয়ে চূর্ণীর দরাজ সার্টিফিকেট, “মিষ্টি ছেলে, মেরে কো লড়কা পসন্দ আয়া। সর্বক্ষণ যেন এনার্জির ইঞ্জিন।” ওদিকে মেয়ের বাবা টোটার কৃতজ্ঞতায় “করণ স্যার।” কারণ টোটার গোটা কেরিয়ারে এই ছবি নাকি “বেস্ট সিনেম্যাটিক জার্নি।” সেই সফরে টোটা অভিভূত অভিনেত্রী আলিয়ার “ইনক্রেডিবল ইনসটিঙ্কট” আর রণবীরের মধ্যে রুশ নাট্য পরিচালক অভিনেতা কনস্টান্টিন স্তানিস্লাভস্কির “মেথড” এবং “ইনসটিঙ্কট”-এর সমন্বয় দেখে। অর্থাৎ বাঙালি শ্বশুরেরও পাঞ্জাবি জামাই পছন্দ।
আরও পড়ুন: “আর ভালো লাগছে না”
‘ঢিন্ডোরা বাজেরে’ গানটিতে আলিয়া-রণবীরের ইলেকট্রিক এনার্জির সঙ্গে গ্ল্যামারের গনগনে আঁচ। জয়া বচ্চন, শবানা আজ়মি, ধর্মেন্দ্র, কে নেই? টোটা সেখানে তাৎপর্যপূর্ণ উপস্থিতি আর ইঙ্গিতপূর্ণ দৃষ্টি দিয়েও নিস্প্রভ। সত্যিই কি তাই? ধুয়াধার নাচাগানার মধ্যে টোটার কোনও সক্রিয়তা নেই কেন? “কে বলেছে আমি নাচিনি,” টোটার কথায় কিছু একটার আভাস। যোগ করলেন, “ক্যামেরার পেছনে নেচেছি। এরকম সব অসাধারণ পারফর্মারদের সঙ্গে কার না নাচতে ইচ্ছে করে।”
টিম ‘রকি অউর রানি কি প্রেম কহানি’
টোটার হেঁয়ালির ওপর রহস্যের ধোঁয়া ছড়িয়ে দিলেন আলিয়া-রণবীর। আলিয়া বললেন, “গানের মধ্যে একটা সারপ্রাইজ় আছে।” রণবীরের ভাষায়, “সিক্রেট।” আলিয়ার সংযোজন, “সেটা জানা যাবে ২৮ জুলাই। প্রেক্ষাগৃহের দর্শক এক চমকপ্রদ জিনিস আবিষ্কার করবেন যা অ্যালবামে নেই।” জোর জল্পনা, টোটা নাকি তুমুল নেচেছেন ধুতি-পাঞ্জাবি পরে। সেদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে সেই ব্যাপারে প্রশ্ন করলেও, সবার মুখেই কুলুপ। রহস্য রাখলেন টোটা নিজেও।
ওদিকে চূর্ণীর মুখে বাকি নৃত্যশিল্পীদের প্রশংসা। বললেন, “ওঁরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফ্লোরে বসে অপেক্ষা করেছেন। একটা সিকোয়েন্স যতবার টেক হয়েছে। ওঁরা ততবার শট দিয়েছেন। গানে অংশ নিয়ে আমিও গর্বিত।”
আরও পড়ুন: ‘মেমসাহেব’-এ থাকছেন না প্রসেনজিৎ
করণের ছবি মানেই তারকার সমাবেশ। টোটা শোনাচ্ছিলেন সেই তারকা সান্নিধ্যের কথা। বললেন, “একদিন শ্যুটিং শেষে হোটেলের লনে হাঁটছিলাম। একটু দূরে শুনতে পেলাম মহিলা কণ্ঠে কেউ রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইছেন। কাছে গিয়ে দেখি শাবানাজি। ভিডিওকলে ওঁর কোনও পরিচিত বাঙালি বান্ধবীর সঙ্গে রবীন্দ্রসঙ্গীত রিহার্সাল দিচ্ছেন। আমি স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে দেখছি শবানাজির একাগ্রতা।”
জয়াকে নিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা আবার ভিন্ন। জানালেন, “এই সবার সঙ্গে হাসিঠাট্টা করছেন, জোকস বলছেন। আবার পরক্ষণেই পাহাড় প্রমাণ ব্যাক্তিত্ব নিয়ে পাথরের মতো গম্ভীর।” ধর্মেন্দ্রয় মুগ্ধ টোটা বললেন, “অতবড় স্টার, কোনও অহঙ্কার নেই। কাছে ডেকে গল্প করলেন। কলকাতার কথা জানতে চাইলেন। বললেন, ওঁর প্রচুর বাঙালি বন্ধু আছে। তাঁদের সঙ্গে ওঁর নিয়মিত কথা হয়।”
আরও পড়ুন: পরমব্রতর পরিচালনায় ঋত্বিক?
চূর্ণীও মুগ্ধ স্বপ্নের অভিনেত্রীদের সঙ্গে কাজ করে। বললেন, “আমার দেখা প্রথম হিন্দি ছবি ‘মাসুম’। সেই শবানা আজ়মিকে আমি কাছ থেকে দেখছি, অভিনয় করছি। সঙ্গে জয়া বচ্চন! আমি রোমাঞ্চিত।”
টোটা-চূর্ণী দুজনেরই এর আগে হিন্দি ছবিতে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তবে করণ মানেই হিন্দি ছবির বৃহত্তম দুনিয়ায় নিজেকে অভিষিক্ত করা। সেই সাম্রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হতে পেরে টোটা-চূর্ণী যে আপ্লুত, তা তাঁদের শরীরী ভাষাতেই স্পষ্ট।
ছবি: ট্যুইটার ও রাজীব মুখোপাধ্যায়