রাস্তার অচেনা মানুষ ডেকে সাহস যুগিয়েছেন: সৃজিত
কলকাতা: ‘গুমনামী’ তৈরি করার সময় রাস্তার অচেনা মানুষও ডেকে সাহস যুগিয়েছেন, এমনটাই বললেন এই ছবির পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান রহস্য সংক্রান্ত গঠিত মুখার্জী কমিশনের রিপোর্ট অবলম্বনে ‘গুমনামী’ পরিচালনা করেছেন সৃজিত। ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে রয়েছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, অনির্বাণ ভট্টচার্য, তনুশ্রী চক্রবর্তী ও বিপ্লব দাশগুপ্ত।
উত্তর কলকাতার সিমলা ব্যায়াম সমিতির সঙ্গে এক সময় ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল নেতাজীর। দু’বারের সভাপতিও ছিলেন তিনি। সেই সংস্থারই দুর্গাপূজা প্রাঙ্গণে গতকাল সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন সৃজিত সহ ছবির সঙ্গে যুক্ত শিল্পী ও কলাকুশলীরা।
“‘গুমনামী’র প্রস্তুতি পর্ব থেকেই ব্যক্তিগত আক্রমণের সম্মুখীন হয়েছি আমি,” বললেন সৃজিত। “অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল থেকে শুরু করে মেরে খুলি ফাটিয়ে দেওয়ার হুমকি, এমন কি দেশছাড়া করার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে আমাকে। এত সত্ত্বেও সম্পূর্ণ অপরিচিত মানুষও রাস্তায় হাত ধরে ডেকে বলেছেন, দাদা আপনি লড়ে যান, আমরা আছি। নেতাজী কোনও বিশেষ পরিবারের সম্পত্তি নয়, বলেছেন তাঁরা।”
তবে ‘গুমনামী’ নিয়ে কার্যত বিভক্ত বসু পরিবার। এই ছবির বিরুদ্ধে সব থেকে বেশি সরব হয়েছেন নেতাজীর ভাতুষ্পুত্র শিশির বসুর স্ত্রী কৃষ্ণা বসু ও তাঁর ছেলে সুগত বসু। নেতাজীর প্রপৌত্র ও ভারতীয় জনতা পার্টির নেতা চন্দ্র কুমার বসুও ‘গুমনামী’র বিপক্ষে। ছবি নিয়ে আইনী নোটিসও পেয়েছেন সৃজিত। অন্যদিকে গুমনামী বাবার তত্ত্ব একেবারে উড়িয়ে দেননি নেতাজীর ভাই শরৎ কুমার বসুর নাতি ও নাতনি আর্য কুমার বসু ও জয়ন্তী রক্ষিত সহ বসু পরিবারের আরও অনেকে।
আরও পড়ুন: তিন মূর্তি ও পায়ের তলায় সরষে
“প্রাণনাশের হুমকির ব্যাপারে অনেকেই আমাকে ফৌজদারী মামলা করতে বলেছেন,” জানালেন সৃজিত। “তবে সে সব করতে অনেক সময় লগাবে। ছবিটা মুক্তি পাওয়ার পর হয়তো হাতে কিছুটা সময় পাব। তখন আমার উকিলের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব।”
নেতাজী সংক্রান্ত তিনটি তত্ত্বই—বিমান দুর্ঘটনা, রাশিয়াতে মৃত্যু এবং গুমনামী বাবা—স্থান পেয়েছে সৃজিতের ছবিতে।
“ছবিটা যে বিতর্কিত হবে এটা আমরা শুরু থেকেই জানতাম,” বললেন প্রসেনজিৎ। “তবে স্বাধীন দেশে সবারই নিজের কথা বলার, প্রশ্ন করার অধিকার আছে। সেরকমই কিছু প্রশ্ন তোলে ‘গুমনামী’।”
ছবি: সবুজ দাস