“আর ভালো লাগছে না”
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে তিনি কখনওই খুব একটা উৎসুক বোধ করেন না। ইচ্ছে হলে তবেই উত্তর দেন। বাংলা ছবির বিশিষ্ট অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তী ইদানিং কাজ কমিয়ে দিয়েছেন অনেকটাই। কিছুদিন আগে শোনা গিয়েছিল তিনি অবসর নেবেন। সম্প্রতি দেবদূত ঘোষের ছবি ‘আদর’-এর ট্রেলার মুক্তি অনুষ্ঠানে তাঁকে পাওয়া গেল। অভিনয় থেকে অবসর এবং আরও অনেক বিষয়ে তিনি কথা বললেন রেডিওবাংলানেট-এর সঙ্গে।
এখন তো কাজ অনেক কমিয়ে দিয়েছেন। কোনও ছবিতে সই করার সময় কী দেখেন? চিত্রনাট্য না পরিচালক?
সব্যসাচী: অবশ্যই পরিচালক। চরিত্র, লোকেশন, সহঅভিনেতা, এগুলো অনেক পরে আসে। সবার আগে আমি পরিচালক কে, সেটা দেখি। বাকি বিষয়গুলো অনেক পরের ব্যাপার। যেমন এই ছবিটা করার কারণ দেবদূত এর পরিচালক। দ্বিতীয় কারণ অবশ্যই হাতি।
এই ছবির গল্পটা হাতি নিয়ে। আপনি নিজে একজন পশুপ্রেমী। এরকম ছবি আরও হোক এটাই কি চাইবেন? কী ধরনের ছবি আপনি নিজে পছন্দ করেন?
সব্যসাচী: অবশ্যই চাইব এরকম ছবি হোক। দর্শক ইদানিং গোয়েন্দা, থ্রিলার, প্রেম, রহস্য এসবই বেশি দেখে। পশুপাখি নিয়ে ছবি মানুষ খুব একটা পছন্দ করেন না, অন্তত এখানে। আমার মতে এরকম ছবি আরও হওয়া উচিত। সারা পৃথিবীতে এই বিষয়ের ওপর ছবি হয়। তাহলে এখানে কেন হবে না! বাঙালি যথেষ্ট সচেতন ও বুদ্ধিমান জাতি। তাই পশুদের প্রতি তারা সহানুভূতিশীল হবে সেটাই কাম্য। সবটা সরকার করবে কেন? সাধারণ মানুষেরও কিছু কর্তব্য আছে। এটা কিন্তু বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংক্রান্ত কোনও জ্ঞানের ছবি নয়। বরং জন্তু-জানোয়ারকে ভালোবাসার ছবি।
আরও পড়ুন: বড়পর্দায় সূর্যশেখরের বায়োপিক
নতুন চরিত্র এলে কীভাবে নিজেকে প্রস্তুত করেন? চরিত্র নিয়ে ভাবনাচিন্তা নাকি চিত্রনাট্য অনুযায়ী অভিনয়, আপনার পদ্ধতি কোনটা?
সব্যসাচী: চরিত্র বিশ্লেষণ আমি করি না। পরিচালক যেমন বলেন আমি তেমনটাই করে থাকি। এসব নিয়ে এখন আর ভাবতে ভালো লাগে না। তার চেয়ে ক্যামেরা নিয়ে জঙ্গলে বেরিয়ে পড়া ভালো। নিজের ছবি খুব একটা উঠুক সেটা চাই না। অনেক কাজ করেছি এখন আর নয়। এখন খুব বেছে কাজ করব।
কিছুদিন আগে বাংলাদেশে এক সাক্ষাৎকারে আপনি বলেছিলেন অভিনয় থেকে অবসর নিয়েছেন। সেটা কি তাহলে ভুল খবর ছিল?
সব্যসাচী: একেবারেই। আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল আপনি আর ফেলুদা করছেন না? বললাম, না, অনন্তকাল ধরে তো ফেলুদা করা যায় না। এবার নতুন ফেলুদা আসুক। বুড়ো হয়ে গিয়েও আমিই ফেলুদা করে যাব এটা হতে পারে না। তাই আমাকে রিটায়র করতেই হবে। সেখান থেকেই ওরা ধরে নিল আমি আর অভিনয় করতেই চাই না। অবশ্য তাতে আমার বেশ সুবিধাই হয়েছে। আমি অভিনয় কমিয়ে ফেলেছি অনেকটা। ওটা ধরেই আমি কাজ কমিয়ে দিলাম।
কিন্তু হঠাৎ কাজ কমিয়ে দেওয়ার কারণ কী? ফেলুদা না করলেও তো আরও অনেক চরিত্র ছিল
সব্যসাচী: আমার আর ভালো লাগছে না। আলাদা করে আমাকে কোনও রোল তো কেউ কখনও দেয়নি। আগে যা করেছি, সেই জিনিসই করে এসেছি। নতুন কিছু পাইনি।
আরও পড়ুন: ‘মাসুম’-এর সিক্যুয়েল করবেন শেখর?
এটা কি তাহলে কোনও ক্ষোভ বা অভিমান থেকে নেওয়া সিদ্ধান্ত?
সব্যসাচী: না-না, আমার কোনও ক্ষোভ নেই। অভিমানও নেই। চাঁদে যেতে পারিনি বলে কি আমার ক্ষোভ থাকবে? সেরকমই এখানেও কোনও ক্ষোভ নেই।
নতুন ফেলুদা বা ফেলুদাদের (অভিনেতাদের) কাজ দেখছেন? কেমন লাগছে?
সব্যসাচী: খুব ভালো লাগছে।
ফেলুদা নিয়ে আরও কাজ হোক চাইবেন?
সব্যসাচী: নিশ্চয়ই হোক। সবাইকে সুযোগ দেওয়া উচিত।