“একেনের সঙ্গে জটিলেশ্বরের ব্যক্তিত্বের সংঘর্ষ হবেই”
একেন্দ্র সেনের চরিত্রে তিনি প্রতিষ্ঠিত। এমন মজাদার গোয়েন্দা বাংলা সাহিত্যে খুব বেশি নেই। সেই একই অভিনেতা এবার ‘প্রধাণ’ ছবিতে দেবের বিপরীতে তুখোড় ভিলেন হিসেবে। যদিও বিভিন্ন ধরণের চরিত্রে নিজেকে মেলে ধরতেই স্বচ্ছন্দ অভিনেতা অনির্বাণ চক্রবর্তী, তবু ‘প্রধাণ’ ছবির জটিলেশ্বর তাঁর প্রথম তথাকথিত বাণিজ্যিক ছবির খলচরিত্র। বড়দিনের আগেই মুক্তি পাচ্ছে ‘প্রধাণ’। সেই ছবি নিয়ে নানা অভিজ্ঞতার কথা রেডিওবাংলানেট-কে জানালেন অনির্বাণ।
তুমি যে ধরণের ছবি করো তার থেকে ‘প্রধাণ’ বেশ আলাদা। এই ছবিতে অভিনেতা অনির্বাণকে তার অভিনয়ের স্টাইলে ঠিক কতটা পরিবর্তন করতে হলো?
অনির্বাণ: ঠিক পরিবর্তন বলা যায় না। বরং এটাকে একটা শিফ্ট বলা যায়। আমি এরকম নেগেটিভ চরিত্র আগে করিনি। তার কারণ আমার কাছে এরকম কোনও চরিত্র আগে আসেনি। এরকম সেটআপের ছবি আমার অভিজ্ঞতায় এই প্রথম। আমার কিন্তু এই ধরণের চরিত্র করতে পেরে খুব ভালো লেগেছে। ভিলেন বা ধূসর চরিত্র আমি আগেও করেছি। কিন্তু আমার অভিনয় যে বাণিজ্যিক ছবিতেও খাপ খেয়ে গেছে সেটা ভেবে বেশ ভালো লাগছে।
একেনের চরিত্রটা পর্দায় তোমার তৈরি করা। একেন তোমার হাত দিয়েই পরিচিতি পেয়েছে। সেখানে জটিলেশ্বরের মতো একটা নেগেটিভ চরিত্র সেই ইমেজটারর ওপর প্রভাব ফেলতে পারে এটা মনে হয়নি কখনও?
অনির্বাণ: না, সেটা একবারও মনে হয়নি। একেনের সঙ্গে জটিলেশ্বরের ব্যক্তিত্বের একটা সংঘর্ষ লাগবেই সেটা আমি জানি। কারণ দুটো সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুর চরিত্র। একেন খুব উজ্জ্বল ও পজ়িটিভ। সেখানে জটিলেশ্বর ডার্ক শেডের। কিন্তু আমি দ্বিতীয়টাও করতে চাই। কারণ আমি একজন অভিনেতা। যত ধরণের চরিত্র আমার কাছে আসবে আমি করতে প্রস্তুত। একজন অভিনেতা হিসেবে বারবার এই চ্যালেঞ্জটা নিতে আমার মজা লাগে।
আরও পড়ুন: ডেভিড হেয়ারের জীবনী প্রকাশ
জটিলেশ্বর করা কতটা কঠিন ছিল?
অনির্বাণ: কঠিন বলব না। তবে জটিলেশ্বর চরিত্রটা সত্যিই জটিল। এরকম কোনও লোক আমি কোনওদিন দেখিনি। তাই চরিত্রটা কীভাবে করব সেটা নিয়ে একটু ভাবতে হয়েছিল। কারণ এই লোকটাকে দেখে বোঝা যায় না সে খারাপ লোক। যতক্ষণ না এর খারাপ হওয়ার কারণ ঘটছে ততক্ষণ কিন্তু সে আপাদমস্তক ভালো লোক। তাই এরকম একজন ধূর্ত লোক কেমন হতে পারে, সেটা আমাকে ভেবে নিতে হয়েছে। তাছাড়া ৩৫ দিন ধরে শ্যুট হওয়ার ফলে কিছুদিন পর আবার যখন চরিত্রটা করছি, তখন সেই একই টোনে ফিরে যাওয়া, এই ব্যাপারটা মাথায় রাখতে হয়েছিল।
দেবের সঙ্গে এটা তোমার প্রথম ছবি। একজন সুপারস্টারের সঙ্গে সেটে কাজ করার অভিজ্ঞতা কেমন?
অনির্বাণ: প্রথম ছবিই শুধু নয়, দেবের সঙ্গে এই আমার প্রথম আলাপ। শুধু অভিনেতা বা সুপারস্টার নয়, দেব এই ছবিতে প্রযোজনার দায়িত্বেও রয়েছে। প্রযোজক হিসেবে দেব ভীষণই ভালো। আর অভিনেতা হিসেবে ও সারাক্ষণই চেষ্টা করে যায় কীভাবে আরও ভালো করা যায়। আমার সঙ্গে দেবের অনেকগুলো দৃশ্য রয়েছে। ও প্রতি দৃশ্যে বারবার জিজ্ঞাসা করেছে ঠিক হচ্ছে কিনা। এটা শুধু আমার সঙ্গে নয়, ও অনেকের সঙ্গেই করে। ওর দিক থেকে কাজটা যাতে সবচেয়ে ভালো হয় সেই চেষ্টাটা ওর মধ্যে সবসময় থাকে।
আরও পড়ুন: অন্তত পাঁচ বছর থিয়েটার করার পরামর্শ মনোজের
তুমি নাকি দেবের সিনেমার লাইব্রেরি? দেব কিন্তু নিজে এ কথা বলেছে।
অনির্বাণ: (হেসে) আরে না, তেমন কিছুই নয়। আমরা তো অনেকদিন একসঙ্গে শ্যুট করেছি। তখন নানা বিষয়ে গল্প হতো। তখন কথায়-কথায় কিছু ছবির কথা হয়ত বলেছি। বেশিরভাগই হিন্দি বা বিদেশি ছবি। এরকম অনেককেই বলে থাকি। দেব কিন্তু অত ব্যস্ততার মধ্যেও ছবিগুলো দেখত। দেখে আমাকে ফিডব্যাকও দিতো। আরও কিছু ভালো ছবির নাম জানতে চাইত। ব্যস, এইটুকুই আর কী!
ছবি: প্রতিবেদক