‘আমার কাছে কন্টেন্টই শেষ কথা’
আগামীকাল মুক্তি পেতে চলেছে আবির চট্টোপাধ্যায়, পাওলি দাম, সৌরভ দাস ও অরুণিমা হালদার অভিনীত ছবি তৃতীয় অধ্যায় । তার আগে একান্ত সাক্ষাৎকারে পরিচালক মনোজ মিশিগান রেডিওবাংলানেট-কে জানালেন এই ছবির গল্প ও তাঁর আগামী দিনের পরিকল্পনা।
তৃতীয় অধ্যায়–এর ট্রেলার দেখে মনে হচ্ছে এটি থ্রিলারধর্মী ছবি। ছবির গল্পটা কি নিয়ে?
হ্যাঁ থ্রিলারধর্মী তো বটেই। আবিরের চরিত্রটির নাম কৌশিক। সে একজন ক্রীড়া শিক্ষক। কৌশিক তার বাবাকে খুঁজতে আসে একটি ছোট্ট শহরে । সেখানে হঠাৎ করেই সে তার পুরনো প্রেমিকাকে দেখতে পায়। এই চরিত্রটি করছে পাওলি। ছবিতে ওর নাম শ্রেয়া। এবার শুরু হয় কৌশিকের শ্রেয়াকে নতুন করে খোঁজার পালা। সেখান থেকে ধীরে ধীরে জানা যায় কেন ওদের সম্পর্কটা ভেঙে গিয়েছিল, বা আবার সেটাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব কি না। গল্পটাকে ডার্ক থ্রিলার বলা চলে। গল্পে বেশ কয়েকটা ট্যুইস্ট আছে, নানান ওঠাপড়ার মধ্যে দিয়ে ভালবাসায় ফেরা আছে।
ছবিতে সৌরভের চরিত্রটা কি আবিরের ছোটবেলার?
না, ওটা একটা আলাদাভাবে চলা সমান্তরাল গল্প। সৌরভে ও অরুণিমার অভিনীত চরিত্র দুটির নাম ঋত্বিক ও মৌসুমি। ওদের গল্পটা কৌশিক-শ্রেয়ার গল্পের পাশাপাশি চলে।
যে মৃত্যু আজও রহস্য
ছবির নাম তৃতীয় অধ্যায় কেন? তিনটে পর্বের কোনও ব্যাপার থাকছে কি?
না। ছবির গল্প একটাই। কিন্তু গল্পটা শুরু হচ্ছে তৃতীয় অধ্যায় থেকে। প্রথম দুটো অধ্যায় কি সেটা জানা যাবে ছবিটা দেখলে।
এইট্টি নাইন, আমি জয় চ্যাটার্জি, তৃতীয় অধ্যায়, তিনটিই থ্রিলারধর্মী ছবি। পরপর একই জঁরের ছবি কেন?
আসলে থ্রিলার এমন একটা জিনিস যাকে যে কোনও জঁরে ফেলা যায়। যেমন এই ছবিটা একটা রোমান্টিক থ্রিলার। আবার এইট্টি নাইন ছিল সাইকো থ্রিলার। আমি জয় চ্যাটার্জি ছবিতে ড্রামার মধ্যে দিয়ে থ্রিলার এসেছে। দেখুন, থ্রিলার মানে তো দর্শককে কিছু একটা দিয়ে থ্রিল করা। সেটা সংলাপ হতে পারে, আবার কোনও একটা খুনের ঘটনাও হতে পারে। আসলে থ্রিলার শব্দটার ব্যাপ্তি অনেকটা জুড়ে, তাই বিভিন্নভাবে সেটাকে কাজে লাগানো যায়।
তিন মূর্তি ও পায়ের তলায় সরষে
তাহলে এখন থেকে শুধুই থ্রিলার?
না তেমন কোনও ভাবনা নেই (হেসে)। ইচ্ছে আছে রোমান্টিক কমেডি বা হরর নিয়ে কাজ করার। আসলে আমার কাছে গল্প বা কন্টেন্টই শেষ কথা। সেটা কোন জঁরের হবে, সেটা কখনও আগে থেকে ভেবে রাখি না। যদি তেমন কোনও প্লট পাই, তাহলে আবারও থ্রিলার ছবি হতে পারে।
আপনার দ্বিতীয় ছবি ছিল ডামাডোল। সেরকম মজার ছবি কি আর করবেন?
করতেই পারি। যদি সেরকম কিছু মাথায় আসে। আমার কাছে আইডিয়াটাই আসল।
আমি জয় চ্যাটার্জীতে আবির ছিলেন, আবার এই ছবিতেও আবির। বারবার একই অভিনেতা কেন?
আমি আবিরকে আগে সেভাবে চিনতাম না। আমি জয় চ্যাটার্জী করার সময় ওর সঙ্গে খুব ভাল একটা বন্ডিং তৈরি হয়ে যায়। ও এমন একজন অভিনেতা যার কোনও ব্যাগেজ নেই। খুব মাটির মানুষ। কাজের ব্যপারে ভীষণ ফোকাসড। ওর সঙ্গে নিশ্চিন্তে কাজ করা যায়। তবে এই ছবির গল্প লেখার সময় আমি আবির বা পাওলি কাউকেই ভাবিনি। সত্যি কথা বলতে কি, গল্প লেখার সময় এগুলো নিয়ে কোনওদিন ভাবিও না। যখন ঠিক করলাম ছবি করব, তখন ভাবতে বসে আবির আর পাওলির কথাই প্রথম মাথায় এল।
তাশি গাঁওয়ে একদিন
তৃতীয় অধ্যায়-এর শ্যুটিং তো শেষ হয়েছিল ২০১৭-তে। তাহলে মুক্তি পেতে এত দেরী হল কেন?
শ্যুটিং শেষ হয়েছিল ২০১৭-এর নভেম্বরে। তারপর বাকি কাজ শেষ হতে এপ্রিল হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু যেহেতু এটা প্রেমের ছবি, তাই আমরা চেয়েছিলাম এটা ফেব্রুয়ারীতেই মুক্তি পাক। ২০১৮-এর ফেব্রুয়ারীটা মিস করে যাওয়ায় প্রযোজক সংস্থা, আবির, পাওলি ও বাকি সকলের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করা হয় এটা এই বছর মুক্তি পাবে।
বড় পর্দা ছাড়া অন্য কোনও ফরম্যাটে কাজ করার কথা ভাবছেন কি? ওয়েব ফরম্যাটে প্রায় সবাই কাজ করছেন আজকাল, সেরকম কোনও পরিকল্পনা আছে?
আমি অনেকগুলো শর্ট ফিল্ম নিয়ে চিন্তাভাবনা করেছিলাম। একটা শেষও করেছি। আর একটা করেছি যেটার মুখ্য চরিত্রে রাজেশ শর্মা আছেন। সেটার এখন পোস্ট-প্রোডাকশনের কাজ চলছে। ওয়েবে করার মত একটা গল্প ভেবেছি, তবে সেটা খুব একটা এগোয়নি। এই ছবিটা রিলিজ় হয়ে গেলে তারপরে চিন্তাভাবনা করব।
আর আগামী ছবি?
একটা হিন্দি ছবি করব হয়ত। গল্প তৈরি আছে। তবে কাস্টিং নিয়ে এখনও কিছু ভাবিনি। বাংলায় একটা থ্রিলার আর একটা হরর ছবি নিয়ে ভাবছি, যদিও এখনও জানিনা কোনটা আগে করব। তৃতীয় অধ্যায় মুক্তির পর দুটো সপ্তাহ ছুটি নেব। তারপর আগামী কাজের কথা ভাবা যাবে।