অমিতজির সংলাপ শুনে ভুলে গেছিলাম আমাকে কী বলতে হবে: স্বস্তিকা
RBN Web Desk: “নার্ভাস রেক বলতে যদি কিছু বোঝায় সেটাই হয়েছিল ওঁর সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে,” বললেন অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় (Swastika Mukherjee)। রিভু দাশগুপ্তের (Ribhu Dasgupta) ‘সেকশন ৮৪’ (Section 84) ছবিতে প্রবাদপ্রতিম অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনের (Amitabh Bachchan) সঙ্গে একই দৃশ্যে কাজ করতে হয়েছিলল স্বস্তিকাকে। অভিনয় জীবনের এতগুলো বছর কাটিয়ে দেওয়া এবং একের পর এক হিন্দি সিরিজ়ে সাফল্যের সঙ্গে অভিনয় করার পরেও অমিতাভের সামনে সংলাপ বলতে ভুলে গেছিলেন তিনি।
“আমি তার আগে দু’দিন ধরে ডায়লগ মুখস্থ করেছি”, রেডিওবাংলানেট-কে বললেন স্বস্তিকা, “যেন কোনওভাবেই ওঁর সামনে ভুলে না যাই। তার আগে হালকা গলায় কথা বলেছেন। দৃশ্যটা নিয়েও আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু যেই প্রথমবার নিজের স্বভাবসিদ্ধ স্বরে উনি নিজের লাইনটা বললেন আমি হাঁ করে তাকিয়ে রইলাম। কী বলতে হবে কিছুই মনে নেই তখন আমার!”
আরও পড়ন: রণবীরকেই চান যুবরাজ
সেই সময় পরীক্ষায় ফেল করার মতো অনুভূতি হয়েছিল বলে জানালেন স্বস্তিকা। “রিভুকে আমি ছোটবেলা থেকে চিনি। ভয়ে-ভয়ে ওর দিকে তাকাচ্ছি। ও দূর থেকে আমাকে আশ্বাস দিচ্ছে যে সব ঠিক আছে। আমার মনে হচ্ছিল হাঁটু কেঁপে আমি মরে যাব। হাত-পা বরফের মতো ঠান্ডা,” বলতে গিয়ে হেসে ফেললেন স্বস্তিকা।
‘সেকশন ৮৪’-তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অভিনয় করেছেন স্বস্তিকা যদিও তা মূল চরিত্র নয়। তবে তাই নিয়ে তাঁর কোনও আক্ষেপ নেই। “মূল চরিত্র না হলেও এই কাজটা করতে চেয়েছিলাম শুধু অমিতজির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে অভিনয় করতে পারব বলে। এই সুযোগটা হারালে আর হয়তো কোনওদিন পেতাম না,” বললেন তিনি।
আরও পড়ন: বাড়ি ফিরলেন কবীর সুমন
তবে শুধু অভিনয় করা নয়, কিংবদন্তি অভিনেতার থেকে অনেককিছুই শিখেছেন বলে জানালেন স্বস্তিকা। “অতবড় একজন অভিনেতা তাঁর কোনও তাড়া নেই। অন্যের শট চললেও তিনি ধৈর্য ধরে বসে আছেন। কোথাও কোনও বিশেষ সুবিধার দাবি নেই। এমনকী যখন ওঁর টেক হয়ে গিয়ে আমার টেক চলছে তখন তো উনি শুধু কিউ দেবেন আমাকে, ওই সময় ক্যামেরা আমার দিকে। ওঁর অভিনয় করার দরকার নেই, শুধু সংলাপ বললেই চলবে। অথচ উনি সেই সময়েও নিজের পুরোটা দিয়ে অভিনয় করছেন যাতে আমার শটটা ভালোভাবে হয়। এই জিনিস আমি আজ পর্যন্ত কারও মধ্যে দেখিনি,” বললেন তিনি।
এতবছর ধরে অভিনয় করার পরেও সহশিল্পীকে এতটা সম্মান আর কাউকে দিতে দেখেননি স্বস্তিকা। “আজকাল তো একটা দুটো ছবিতে কিংবা সিরিয়ালে অভিনয় করেই অনেকের মাটিতে পা পড়ে না। কেউ-কেউ আবার বাউন্সার নিয়েও ঘোরে। আমার বাবা (সন্তু মুখোপাধ্যায়) একটা কথা বলতেন এরকম অহংকারী অভিনেতাদের নিয়ে। হাওড়া পার করে রাস্তায় দাঁড়িয়ে দেখা দরকার কতজন চিনতে পারে, তবে সে জনপ্রিয় অভিনেতা। আমার সেই কথাটা বারবার মনে পড়ে যায়,” হাসতে-হাসতে বললেন স্বস্তিকা।