ফেলুদা করার সময় কোনও সমালোচনাই আমাকে ছুঁতে পারে না: সৃজিত
RBN Web Desk: সত্যজিৎ রায় সৃষ্ট গোয়েন্দা চরিত্র নিয়ে কাজ করার সময়ই তিনি সবথেকে আনন্দে থাকেন, বললেন সৃজিত মুখোপাধ্যায়। তাঁর আগামী সিরিজ় ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’র প্রথম সিজ়ন ‘দার্জিলিং জমজমাট’ মুক্তি পেতে চলেছে শীঘ্রই। ফেলু, তোপসে ও জটায়ুর চরিত্রে থাকবেন টোটা রায়চৌধুরী, কল্পন মিত্র ও অনির্বাণ চক্রবর্তী। এই তিন অভিনেতাকে নিয়েই এর আগে ‘ছিন্নমস্তার অভিশাপ’ সিরিজ়টি করেছিলেন তিনি।
একাধিক ছবির কাজে ব্যস্ত সৃজিত। মুক্তির দোরগোড়ায় ‘X=প্রেম’ ও ‘সাবাশ মিঠু’। তবু ফেলুদা নিয়ে কাজ করা তাঁর ব্যাক্তিগতভাবে সবচেয়ে পছন্দের বলে জানালেন সৃজিত। সম্প্রতি কলকাতায় ‘দার্জিলিং জমজমাট’ নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন সৃজিত। “ফেলুদা নিয়ে যখন কাজ করি তখন কোনও নেগেটিভিটি, কোনও সমালোচনাই আমাকে ছুঁতে পারে না। এই কাজটা শুধুই আনন্দের জন্য করা, কারও সঙ্গে প্রতিযোগিতায় যাওয়ার কোনওরকম উদ্দেশ্য আমাদের কারও মধ্যে থাকে না,” রেডিওবাংলানেট-কে বললেন সৃজিত।
আরও পড়ুন: শেষের সেদিন, উপস্থিত ছিলেন শুধু মহেশ ও ড্যানি
তাঁর অন্যান্য ছবিতে সংলাপের নাটকীয়তা অন্যমাত্রায় থাকলেও, ফেলুকাহিনীর ক্ষেত্রে সেটা রাখার বিশেষ সুযোগ থাকে না বলে জানালেন সৃজিত। “বাইরে থেকে সংলাপ যোগ করার জায়গা এখানে তেমন নেই। সত্যজিতীয় স্টাইলেই বেশিরভাগ কাজ হয়েছে। ছোট থেকে যে গল্পগুলো এতবার পড়েছি সেগুলোর শব্দ প্রয়োগ বা এক একটা কথার অভিঘাত এত স্পষ্টভাবে মনে গেঁথে গেছে যে ওই শব্দগুলোর প্রতি আত্মীয়তাটা আমি রাখতে চেয়েছিলাম,” বললেন তিনি।
‘ছিন্নমস্তার অভিশাপ’-এ মৃতদেহ ও কালিকে নিয়ে তোপসের স্বপ্নদৃশ্যটি বাদ দিয়েছিলেন তিনি। এবারেও কি তেমন কোনও দৃশ্য বাদ পড়ছে? “ওটাকে আমি নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করেছিলাম বলা যায়,” বললেন সৃজিত। “এবারে সেরকমভাবে কিছুই বাদ নেই। তবে নিজের মতো করে কিছু জিনিস দেখিয়েছি। হয়তো তাতে সামান্য কিছু যোগ হয়েছে। সেটা সিরিজ়টা দেখলে সকলে বুঝতে পারবে।”
আরও পড়ুন: নব্বইয়ের ‘সত্যান্বেষী’, বাদ পড়লেন ব্যোমকেশ
২০০৮ সালে সন্দীপ রায় পরিচালিত ‘টিনটোরেটোর যীশু’ দেখে টোটাকে ফেলুদারূপে কল্পনা করেন তৎকালীন বাংলা ছবির গীতিকার সৃজিত। মাঝে ১২ বছর কেটে গিয়েছে। বর্তমানে টোটাকে তাঁর সিরিজে ফেলুদার ভূমিকায় পেয়ে তৃপ্ত সৃজিত জানালেন, “ওর মনে হয় ফেলুলগ্নে জন্ম। যত দিন যাচ্ছে ও নিজেকে ফেলুর মতোই তৈরি করে ফেলেছে। ওইভাবে হাঁটাচলা, কথা বলা, এমনকি যখন নিজেরা বসে আড্ডা দেয়, ফেলুদা যেভাবে জটায়ুর নানা ব্যাপার নিয়ে মজা করতো, ও ঠিক সেভাবেই অনির্বাণের সঙ্গে মজা করে। কোনও শটের আগেই আমাকে আর আলাদা করে কিছু বলতে হয় না। আমি যেটা চাই সেটা ও প্রথম টেকেই দিয়ে দেয়।
সম্পূর্ণ সিরিজ়ে শ্যুটিং হয়েছে দার্জিলিং ও চালসায়। তবে আশির দশকের প্রেক্ষাপটে গল্পকে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্বাভাবিক কারণেই বাজেট অনেকটা বেড়ে গিয়েছে বলে জানালেন সৃজিত।
জুন মাসে হইচইতে মুক্তি পাবে ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’র প্রথম সিজ়ন।
ছবি: গার্গী মজুমদার