ভূত, গুপ্তধন, পরজন্ম ও জাতিস্মরের গল্প
RBN Web Desk: ‘সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে’ প্রবাদবাক্যটি আপামর বাঙালির কাছে প্রচলিত। সেই রকম এক রমণী ও তার সুখের সংসারের সঙ্গে বাংলা টেলিভিশন ধারাবাহিকের দর্শকদের পরিচয় ঘটতে চলেছে আজ সন্ধ্যা থেকে।
বেড়াচাঁপা গ্রামের মুখুজ্জে পরিবার। বাড়ির বাইরে নামের ফলক ‘শান্তি নিবাস’। শান্তি তো দূর, উল্টে কোন্দলবাড়ি নামেই বেশি পরিচিত মুখুজ্জেরা। বাড়ির মানুষগুলোর গল্প শুনলেই বোঝা যায় এইরূপ নামকরণের স্বার্থকতা। বাড়ির কর্তা ছিলেন জনৈক জমিদারের নায়েব করালী মুখুজ্জে। শোনা যায়, করালীবাবু নাকি নায়েব হওয়ার সুবাদে বেশ কয়েক ঘড়া মোহর পেয়েছিলেন যা বর্তমামে এই বাড়ির কোন্দলের প্রধান কারণ। করালী গত হয়েছেন বহুকাল। নাতি হরিসাধন এখন সংসারের হাল ধরেছেন। হরিসাধনের তিন ছেলে, বৌমা, নাতি-নাতনি নিয়ে ভরভরন্ত সংসার।
‘ব্রহ্মদৈত্য’ কিনে বিপাকে সায়নী
কিন্তু হরিসাধনের সবকটি ছেলেই মূর্তিমান অবতার। বড় ছেলে উমানাথ ব্যবসা করতে গিয়ে ইতিমধ্যেই গণেশ উল্টেছে। খালি ‘সিদ্ধিদাতায় নমঃ’ বলেই দিন কেটে যায় তার এবং সে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করে একদিন তার অন্তত একটি ব্যবসা দাঁড়াবেই। ছোটছেলে গৌরীসাধন এককালে স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন, এখন তার মাথার ব্যামো। সে আজও ভাবে দেশ পরাধীন এবং তিল থেকে তাল খসলেই সেখানে ইংরেজদের ষড়যন্ত্রের গন্ধ পান। বাড়ির একমাত্র রোজগেরে মেজোছেলে কালীসাধন। দজ্জাল বউয়ের সঙ্গে দিনরাত অশান্তিতে তারও প্রাণ ওষ্ঠাগত। এই বাড়িতে অশান্তির কারণে কাক চিল বসে না। বাড়িতে শান্তি ফেরানোর সবরকম চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন হরিসাধন।
কোন্দলবাড়ির গল্প এখানেই শেষ নয়। হরিসাধনের ঠাকুরদা করালী মৃত্যুর পরেও ব্রহ্মদৈত্য হয়ে বাড়িতেই ঘুরে বেড়ান ও মাঝেমাঝেই হরিসাধনকে দেখা দেন। বাড়ির এই কোন্দল কিভাবে থামানো যায় সেই নিয়ে দাদু-নাতি পরামর্শ করে একটি ফন্দি আঁটেন। ঠিক হয়, বাড়ির কনিষ্ঠ সদস্য শঙ্করের সঙ্গে বিবাহ হবে সৌদামিনীর। একমাত্র সৌদামিনীই নাকি পারবে এই বাড়িতে শান্তি ফেরাতে আর সেই গুপ্তধন উদ্ধার করতে। গল্পে প্রবেশ ঘটে মুশকিল আসানরুপী এই মেয়েটির। কিন্তু কে এই সৌদামিনী ওরফে মিনি? কি তার পরিচয়?
এই নিয়ে সাতবার বিয়ের পিঁড়িতে বসলাম: শ্রীমা
কোন্দল থেকে ভূত, গুপ্তধন, পরজন্ম, জাতিস্মর এই সবকিছু নিয়েই জমজমাট ‘সৌদামিনীর সংসার’। আজ সন্ধ্যা থেকে ধারাবাহিকটির সম্প্রচার শুরু হবে একটি জনপ্রিয় বেসরকারি বিনোদনমূলক চ্যানেলে।
পাঁচ ও ছ’য়ের দশকের প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছে এই ধারাবাহিক। গল্পে টুইস্ট আসে সৌদামিনীর পুনর্জন্মে। সাধারণত পুনর্জন্মের গল্পে প্রতিশোধের ছায়া থাকলেও এই ধারাবাহিকে সেসব কিছুই থাকছে না। টেলিভিশনের গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে দর্শককে একটু হাসি-মজা-আনন্দে ভরিয়ে রাখার প্রচেষ্টা ‘সৌদামিনীর সংসার’। দর্শককে আনন্দ দেওয়ার পাশাপাশি নস্টালজিকও করে তুলবে, এমনটাই দাবী করলেন সৃজনশীল পরিচালক সৃজিত রায়।
পৌষমেলা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত বিশ্বভারতীর
‘সৌদামিনীর সংসার’ পরিচালনা করছেন রাজেন্দ্রপ্রসাদ দাস। এই ধারাবাহিকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করছেন সমীর বিশ্বাস (করালী), বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী (হরিসাধন), সুমিত সমাদ্দার (উমানাথ), দেবপ্রতীম দাশগুপ্ত (গৌরীসাধন), অরিন্দোল বাগচী (কালীসাধন) ও অধিরাজ গঙ্গোপাধ্যায় (শঙ্কর)। এছাড়াও থাকছেন সমতা দাস, বনি মুখোপাধ্যায়ের মত শিল্পীরা। সৌদামিনীর ভূমিকায় দেখা যাবে সুস্মিলী আচার্যকে। সুস্মিলীকে এর আগে দর্শকরা ‘প্রথম প্রতিশ্রুতি’ ধারাবাহিকে সত্যবতীর চরিত্রে দেখেছেন।
অধিরাজ এর আগে ছোটপর্দায় ‘মহানায়ক’ ধারাবাহিকে কাজ করেছেন। এ ছাড়াও তাকে দেখা গেছে ‘ছায়াময়’, ‘কাদম্বরী’ ও ‘গোয়েন্দা তাতার’ ছবিতে। কোনও ধারাবাহিকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অধিরাজের এটাই প্রথম কাজ। এছাড়া ‘কেয়াপাতার নৌকো’র পর দীর্ঘদিন বাদে আবার ছোটপর্দায় ফিরছেন অরিন্দোল বাগচী।