নটি বিনোদিনী, আঙুরবালাদের গান মঞ্চে নিয়ে আসছেন দেবজিত্-ঋদ্ধি
কলকাতা: তাঁরা ছিলেন বাংলা সঙ্গীত জগতের এক একজন নক্ষত্র। ডাক পড়ত নানান জমিদারবাড়ির অনুষ্ঠানে। সঙ্গীত প্রতিভা ছাড়াও অভিনেত্রী হিসেবে জনপ্রিয়তার শিখরে অবস্থান করতেন নটি বিনোদিনী, আঙুরবালা দেবী, ইন্দুবালা দেবীর মত শিল্পীরা। তৎকালীন বহু বাংলা ছবিতেও অভিনয় দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছিলেন তাঁরা।
কিন্তু বর্তমান প্রজন্ম কতটা মনে রেখেছে সেই সব নক্ষত্রদের? কজন শোনে সেই বিখ্যাত গান ‘আমি বনফুল গো’? হারিয়ে যাওয়া সেই সব গানই এবার শোনা যাবে দেবজিত্ ও ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়ের আয়োজনে ‘সংস্ট্রেস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে। ২০১৯-এ পঞ্চম বর্ষে পা রাখতে চলেছে এই অনুষ্ঠান।
“বাংলা চলচ্চিত্র জগতের বহু বিখ্যাত নায়িকার পদার্পণ ঘটে যৌনপল্লীর স্যাঁতস্যাঁতে ঘরের দমবন্ধ জীবনকে পিছনে ফেলে রেখে। বিনোদিনী থেকে শুরু করে কাননবালা, আঙুরবালা, ইন্দুবালা, এঁরা প্রায় প্রত্যেকেই উঠে এসেছেন কোনও না কোনও যৌনপল্লী থেকে। তাঁদের সঙ্গীত এবং অভিনয় প্রতিভার কথা আজ আর কেউ মনে রাখেনি। সেই সব শিল্পীদের জীবনাধারেই তৈরি হয়েছে ‘সংস্ট্রেস’,” জানালেন ঋদ্ধি।
আরও পড়ুন: ওঠেনি নিষেধাজ্ঞা, আটকে ফিরদৌস অভিনীত ছবির কাজ
এবারের অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশন করবেন সৌমিলী বিশ্বাস, দেবলীনা কুমারের মত শিল্পীরা, ভাষ্যপাঠে রয়েছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং চৈতালি দাশগুপ্ত। গানে থাকছেন দেবজিত্ ও ঋদ্ধি।
যৌনকর্মীদের সংগঠন ‘কোমল গান্ধার’-এর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত ঋদ্ধি। এর আগে ‘সংস্ট্রেস’-এ তিনি এই সংগঠনের সদস্যদের মঞ্চে উপস্থিত করেছিলেন নাচ ও গানের প্রশিক্ষণ দিয়ে।
আরও পড়ুন: সংক্রামক নয় ভিটিলিগো, বোঝাবে সমুদ্র দাশগুপ্তর ছবি
“সমাজের জন্য আমি বরাবরই কাজ করতে ভালোবাসি। তবে এবারের অনুষ্ঠানটির পিছনে অন্য একটি কারণও আছে। বিশিষ্ট চিকিৎসক চঞ্চল গোস্বামী স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের জন্য একটি অনুষ্ঠান আয়োজন করতে বলেন। তখন থেকেই ভাবনা শুরু হয় নতুন করে ‘সংস্ট্রেস’কে মঞ্চস্থ করার,” জানালেন ঋদ্ধি।
‘ওগো! আমার আর শেষও নাই, আরম্ভ নাই গো!’ বিনোদিনী দাসীর এই কথাই বোধহয় এবার সত্য হওয়ার পালা। আগামীকাল শহরের আইসিসিআর প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ‘সংস্ট্রেস’।