সংক্রামক নয় ভিটিলিগো, বোঝাবে সমুদ্র দাশগুপ্তর ছবি
কলকাতা: সমাজে এখনও পর্যন্ত সর্বাগ্রে স্থান তাদেরই যারা সুন্দর। ত্বকের রং বা শারীরিক গঠন নিয়ে উপহাসের কারণ হয়েছেন অনেকেই। শারীরিক সৌন্দর্য যে কোনও মানুষের একমাত্র পরিচয় হতে পারে না, সেই বিষয় নিয়েই পরিচালক সমুদ্র দাশগুপ্ত তৈরি করেছেন তথ্যভিত্তিক স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি ‘সাপোর্ট ভিটিলিগো’। বিপণন জগতের কর্মী মধুরিমা গঙ্গোপাধ্যায়ের জীবনের আধারে তৈরী হয়েছে এই ছবি। অভিনয় করেছেন মধুরিমা নিজেই।
প্রতিটি মানুষ অনন্য এবং প্রত্যেকের নিজস্ব স্বত্তাই সেই মানুষটিকে সবার থেকে আলাদা করে, এমনটাই মনে করেন সমুদ্র। কোনও চর্মরোগ যে কারোর জীবনে কোনও বাধা হতে পারে না তার প্রধান উদাহরণ মধুরিমা।
ভিটিলিগো আসলে একটি অটোইমিউন রোগ। শরীরের ত্বকের রং নির্ধারিত হয় মেলানিন দ্বারা। কোনও কারণে এই মেলানিনের কাজে কোনও ব্যাঘাত ঘটলে, ত্বকে সাদা দাগের সৃষ্টি হয়, বিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হয় ভিটিলিগো। সাধারণত বংশগত কারণে, মানসিক চাপে অথবা ভাইরাসগত আক্রমণ থেকেও হতে পারে এই রোগ।
বিশ্বনাথের বারাণসী, বারাণসীর বিসমিল্লাহ
রেডিওবাংলানেট-কে মধুরিমা জানালেন, “২০০২ সালে আমি যখন ক্লাস ফোরে পড়ি, তখনই প্রথম আমার পায়ে একটি সাদা দাগের সৃষ্টি হয়। ক্রমশ তা বাড়তে থাকে। একাধিক চিকিৎসা করেও কোনও ফল হয়নি। এমন কি আল্ট্রাভায়োলেট রেডিয়েশনও নিতে হয়েছে এক সময়। ২০১০-এর পর একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কথা জানতে পারি। তাঁর চিকিৎসার ফলেই আমার শরীরের দাগগুলি এখন অনেক কমে গেছে।”
শরীরের যত্রতত্র সাদা দাগের মেয়েটিকে দেখে সমাজের কিছু লোক বাঁকা চোখে তাকালেও, পরিবার ও বন্ধুমহলে কোনওদিনই অপমানের শিকার হতে হয়নি তাঁকে। “ছোটবেলা থেকেই বাড়িতে বা স্কুলে আমাকে কেউ আলাদা মনে করেননি। তবে ভিটিলিগো যে কোনওভাবেই সংক্রামক নয় এটা অনেকেই জানেন না,” বললেন মধুরিমা।
২০১২ সালে বন্ধুমহলে পরিচয় সমুদ্র-মধুরিমার। তখনও কেউই জানতেন না যে পরবর্তীকালে এধরনের একটি কাজ করবেন একসঙ্গে।
যে জন থাকে মাঝখানে
ঋতুপর্ণ ঘোষের জীবনের ওপর নির্মিত, পরিচালক সঙ্গীতা দত্তর তথ্যচিত্র ‘বার্ড অফ ডাস্ক’-এ কাজ করেছেন মধুরিমা। এছাড়াও সম্প্রতি ফ্যাশন ডিজ়াইনার আয়ুশ কেজরিওয়ালের ভিটিলিগো সংক্রান্ত একটি বিশ্ব সচেতনতা মূলক কাজে মডেলিং করেন তিনি। ভবিষ্যতে সমুদ্রর অন্যান্য কিছু কাজেও দেখা যাবে তাঁকে।
‘সাপোর্ট ভিটিলিগো’র মূল ভাবনা, সম্পাদনা, সবটাই একাধারে সামলেছেন সমুদ্র। ভিটিলিগো যে সংক্রামক নয়, সেটাই বোঝাবে ৫.০৭ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই ছবি।