বিষয় যখন সিঙ্গল পেরেন্টিং, আসছে ‘হার মানা হার’

কলকাতা: বর্তমান সময়ে সিঙ্গল পেরেন্টিং ভীষণভাবে বাস্তব। সেই বিষয়ই উঠে আসবে রাজা চন্দ পরিচালিত ‘হার মানা হার’ ছবিতে। গতকাল ছবির ট্রেলার মুক্তির অনুষ্ঠানে রাজা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সোহম চক্রবর্তী, পায়েল সরকার, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, আয়ুষী তালুকদার, প্রান্তিক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অন্যান্য কলাকুশলীরা।

দুজন মানুষ একে অপরকে ভালোবেসে শুরু করে নতুনভাবে পথচলা। তাদেরই ইচ্ছায় জন্ম নেয় সন্তান। অনেক ক্ষেত্রেই সন্তান জন্মের বেশ কিছু পর থেকেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সমস্যার সৃষ্টি হয়। তবে ছবিতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে টক্সিক সম্পর্কের কথা বলবেন না রাজা। ছবিতে ছোট্ট মিষ্টি (সিলভিয়া) ছোটবেলাতেই তার মাকে হারায়। স্ত্রীর মৃত্যুর পর পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী বিক্রম (সোহম) একা হাতে মেয়েকে মানুষ করতে থাকে। একাধারে বাবা ও মা, দুজনের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিক্রম বুঝতে পারে মিষ্টির মনে মায়ের শূন্যস্থান সে কোনওদিনই পূরণ করতে পারেনি। মিষ্টির মনে যে ক্ষত তৈরি হয়েছে, বিক্রমের স্নেহ-ভালোবাসা তা ভরাট করতে পারেনি। দিনদিন ভীষণ একরোখা, জেদি মেয়েতে পরিণত হয় মিষ্টি। মেয়েকে সুস্থ, স্বাভাবিক জীবন ফিরিয়ে দিতে পরিবারের পরামর্শে দ্বিতীয়বার বিয়েতে মত দেয় বিক্রম। সে এমন একজন মানুষের সঙ্গ চায় যে তার মেয়ের মা হয়ে উঠতে পারবে। এরই মধ্যে মিষ্টির জীবনে আসে এমন একজন মানুষ যে তাকে মায়ের মতোই ভালোবেসে ফেলে।

আরও পড়ুন: নব্বইয়ের ‘সত্যান্বেষী’, বাদ পড়লেন ব্যোমকেশ

‘হার মানা হার’ এমন এক সন্তানের গল্প যে পরিবার সম্পর্কে কিছুই জানে না। মিষ্টির মতোই বহু শিশু আছে যারা এই ধরণের সমস্যার শিকার। সেক্ষত্রে এই ছবি কি তাদের কোনও বার্তা পৌঁছে দেবে?

“অবশ্যই,” রেডিওবাংলানেট-কে বললেন রাজা। “আমি নিজে সিঙ্গল পেরেন্ট ছিলাম। তাই মায়ের অনুপস্থিতিতে সন্তান মানুষ করার জন্য কী-কী সমস্যার সৃষ্টি হয় তা আমি জানি। আর এই বিষয়টি বর্তমানে ভীষণভাবে প্রাসঙ্গিক। সেই থেকে এই ছবিটি তৈরি করার কথা আমার মাথায় আসে।”

অনেক সময় বাবা-মা নিজেদের স্বার্থে আলাদা হয়ে যাওয়ার কারণে সন্তানের ছোটবেলা হারিয়ে যায়। সিঙ্গল পেরেন্টিং কি তবে জেন-ওয়াইয়ের নতুন ট্রেন্ড?

আরও পড়ুন: সব কান্নার শব্দ হয় না, বেজে উঠল পটদীপ

“আমরা সবসময়ই বিদেশী সংস্কৃতিকে অনুকরণ করতে গিয়ে নিজেদের সংস্কৃতি ভুলে যাই। আমরা ভারতীয়রা পরিবারতন্ত্রে বিশ্বাসী। এই কারণেই একান্নবর্তী পরিবারের রীতি আছে এখানে। একটি সম্পর্কে ভুল বোঝাবুঝি আসতেই পারে। তবে সন্তানের জন্য ইগো ঝেড়ে ফেলে নিজেদের মধ্যে সব সমস্যা মিটিয়ে নেওয়া উচিৎ,” বললেন সোহম।  

তবে কে কখন কার সঙ্গে থাকবে বা থাকবে না, সেটা একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার বলে মনে করেন পায়েল। “দুজনের বদলে একজন অভিভাবক পেলে সন্তান ভালোভাবে মানুষ হয় না এমনটা নয়। বরং মা-বাবার মধ্যেকার টক্সিক সম্পর্ক দেখে বড় হওয়ার চেয়ে সুস্থ পরিবেশে বেড়ে ওঠা ভালো। আসলে পুরোটাই নির্ভর করে সন্তান কোন পরিবেশে কেমনভাবে বড় হচ্ছে তার ওপর। সেক্ষত্রে অভিভাবকের সংখ্যাটা গুরুত্বপূর্ণ নয়,” বললেন তিনি।

আরও পড়ুন: ফাগুন লেগেছে বনে বনে

সম্পর্কের টানাপোড়েন, ত্রিকোণ প্রেমের গল্প ‘হার মানা হার’। রাজার পরিচালনায় ‘হার মানা হার’ ছবি দিয়েই বড়পর্দায় অভিনয়ে হাতেখড়ি হচ্ছে শিশুশিল্পী সিলভিয়া দে’র। ছোট্ট সিলভিয়া অভিনয়ের পাশাপাশি ভালোবাসে নাচতে ও ছবি আঁকতে। বড় হয়ে অভিনয় করার ইচ্ছা নেই সিলভিয়ার। সিলভিয়ার স্বপ্ন আইএএস হওয়ার।

ছবির কাহিনীকার মৌমিতা চট্টোপাধ্যায়। চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন সৌগত বসু। সম্পাদনার দায়িত্বে শুভজিৎ সিংহ, চিত্রগ্রহণে সৌম্যদীপ্ত গুণ। ছবির সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন বাবুল সুপ্রিয়।

১৬ সেপ্টেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে ‘হার মানা হার’। 




Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *