অতনুর ছবিতে খিটখিটে, হতাশাগ্রস্ত ‘বাল্মীকি’ প্রসেনজিৎ

RBN Web Desk: অভিনয়জীবনের চার দশক কাটিয়ে ফেললেন অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। অতনু ঘোষের ছবি ‘শেষ পাতা’ তাঁর ৩৪৯তম ছবি। এই ছবিতে খিটখিটে, হতাশাগ্রস্ত এক প্রৌঢ়ের চরিত্রে দেখা যাবে তাঁকে। প্রসেনজিৎ ছাড়াও ছবিতে অভিনয় করেছেন গার্গী রায়চৌধুরী, বিক্রম চট্টোপাধ্যায় ও রায়তি ভট্টাচার্য। সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতার এক প্রেক্ষাগৃহে  ছবির ট্রেলার মুক্তির সময় উপস্থিত ছিলেন তাঁরা।

ছবির গল্প কী নিয়ে?

বাল্মীকি সেনগুপ্ত একসময়ের জনপ্রিয় লেখক। তার লেখা পাঠকসমাজে সমাদৃত হতো। তবে সেসব অনেক বছর আগের কথা। বাল্মীকি যখন জনপ্রিয়তার মধ্যগগনে, তখন একদিন তার অভিনেত্রী স্ত্রী রোশনির নগ্ন দেহ পাওয়া যায় ময়দানে। স্ত্রীর মৃত্যু নিয়ে কোনওদিন মুখ খোলেনি বাল্মীকি। এদিকে স্ত্রীর জীবনী লিখবে বলে প্রকাশকের কাছে টাকা নেয় সে। লেখা আর হয়ে ওঠে না। প্রকাশকের লোক এসে তাড়া দিয়ে যায় প্রতিদিন, বাল্মীকি নিরুপায়।

আরও পড়ুন: ৩৪ বছর পর একসঙ্গে ‘রামায়ণ’ জুটি

 “এই চরিত্রটা—বাল্মীকি—এমন এক মানুষ যার লেখার জন্য একসময় মানুষ অপেক্ষা করতো” বললেন প্রসেনজিৎ। “একটা ঘটনার মাধ্যমে সেই মানুষটার জীবনে বড় পরিবর্তন আসে। চরিত্রটা খুব কঠিন ছিল। বাল্মীকি হয়ে উঠতে অনেকটা পরিশ্রম করতে হয়েছে। ৫৮ বছরের একটা নোংরা, অসভ্য লোক, চূড়ান্ত ফ্রাস্ট্রেটেড, যে কখনও ভালো করে কারও সঙ্গে কথা বলে না। অভিনয় করার সময় নিজেকে প্রচুর ভাঙতে হয়েছে। এই ধরণের কোনও চরিত্র যেহেতু আগে করিনি তাই ছবিটা নিয়ে খুব টেনশনে আছি।”

ছবির জন্য তাঁকে কঠিন ডায়েটের মধ্যেও থাকতে হয়েছে বলে জানালেন অভিনেতা। ‘ময়ূরাক্ষী’ ও ‘রবিবার’-এর পর অতনুর সঙ্গে এটি তাঁর তৃতীয় ছবি। 

আরও পড়ুন: সম্পর্ক অস্বীকার জ়িনতের

ছবিতে বিক্রম রয়েছেন এক বকেয়া ঋণ আদায়কারী সংস্থার কর্মচারীর ভূমিকায়। “এই ছবিতে আমার লুকটা একদম অন্যরকম। এর আগে এরকম লুকে আমি নিজেও নিজেকে দেখিনি। আমার চরিত্রটা একেবারে পাশের বাড়ির ছেলের মতো। প্রথমবার বুম্বাদার সঙ্গে স্ক্রিন শেয়ার করা আমার কাছে বিরাট সৌভাগ্যের ব্যাপার। উনি কোথাও একবারও বুঝতে দেননি যে ৪০ বছর ধরে অভিনয় করছেন আর আমি মাত্র ১৩। অতনুদা এই ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম সংবেদনশীল পরিচালক। গল্পটাও একেবারে অন্যরকম। আমার কাছে এটা মনে রাখার মতো একটা ছবি।” 

ছবিতে প্রসেনজিতের কন্ঠে একটি গানও থাকছে। অন্যদিকে নাটকের মঞ্চে গান গেয়ে থাকলেও প্রথমবার কোনও ছবিতে গায়িকা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চলেছেন গার্গী। তাঁর দুটি প্লেব্যাক রয়েছে এই ছবিতে। গার্গী জানালেন, “অতনুর সঙ্গে আগেও অনেকবার কাজ করেছি। তবে এই ছবিটা আমার কাছে খুব প্রিয় হয়ে থাকবে। বুম্বাদার সঙ্গে কাজ করতে গেলে দেখেছি খুব সুন্দর একটা কমফর্ট জ়োন তৈরি হয়। কিছু দৃশ্যে কাজ করতে সত্যি ভালো লেগেছে। অনেককিছু শিখেছি ওঁর কাছে।”

আরও পড়ুন: বাণিজ্যিক ছবিতেই ভরসা রাখতে চান নুসরত, যশ, ঋতুপর্ণা

অতনু জানালেন, “পরিচালক হিসেবে আমি এমন চরিত্র তৈরি করার চেষ্টা করি যা অভিনেতাদের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেবে। এই ছবিতে বুম্বাদা (প্রসেনজিৎ) এবং বিক্রমের ক্ষেত্রে সেটাই করেছি। গার্গী ও রায়তিও এখানে যে চরিত্রে কাজ করেছে তা ওরা আগে কখনও করেনি।” 

ছবির কাহিনী লিখেছেন অতনু নিজেই। চিত্রগ্রহণে রয়েছেন সৌমিক হালদার। সম্পাদনায় আছেন সুজয় দত্ত রায়। সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন দেবজ্যোতি মিশ্র।

নববর্ষে মুক্তি পেতে চলেছে ‘শেষ পাতা’। 

ছবি: প্রবুদ্ধ নিয়োগী




Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *