ফলোয়ার বাড়ানোর আসক্তি নিয়ে সিরিজ়
RBN Web Desk: ডিজিটাল যুগে কেউ সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে, এমনটা যেন অলীক স্বপ্ন। কোভিডের পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়া যেন আরও বেশি করে জেঁকে বসেছে জীবনে। আট থেকে আশি সকলেই ব্যস্ত রিলস বানাতে। বাকিরা ব্যস্ত রিলস দেখতে। কারণ সবই বিকোচ্ছে মুড়ি-মুড়কির দরে। অনেকের ক্ষেত্রে এই সোশ্যাল মিডিয়া আবার রোজগারের পথও। সকলেই আজকাল ডিজিটাল কন্টেন্ট ক্রিয়েটর। অথচ সেই ক্রিয়েটিভিটি মূল্যায়ন করার কেউ নেই। শুধু তাই নয়, আজকের যুগে শিল্পীর জনপ্রিয়তা নির্ভর করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফলোয়ার্সের ওপরেই। এমনকী অনেক ছবির কাস্টিংও হয় ফলোয়ার্সের নিরিখে। এই কঠিন সত্যের মুখে দাঁড়িয়ে কী করবে জনপ্রিয় ধারাবাহিকের সুপারহিট নায়িকা লক্ষ্মী ওরফে হিয়া ? তাই নিয়েই আসছে নতুন ওয়েব সিরিজ়।
হিয়ার ফলোয়ার্স কম, তাই যোগ্যতা থাকলেও সে ইন্ডাস্ট্রিতে ব্রাত্য। এমনটাই তার ধারণা। তাই শর্টকাটে লক্ষ্যপূরণে মরিয়া হয়ে ওঠে সে। তার সোশ্যাল মিডিয়ার যাবতীয় দায়িত্ব সামলায় সৌম্য। তারই বুদ্ধিতে একদিন অদ্ভুত এক গেমপ্ল্যানে সামিল হয় হিয়া। প্ল্যান অনুযায়ী তিনদিনের জন্য এক নির্জন দ্বীপে সৌম্যর হোটেলে গা ঢাকা দেয় হিয়া।
আরও পড়ুন: রক্তস্রোতের সঙ্গে মিশল স্যাটায়ার
এদিকে মানুষের ইমোশন নিয়ে এই খেলা কিছুতেই মেনে নিতে পারে না হিয়ার একনিষ্ঠ ফ্যান অনিন্দ্য। সে হিয়াকে ভালোবাসে। সৌম্যর মতো মানুষদের পছন্দ করে না অনিন্দ্য। অন্যদিকে হিয়ার এই বদলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারে না তার দাদা পল্লবও। বোনের এইসব নোংরামোর জন্য সেও তার সঙ্গে সব সম্পর্ক চুকিয়ে দিতে চায়।
এতকিছুর পরেও লক্ষ্যে অবিচল থাকতে গিয়েই খুন হয় হিয়া। মাঠে নামে লোকাল থানার ওসি অনুকুল বর্মণ। সে কি পারবেন এই খুনের কিনারা করতে? সেই কাহিনি নিয়েই আসছে রাজদীপ ঘোষ পরিচালিত ওয়েব সিরিজ় ‘@ফলোয়ার্স’। কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন অম্লান মজুমদার। হিয়ার ভূমিকায় থাকছেন সোহিনী গুহ রায় (Sohini Guha Roy)। অন্যান্য চরিত্রে রয়েছেন শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, ইন্দ্রাশিস রায়, সামিউল আলম, অম্লান ও স্যান্ডি।
আরও পড়ুন: ‘আশিকি ৩’ ছাড়লেন তৃপ্তি দিমরি
অম্লান বললেন, ”যখনই কিছু লিখেছি, একটা সামাজিক বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। যেমন ‘ভাগাড়’ বা ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের গল্প ‘শক্তিরূপেণ’। ঠিক তেমনিই ‘@ফলোয়ার্স’।”
ইন্দ্রাশিস বললেন, “আজকের যুগে দুটো বিষয় খুব প্রাসঙ্গিক। একদিকে নিজের জীবন, অন্যদিকে সোশ্যাল মিডিয়ার হাতছানি। দুটোই আজ মিলেমিশে একাকার। আজ যেমন সোশ্যাল মিডিয়া বদলে দিতে পারে মানুষের জীবন, তেমনই আবার ধ্বংসও করে দিতে পারে সবকিছু। সোশ্যাল মিডিয়ার সেই সৃষ্টি আর ধ্বংস আমাদের এই সিরিজ়ের বিষয়।”
পরিচালনায় রাজদীপ (বাঁদিক থেকে দ্বিতীয় )
এই প্রথম কোনও ওয়েব সিরিজ়ে দেখা যাবে সোহিনীকে। ”এই সিরিজ়ের অংশ হতে পেরে আমি আপ্লুত। গোটা টিমের সঙ্গে এই শুটিং করার অভিজ্ঞতা অসাধারণ ছিল,” বললেন তিনি।
“আমাদের সময়ে মূল্যায়ন হতো চরিত্র দিয়ে, অনলাইন ক্লিক দিয়ে নয়। এখন সবাই লাইক আর ফলোয়ারের পেছনে ছুটছে, যেন সেগুলো সোনার মতো মহা মূল্যবান। এই সোশ্যাল মিডিয়ার উন্মাদনা মানুষকে আসক্ত করে ফেলেছে। শুধু সাময়িক অনলাইন স্বীকৃতির পাওয়ার জন্য আজকাল সকলে রিলস আর নিখুঁত ছবির পেছনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ব্যয় করে। এ এক অদ্ভুত পৃথিবী, যেখানে পর্দায় দেখানো একটা সংখ্যা মানুষের মূল্য নির্ধারণ করে,” বর্ষীয়ান অভিনেতা শান্তিলালের গলায় বিষাদের সুর।
আরও পড়ুন: মশলা ছবি নিজ গৌরবে হাজির
পরিচালক রাজদীপের মতে, “এই সিরিজ়ের বিষয়বস্তু অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। সোশ্যাল মিডিয়া এখন সবার জীবনের একটা বড় অংশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু এটি আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ, তা কি ব্যবহারকারীর উপর নির্ভর করে? প্রশ্ন তুলবে এই সিরিজ়। তবে এই মুহূর্তে সোশ্যাল মিডিয়া যথেষ্ট উদ্বেগের বিষয়।”
সিরিজ়ের বিষয়বস্তু দর্শকের ভালো লাগবে বলেই বিশ্বাস রাজদীপের।
শীঘ্রই ক্লিক প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাবে ‘@ফলোয়ার্স’।