তিনটে ক্যামেরা সর্বক্ষণ ঘুরছিল, কার ছবি উঠছিল জানতাম না: কৌশিক সেন
RBN Web Desk: সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের (Srijit Mukherji) সঙ্গে যে ক’টা ছবি করেছেন, অভিনেতা কৌশিক সেনের কাছে প্রতিটির অভিজ্ঞতাই দারুণ। সৃজিতের পরিচালনায় ‘সত্যি বলে সত্যিই কিছু নেই’ (Shotyi Bole Shotyi Kichhu Nei) ছবিতে একজন জুরির ভূমিকায় রয়েছেন কৌশিক। সঙ্গে রয়েছেন আরও একঝাঁক তারকা।
“‘এক রুকা হুয়া ফয়সলা’ তো বটেই, ’12 Angry Men’ ছবিটাও অসাধারণ। এই গল্পটারই আলাদা একটা ঐতিহ্য আছে। সারা পৃথিবীতে এই গল্পের ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন ভাষায় নাটক হয়েছে। আমি নিজেই এই নাটকের তিন-চারটে ভার্সন দেখেছি। ন্যায়বিচার বলতে কী বোঝায়, কোনটা সত্যি কোনটা নয়, ন্যায় কাকে বলে, অন্যায়ই বা কী, সেগুলো খুব তর্কসাপেক্ষ একটা ব্যাপার। এককথায় ঠিক এর উত্তর দেওয়া যায় না। পরিবার, জীবনের মান, বেড়ে ওঠা এই সবকিছু ছাড়াও সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে বদলে যাওয়া দৃষ্টিভঙ্গি, পরিস্থিতি অনুযায়ী পাল্টে যাওয়া চিন্তাভাবনা, এই সবকিছু মিলিয়েই ঠিক বা ভুলের বিচার হয়। এই সমস্ত ভাবনা নিয়েই এই ছবিটা তৈরি হয়েছে,” রেডিওবাংলানেট-কে বললেন কৌশিক।
আরও পড়ুন: রক্তস্রোতের সঙ্গে মিশল স্যাটায়ার
সারা বছর থিয়েটার নিয়ে ব্যস্ত থাকা কৌশিক ছবি করেন কম। এই ছবিতে অভিনয় করতে রাজি হলেন কেন?
“কারণ অতীতের ছবিগুলো এবং অবশ্যই থিয়েটার,” বললেন কৌশিক। “তবে এছাড়াও একটা বড় কারণ সৃজিতের ছবি। এর আগে আমি ওর সঙ্গে ‘রাজকাহিনী’ ও ‘জুলফিকার’-এ কাজ করেছি। দুটো ছবিরই অভিজ্ঞতা আমার কাছে দারুণ ভালো। কাজেই ওর সঙ্গে ছবি করার আগ্রহ থাকেই। এছাড়া যেভাবে ও ছবিটা করবে বলেছিল সেটা শোনার পরে আগ্রহ ছিলই। খুব ভালো অ্যাডাপ্ট করেছে গল্পটা। শুরুতে মনে হয়েছিল বটে যে আবার রিহার্সাল কেন, কিন্তু পরে বুঝেছিলাম এটা না করলে ও যেভাবে কাজটা করতে চাইছে সেটা সম্ভব নয়।”
ছবির ট্রেলার থেকে স্পষ্ট নানা জায়গায় ঘুরে ছবির শুটিং করেছেন সৃজিত। যেমন সমুদ্রের জলের ভেতর চেয়ার পেতে শট নেওয়া হয়েছে তেমনই ফ্লাইওভারের ওপর বসেও শুট করেছেন অভিনেতারা। পরিশ্রম ছিলই, যদিও কৌশিকের ব্যাখ্যা একটু আলাদা।
টিম ‘সত্যি বলে সত্যিই কিছু নেই’
“পরিশ্রম এই অর্থে নয় যে আমরা সমুদ্রে বা ফ্লাইওভারের ওপর শুট করেছি,” বললেন কৌশিক। “পরিশ্রম অর্থে টানা শুট চলেছে। অন্যদের সংলাপ যখন চলছে তখনও আমি শটে আছি। হয়তো তখন আমার কানটা দেখা যাচ্ছে, কিন্তু সেটার জন্যেও আমাকে থাকতে হয়েছে।”
অন্য শুটিংয়ের ক্ষেত্রেও সহঅভিনেতাকে কিউ দেওয়া হয়ে থাকে কিন্তু তা ক্যামেরার বাইরে থেকে। এখানে প্রতিটি অভিনেতাকে পুরো সময়টা শটের মধ্যে থাকতে হয়েছে। “তিনটে ক্যামেরা সর্বক্ষণ ঘুরছে, বিভিন্ন দিক থেকে আমাদের ছবি তোলা হচ্ছে। আমরা জানিও না কাকে কখন ক্যামেরায় রাখা হচ্ছে। এক একটা শটে একই অভিনয় আমাদের ছ’বার করে করতে হচ্ছে। আর যেহেতু এতগুলো ক্যামেরা তাই সারাক্ষণ প্রস্তুত থাকা, এটা সত্যি খুব কঠিন কাজ। বয়স তো বেড়েছে, আমি চিন্তায় ছিলাম এতটা ধকল নিতে পারব কিনা। কিন্তু ভালো চিত্রনাট্য, ভালো সহঅভিনেতা হলে যা হয় আর কী, ভেতর থেকে ব্যাপারটা চলে আসে। এখানেও তাই হয়েছে,” তৃপ্তির হাসি হাসলেন কৌশিক।