হাতের শিরা কেটে মায়ের পায়ে আলতা, বিরক্ত দর্শক
RBN Web Desk: ডার্ক থ্রিলার গোত্রের ‘মোহমায়া’ ওয়েব সিরিজ়টি নিয়ে দর্শকদের বিরক্তি তুঙ্গে। মার্চের শেষ সপ্তাহে এই সিরিজের প্রথম সিজ়ন মুক্তি পায়। সাহানা দত্তের কাহিনী ও কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ‘মোহমায়া’ সিরিজ়ে অভিনয় করেছেন অনন্যা চট্টোপাধ্যায়, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, বিপুল, সুজন মুখোপাধ্যায়, সাগ্নিক, শ্বেতা চৌধুরী ও অঙ্কিত মজুমদার। জটিল সম্পর্কের রসায়ন ও বিকৃত মনোবিকার দেখানোর কারণে প্রথম সিজ়নেও সমালোচিত হয় ‘মোহমায়া’। সম্প্রতি এই সিরিজ়ের দ্বিতীয় সিজ়ন মুক্তি পেয়েছে। তারপরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে কাটাছেঁড়া।
মৃতা মায়ের স্মৃতিতে আচ্ছন্ন হয়ে থাকা ঋষি তার বন্ধুর মা অরুণার মধ্যে সেই স্নেহ ভালোবাসা খুঁজে পায় যা সে এতদিন পায়নি। ঋষির নিজের মা মায়ার মৃত্যু অদ্ভুত প্ৰহেলিকায় ভরা। কিন্তু অরুণার প্রতি ঋষি যে টান অনুভব করে, তা কি শুধুই মা-ছেলের সম্পর্কের জন্য? নাকি এমন অনুভূতিও আছে যার কোনও নাম দেওয়া যায় না। ঋষির আগমনে অরুণার বাড়িতে ঘটতে থাকে একটার পর একটা দুর্ঘটনা। অরুণাকে ঘিরে ঋষির আকর্ষণের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানো প্রায় সকলকে সে একে-একে সরিয়ে দিতে থাকে। দ্বিতীয় সিজ়নে ফিরে আসে অরুণার বড় ছেলে।
আরও পড়ুন: ইন্দ্রাণীর সঙ্গে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই, দাবি দেবশ্রীর
কাহিনীর মধ্যে অত্যধিক জটিলতা ও বিকৃত মানসিকতার প্রকাশ দেখানোয় দর্শকদের একাংশ পরিচালক ও কাহিনীকারের প্রতি চটেছেন। এর সঙ্গে রয়েছে বিকৃতকাম কিছু দৃশ্যের অবতারণা। যেমন নিজের হাতের শিরা কেটে তাই দিয়ে মায়ের পায়ে আলতা পরিয়ে দেওয়ার দৃশ্য। অনেকের মতে সিরিজ়ের কাহিনী বিকৃত মনস্কতার পরিচয় দেয়। আবার কারোর অভিযোগ যুক্তিহীনভাবে পরের পর অপরাধ দেখানোর বিরুদ্ধে। একজন লিখেছেন ‘প্রথম কয়েক লাইনেই যে গল্পের প্লট পরিষ্কার হয়ে যায়, তাকে ঘিরে একের পর এক খুন দেখিয়ে এই অতিমারীর আবহে আরও অসুস্থ মানসিকতা ছড়াচ্ছে ‘মোহমায়া’।’
আরও পড়ুন: আর্থিক সঙ্কটে রাজেশ খট্টর ও পরিবার
অন্য এক দর্শকের মতে ‘গল্পের নীতিগত দিকটি অত্যন্ত দুর্বল। সমস্ত হত্যার আগে ঋষিকে তার মা এসে নির্দেশ দিচ্ছে। যদিও এটি ঋষির মনোবিকার, তবুও মা সামনে এসে বলার পরে এই জঘন্য কাজগুলি হওয়ায় চিরন্তন মা-ছেলের সম্পর্কের সুস্থতা বিঘ্নিত হচ্ছে।’ অনেকে আবার অরুণা চরিত্রটির উপর অভিযোগ এনেছেন এই বলে, ‘মায়েরা যেখানে সব বুঝতে পারেন, সেখানে অরুণা এতকিছুর পরেও ঋষির ওপর কোনও সন্দেহ করে না, এটা খুবই অবাস্তব।’
এছাড়াও অরুণা চরিত্রটি নিজের বাড়ির লোকের কথায় বিশ্বাস না করে বাইরে থেকে আসা একজনের ওপর অগাধ বিশ্বাস রাখে, এও দর্শকদের কাছে অবাস্তব লেগেছে। কেউ আবার বিরক্ত হয়েছেন দ্বিতীয় সিজ়নের শেষেও ঋষির শাস্তি না হওয়ায়। এই ধরণের সিরিজ় সমাজে অপরাধপ্রবণতার জন্ম দেবে বলেও মনে করছেন অনেকে।
তবে কিছু দর্শক আবার সিরিজ়টি ভালো লাগার কথাও জানিয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। ডার্ক থ্রিলারের প্রতি আকর্ষণ আছে এমন দর্শকদের অনেকেরই এই সিরিজ় বেশ পছন্দ হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই তাড়াতাড়ি তৃতীয় সিজ়ন আনার দাবি জানিয়েছেন।