উৎসাহে প্রথম ৩০ সেকেন্ড চিৎকার করেছিল কোয়েল: অরিন্দম
কলকাতা: মিতিনমাসির চরিত্রে অভিনয় করার প্রস্তাবটা দেওয়ার পর উৎসাহে প্রথম ৩০ সেকেন্ড চিৎকার করেছিলেন কোয়েল মল্লিক, এমনটাই জানালেন অরিন্দম শীল। অরিন্দমের পরিচালনায়, সুচিত্রা ভট্টাচার্যর কাহিনী ‘হাতে মাত্র তিনটে দিন’ অবলম্বনে মিতিনমাসি সিরিজ়ের প্রথম ছবি আসছে এই পুজোয়।
বাংলা সাহিত্যে বরাবরই পুরুষ গোয়েন্দাদের দাপট। ফেলুদা, ব্যোমকেশ, শবর, কিরীটীর মত গোয়েন্দাদের নিয়ে তৈরি হয়েছে একাধিক সফল ছবিও। তাই বাংলা ছবিতে খুব সম্ভবত মিতিনমাসিই প্রথম কোনও মহিলা গোয়েন্দা চরিত্র।
রেডিওবাংলানেট-কে অরিন্দম জানালেন, “প্রথম মহিলা গোয়েন্দা বললে অবশ্যই ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘শুভ মহরৎ’ ছবির কথা আসবে। তবে ওই ছবিতে রাঙা পিসিমা পেশাদার গোয়েন্দা ছিলেন না। মিতিনমাসির একটা গোয়েন্দা সংস্থা আছে যার নাম থার্ড আই। তাই সেদিক থেকে বলতে গেলে, বাংলা ছবিতে প্রথম মহিলা গোয়েন্দা নিঃসন্দেহে মিতিন।”
বিশ্বনাথের বারাণসী, বারাণসীর বিসমিল্লাহ
অরিন্দমের দাবী, “আমি গত একবছর ধরে এই গল্পের স্বত্ব পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গেছি। অবশেষে সেটা যখন পেলাম, তখন আর দেরি করার প্রশ্নই ওঠে না।”
স্বত্ব পাওয়ার পর স্বভাবতই কোন অভিনেত্রী মিতিনমাসির চরিত্রে অভিনয় করবেন, সেটাই ঘুরছিল পরিচালকের মাথায়।
“শুরু থেকেই কোয়েলকে ভেবে রেখেছিলাম। অনেকদিন ধরেই কোয়েলের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে ছিল কিন্তু সেটা আর হয়ে উঠছিল না। মিতিনের জন্য ও একেবারে উপযুক্ত। চরিত্রটা যেমন আত্মবিশ্বাসী, তেমনই বৈচিত্রপূর্ণ। পরিবারের পাশাপাশি নিজের কাজেও সমান দক্ষ মিতিনমাসি। কোয়েলকে প্রস্তাবটা দেওয়ার পর ও উৎসাহে ৩০ সেকেন্ড চিৎকার করেছিল। ফোনটা কান থেকে সরিয়ে নিয়েছিলাম ওর চিৎকারের ঠেলায়,” জানালেন অরিন্দম।
খেল দিখা সকোগে না?
বাঙালি দর্শকের কাছে কোয়েল মানেই গ্ল্যামারাস, রোম্যান্টিক নায়িকা। মিতিনমাসির চরিত্রে কোয়েলকে কিভাবে নেবেন দর্শক?
অরিন্দমকে এই বিষয়ে যথেষ্ট আশাবাদী ও আত্মবিশ্বাসী শোনাল। বললেন, “‘হর হর ব্যোমকেশ’-এ নুসরত জাহানকে ওই ভাবে দেখতে পাবেন কেউ আশা করেননি। আসলে আমি বিশ্বাস করি যে দর্শককে যেভাবে দেখাব, তাঁরা সেভাবেই দেখবেন। এই জিনিষগুলো আমি সত্যজিৎ রায়, অপর্ণা সেন, ঋতুদার মত পরিচালকদের থেকে শিখেছি। আমরা কোয়েলের একটা দিক দেখেছি, কিন্তু আমার মনে হয়েছে মিতিন ওর থেকে ভালো কেউ করতে পারবে না।”
ছবির প্রেক্ষাপট বর্তমান সময়। তাই আজকের যুগের মতই মিতিনমাসিকে দেখা যাবে এই ছবিতে। মিতিনের ছেলে বুমবুম থাকছে না এই গল্পে। তবে মিতিনমাসির স্বামী, অর্থাৎ পার্থমেসোর চরিত্রে অভিনয় করবেন শুভ্রজিত দত্ত। মিতিনের সহকারি টুপুরের চরিত্রে থাকছেন রিয়া বণিক। এর আগে অরিন্দমের শবর সিরিজ়ের ছবি ‘ঈগলের চোখ’–এ অভিনয় করেছিলেন রিয়া। একটি বিশেষ চরিত্রে থাকছেন হিন্দী ছবির জনপ্রিয় অভিনেতা বিনয় পাঠক।
শব্দ যখন ছবি আঁকে
শীঘ্রই শুরু হবে এই ছবির শ্যুটিং। গল্পে নানান ভাবে ঘুরে দেখানো হবে কলকাতা। শহরের পার্সি সম্প্রদায়ের কথাও জানা যাবে এই ছবিতে। যেহেতু ‘হাতে মাত্র তিনটে দিন’ একটি শিশুর অপহরণ নিয়ে গল্প, তাই টানটান উত্তেজনা থাকবে গোটা ছবি জুড়েই।
“পরের ছবিগুলোয় কেরল থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটতে হবে মিতিন ও টুপুরকে। তাই শুরুটা কলকাতা দিয়েই হোক,” বললেন অরিন্দম।
ছবি: মানিক মণ্ডল