সাদাকালো যুগের নস্ট্যালজিয়া ফিরবে ‘মায়াকুমারী’র গানে: বিক্রম

RBN Web Desk: একটানা লকডাউনের আবহের মধ্যেই সম্প্রতি মুক্তি পেল পরিচালক অরিন্দম শীলের ‘মায়াকুমারী’ ছবির প্রথম গান। ছবির সঙ্গীত পরিচালনা দায়িত্বে রয়েছেন বিক্রম ঘোষ। গীতিকার শুভেন্দু দাসমুন্সির কথায় ‘মধুমাসে ফুল ফোটে বাগানে কাননে’ গানটি গেয়েছেন মধুবন্তী বাগচী। ছবিতে থাকছে মোট বারোটি গান। 

কেমন হতে চলেছে ছবির বাকি গানগুলি? “প্রতিটা গানের আবেদন ভিন্ন,” দাবি বিক্রমের। “যেহেতু পুরোনো দিনের বাংলা ছবি এই গল্পের বিষয়, তাই পঞ্চাশ থেকে সত্তরের দশকটা আমরা ধরতে চেয়েছি গানের মধ্যে দিয়ে। গানগুলো শুনলে সেই সময়ের ফিলটা আসবে। এই ছবিটায় একটা টাইম ট্র্যাভেল আছে। বর্তমান সময়কেও ধরা হয়েছে। সেটা মাথায় রেখেই একটা রক ঘরানার গানও থাকছে। আরও একটা গান বর্তমান ধারাকে মাথায় রেখে করা হয়েছে যেটা স্মৃতিতে আসবে। এছাড়া বাকি সবকটা গানই সেই সাদাকালো যুগের কথা মনে করিয়ে দেবে।” 




মধুবন্তী ছাড়াও ‘মায়াকুমারী’র অন্য গানগুলি গেয়েছেন হৈমন্তী শুক্লা, মনোময় ভট্টাচার্য, ইন্দ্রনীল সেন, ইমন চক্রবর্তী, উজ্জয়িনী মুখোপাধ্যায়, শোভন গঙ্গোপাধ্যায় ও অঙ্কিতা। 

“আমার আর অরিন্দমের মনে হয়েছিল পুরোনো দিনের বাংলা গানের সেই নস্ট্যালজিয়াটা ফিরিয়ে আনতে পারলে দর্শক এবং শ্রোতাদের ভালো লাগবে,” রেডিওবাংলানেট-কে জানালেন বিক্রম। “এমন নয় যে বিশেষ কোনও গান থেকে রেফারেন্স নিয়েছি। আমি কখনওই সেভাবে কাজ করি না। তবে আমরা তো ছোটবেলা থেকে ওই সময়ের গান শুনেই বড় হয়েছি। তাই সেই সুরটা মাথায় রয়ে গেছে। বর্তমান সময়ে কোনও গান তৈরি করতে গেলে অনেক বেশি প্রোগ্রামিং করতে হয়, যেটা পুরোনো দিনের গানে থাকত না। তবে এমন নয় যে যন্ত্রের ব্যবহার কম থাকবে। আমার উদ্দেশ্য একটা শ্রুতিমধুর গান তৈরি করা। সেটা করার জন্য যা-যা প্রয়োজন আমি করেছি। ‘মায়াকুমারী’র প্রতিটা গানই মেলোডি-নির্ভর এটুকু বলতে পারি।”

আরও পড়ুন: তিন মূর্তি ও পায়ের তলায় সরষে

তবে কোনও বিশেষ ধরণের গান মানুষের পছন্দ, এমনটা মনে করেন না বিক্রম।  “একটা সময় খুব শুনতাম যে এই ধরণের সুর নাকি পাবলিক খাবে না। পাবলিককে খাওয়াবার থিওরিটা সম্পূর্ণ ভুল। আমি তো ক্লাসিকালধর্মী সুর করি। ‘শবর’, ‘ব্যোমকেশ’ বা ‘গুপ্তধন’ সিরিজ়ের ছবির সুর তো মানুষের ভালো লেগেছে। আজ ‘মধুমাসে’ও তাঁদের ভালো লাগছে। আমার পনেরো বছরের ছেলে যে সারাক্ষণ এড শিরান ছাড়া কিছু শোনে না, সেও বলছে গানটা ভালো হয়েছে। ভালো গানের শ্রোতা সবসময়ই ছিল, আজও আছে। তাঁদের সেই সুযোগটা করে দিতে হবে। রেডিওতে এখনও কিশোরকুমার বা মহম্মদ রফির গানের শ্রোতার সংখ্যা বর্তমান প্রজন্মের তুলনায় অনেক বেশি। কারণ সেই গানে মেলোডি থাকত। সেইরকম গান আবার তৈরি করতে পারলে নতুন প্রজন্মও শুনবে বলে আমার বিশ্বাস,” বললেন বিক্রম।

‘মায়াকুমারী’র আবহ সঙ্গীতের দায়িত্বও তাঁর। “দুটো একসঙ্গে পালন করতে পারলেই আমার ভালো লাগে। কেন না আর কেউ মাথা লাগালে সুরটা তখন আর আমার ভাবনার প্রতিফলন হয়ে ওঠে না,” মনে করেন বিক্রম।

আরও পড়ুন: যে মৃত্যু আজও রহস্য

এখনও এই ছবির আবহ তৈরির কাজে হাত দেননি তিনি। তবে আবহ সঙ্গীতে তালবাদ্যের প্রাধান্য থাকবে না বলে জানালেন বিক্রম। ছবিতে বেশ কয়েকটি গান থাকবে অভিনেতাদের লিপে। ‘মধুমাসে’ গানটির কিছুটা থাকবে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর লিপে । 

লকডাউন পরবর্তী সময়ে মুক্তি পাবে ‘মায়াকুমারী’। তার আগে এই সময়কে কাজে লাগিয়ে মুক্তি পেতে চলেছে ছবির গান। ঋতুপর্ণা ছাড়াও এই ছবির অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন আবীর চট্টোপাধ্যায়, অরুণিমা ঘোষ, সৌরসেনী মৈত্র, রজতাভ দত্ত, অম্বরীশ ভট্টাচার্য ও ইন্দ্রাশিস রায়।

বাংলা ছবির শতবর্ষকে পর্দায় উদযাপন করবে ‘মায়াকুমারী’।

Amazon Obhijaan



Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Swati

Editor of a popular Bengali web-magazine. Writer, travel freak, nature addict, music lover, foody, crazy about hill stations and a dancer by passion. Burns the midnight oil to pen her prose. Also a poetry enthusiast.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *