লোকে হাজার টাকা খরচ করে রেস্তোরাঁয় খাবে কিন্তু টিকিট কেটে গান শুনবে না: ঋদ্ধি

কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে পয়সা দিয়ে টিকিট কেটে গান শোনার শ্রোতা আগের থেকে অনেক কমে গেছে বলে মনে করেন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়। “বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই উদ্যোক্তারা তাঁদের অনুষ্ঠানে লোকজনকে অবাধ প্রবেশাধিকার দিচ্ছেন। এর ফলে শিল্পীরা যেমন সত্যিকারের আগ্রহী শ্রোতা পাচ্ছেন না, তেমনই টিকিট বেচে অনুষ্ঠান করতে চান এমন উদ্যোক্তারাও মার খাচ্ছেন। লোকে হাজার টাকা খরচ করে রেস্তোরাঁয় খাবে কিন্তু সেই টাকা খরচ করে গান শুনতে যাবে না। আসলে যে জিনিসটা বিনামূল্যে পাওয়া যায়, সেটার জন্য কেউ কেন পয়সা খরচ করবে,” ক্ষোভের সঙ্গে বললেন ঋদ্ধি।

দু’দশকের ওপর সঙ্গীত জীবনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এবং বিদেশেও বহুবার অনুষ্ঠান করেছেন ঋদ্ধি। রবীন্দ্রসঙ্গীত ছাড়াও দ্বিজেন্দ্রগীতি, অতুলপ্রসাদ ও রজনীকান্তের গান নিয়মিত গেয়ে চলেছেন তিনি। সম্প্রতি প্লেব্যাকও করেছেন রেশমি মিত্রর ‘শ্লীলতাহানীর পরে’ ছবিতে।

এতগুলো বছরে বাংলা মিউজ়িক ইন্ডাস্ট্রিতে পরিবর্তন কি দেখেছেন জিজ্ঞাসা করতে রেডিওবাংলানেট-কে ঋদ্ধি  বললেন, “সঙ্গীতশিক্ষা এবং চর্চায় নিষ্ঠার অভাবটা বড্ড বেশি চোখে লাগে। এখন তো সবই প্রচারকেন্দ্রিক। চটজলদি খ্যাতির পেছনে ছুটছে সবাই। একটু গান গাইতে জানলেই একটা ইউটিউব চ্যানেল খুলে সেখানে একের পর এক গানের ভিডিও পোস্ট করছে। সেই গানটা আদৌ পরিবেশনযোগ্য হচ্ছে কি না, সেটা নিয়ে কেউ ভাবিত নন।”

পুনরায় চালু হবে ইলোরা, জানিয়ে দিল মালিকপক্ষ

তবে নতুন প্রজন্মের কাছে পুরাতনী বাংলা গান তাঁদের মত করে পরিবেশন করতে হবে, এটা মানেন তিনি। জানালেন, “পুরোনো শিল্পীদের মধ্যে অনেকেরই নিজস্ব ম্যানারিজ়ম ছিল যার সঙ্গে এখনকার শ্রোতা রিলেট করতে পারেন না। সেই ঢঙে গান গাইলে নবতিপর ছাড়া কোনও শ্রোতা পাব না আমি। আমাকে তো এই হারিয়ে যাওয়া গানগুলো আজকের শ্রোতাদের কাছে জনপ্রিয় করে তুলতে হবে।”

রাজ্য সরকারের তরফে তেমন সাহায্য না পেলেও, পুরাতনী বাংলা গান জনপ্রিয় করার রাস্তা থেকে দূরে সরছেন না ঋদ্ধি। সঙ্গীতকে ভালোবেসেই কলকাতার অন্যতম নামী কলেজের স্থায়ী শিক্ষকের পদ ছেড়েছেন তিনি। স্বামী দেবজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ইতিমধ্যেই গড়ে তুলেছেন একটি মিউজ়িক আর্কাইভ। প্রায় তিরিশ হাজার রেকর্ড, সমসংখ্যক দুষ্প্রাপ্য বই ও বহু বাদ্যযন্ত্র পাকাপাকিভাবে স্থান পেয়েছে সেখানে।

বাল্টিমোরে নর্থ আমেরিকান বেঙ্গলী কনফারেন্স সেরে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন ঋদ্ধি। ২৯ জুলাই থেকে পাঁচ দিনের বাংলাদেশ সফরে যাচ্ছেন তিনি।

Amazon Obhijaan



Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Prabuddha

Foodie, lazy, bookworm, and internet junkie. All in that order. Loves to floor the accelerator. Mad about the Himalayas and its trekking trails. Forester in past life. An avid swimmer. Also an occasional writer and editor

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *