ঋষি তার বাবার আয়না: ঋতব্রত মুখার্জী

অনেকটাই বড় হয়ে গেছে কাহানীর রানিং হট ওয়াটার বয়। এখন সে কলেজ ছাত্র। সম্প্রতি অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিন উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানে পাকড়াও করা গেল তাকে। কথায় কথায় ঋতব্রত মুখার্জী রেডিওবাংলানেট-কে জানালেন কৌশিক গাঙ্গুলীর ছবি কিশোর কুমার জুনিয়র-এ অভিনয় করার অভিজ্ঞতা ও আগামী দিনের পরিকল্পনা।

অনেকগুলো ছবি করে ফেললে এর মধ্যে

তা ঠিক (হেসে)। ২০১২-তে সুজয় ঘোষের কাহানী দিয়ে শুরু। তারপর অরিন্দম শীল, অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের ছবিতে কাজ করলাম। এছাড়া কৌশিক কর-এর পর্ণমোচী-তে প্রধান চরিত্রে ছিলাম।

কিশোর কুমার জুনিয়র তোমার কত নম্বর ছবি?

অষ্টম।

গান শেষ আর জান শেষ তো একই কথা রাজামশাই

এই ছবিতে তোমার অভিনীত চরিত্রটি কি রকম?

এখানে আমি কিশোর কুমার জুনিয়র, মানে বুম্বাকাকু (প্রসেনজিৎ) যে চরিত্রটিতে রয়েছেন, তার ছেলের ভূমিকায় অভিনয় করছি। আমার চরিত্রটির নাম ঋষি। তার একটা নিজস্ব ব্যান্ড আছে, সেখানে তারা মৌলিক গান লেখে, সুর দেয়, শো করে। ঋষি তার বাবাকে যথেষ্ট সম্মান করে। কিন্তু ২০১৮-তে দাঁড়িয়ে, তার বাবা যে শুধুমাত্র একজন কণ্ঠীশিল্পী সেটা মেনে নিতে পারে না। ঋষি তার বাবার কিছু কিছু অভ্যাসে বিরক্ত হয়। একটা পর্যায়ে গিয়ে দুজনের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব শুরু হয় এবং সে তার বাবার আয়না হয়ে ওঠে। তার বাবা স্টার হয়েও স্টার নয়, এটা মানতে তার কষ্ট হয়।

প্রসেনজিতের সাথে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?

আমি শুনেছিলাম যিনি যত বড় স্টার, কাজের প্রতি তাঁর কমিটমেন্ট তত বেশি। এটা যে একশো ভাগ সত্যি কথা সেটা প্রথম ছবিতেই উপলব্ধি করি বিদ্যা বালনের সাথে কাজ করার সময়। আর বুম্বাকাকুর সাথে একই ফ্রেমে থাকা তো একটা স্বপ্নের মত। উনি যে ছবিতে অভিনয় করেন, সেটায় সম্পূর্ণ ডুবে যান। ছবির প্রত্যেকটি খুঁটিনাটি জিনিষ খেয়াল রাখেন। শুধু নিজের দৃশ্যগুলোই নয়, গোটা চিত্রনাট্যটাই তাঁর মুখস্থ। সহ-অভিনেতাকে ভীষণ সাহায্য করেন। এই ডেডিকেশনটা সত্যিই শেখার মত। এমনি-এমনি তো কেউ আর এতবড় স্টার হন না।

Advertisement

আর কৌশিক গাঙ্গুলী?

অসাধারণ পরিচালক এবং ওনার টিমটা দুর্দান্ত। যে কোনও অভিনেতা বা টেকনিশিয়নের লোভ হবে এরকম একটা টিমের সাথে কাজ করতে। অনেকটা সময় নিয়ে কাজ করেন কৌশিককাকু। আর উনি নিজে যেহেতু একজন দারুণ অভিনেতা সেই জন্য যখন কোনও চরিত্র বা দৃশ্য বোঝান, সেটা একেবারে জীবন্ত হয়ে ওঠে। অভিনেতার কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। যে ভাবে আমরা ওনাকে মিডিয়ায় দেখি, সর্বদা হাসিখুশি, বাস্তবেও মানুষটা একেবারেই তাই।

তোমার বাবা শান্তিলাল মুখোপাধ্যায় মঞ্চ এবং চলচ্চিত্রের একজন জনপ্রিয় অভিনেতা। সেই অর্থে নেপোটিজ়ম বা সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগের সম্মুখীন হয়েছ কখনও?

না। যার ছেলেই হই না কেন, শেষ পর্যন্ত আমার কাজটাই তো বিচার হবে, তাই নয় কি? আমার মধ্যে যদি সেই অভিনয় গুণ না থাকে, তাহলে একজন পরিচালক তাঁর ছবিতে আমাকে নেবেন কেন? আমার তো নিজেকে প্রমাণ করতে হবে। হ্যাঁ এটা ঠিক যে বাবা, চন্দন সেন, এঁদের হাত ধরে অভিনয়টা শিখেছি আমি। কিন্তু আমি টিকতে পারব, কি পারব না, সেটা তো আমার কাজের ওপর নির্ভর করবে। আমি যদি কাজটাই ঠিকমত না করতে পারি, তখন বাবা-মা-দাদু-ঠাকুমা কারোর পরিচয়ই কাজে আসবে না। 

তিন মূর্তি ও পায়ের তলায় সরষে

মুম্বই এবং কলকাতার পরিচালকদের মধ্যে কাজের কোনও ফারাক পাও?

প্রত্যেক পরিচালকেরই কাজের একটা নিজস্ব পদ্ধতি আছে। সেখানে মুম্বই বা কলকাতা বলে আলাদা কিছু নেই। তবে স্বাভাবিক কারণেই কলকাতার ছবিতে বাজেট অনেক কম থাকে হিন্দী ছবির তুলনায়। সেটা একটা সমস্যা তো বটেই। এখানকার পরিচালকরা সেই সীমিত অর্থের মধ্যেই কাজ করেন এবং সেটা এতটাই নিখুঁত হয় যে পর্দায় দেখার সময় মনেই হয় না ছবিটার বাজেট মুম্বইয়ের ধারকাছে আসে না। তবে কলকাতা হোক বা মুম্বই, কাজটা সবাই ভালোবেসেই করেন। বাংলা বা হিন্দী ছবির গুণগত মানের কোনও ফারাক তুমি দেখতে পাবে না।

আর কোন ছবিতে কাজ করছ এখন?

অপর্ণা সেনের ঘরে বাইরে আজ-এ অমূল্যর চরিত্রটা করছি। এছাড়া মৈনাক ভৌমিকের জেনারেশন আমি-তে কাজ করছি। অন্যান্য ছবি নিয়েও কথাবার্তা চলছে।

Amazon Obhijaan



Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Prabuddha

Foodie, lazy, bookworm, and internet junkie. All in that order. Loves to floor the accelerator. Mad about the Himalayas and its trekking trails. Forester in past life. An avid swimmer. Also an occasional writer and editor

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *