‘পথের পাঁচালী’ আমার জীবন বদলে দিয়েছিল: লরেন্স কার্ডিশ
RBN Web Desk: সত্যজিৎ রায়ের প্রথম ছবি ‘পথের পাঁচালী’ তাঁর জীবন বদলে দিয়েছিল। ৯ ডিসেম্বর কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সত্যজিৎ রায় স্মারক বক্তৃতা দিতে এসে বললেন বিশিষ্ট মার্কিন লেখক ও চলচ্চিত্র পরিচালক লরেন্স কার্ডিশ। তাঁকে পুষ্পস্তবক দিয়ে স্বাগত জানান পরিচালক-অভিনেত্রী অপর্ণা সেন।
পাঁচ দশক আগে কার্ডিশ প্রথম দেখেন ‘পথের পাঁচালী’। এই ছবি তাঁর জীবনবোধের উপর তীব্র প্রভাব ফেলে। সব অর্থেই তাঁকে প্রভাবিত করেছিল এই ছবি। কারণ পৃথিবীর সর্বত্রই মানুষ আসলে একইরকম—যতই আলাদা তাদের যাপন হোক না কেন—এই সহজ সত্য বুঝিয়ে দেয় এই ছবি। ‘ড্রামাটিক নন ড্রামা’ বলে ছবিটিকে অভিহিত করেন লরেন্স। “আমি বুঝতে পেরেছিলাম এ ছবির শ্যুটিং বাংলার বোড়ালে হোক বা পৃথিবীর অন্য যে কোনও জায়গায়, আসলে মানুষ সর্বত্রই সমান,” বললেন কার্ডিশ।
আরও পড়ুন: ডেভিড হেয়ারের জীবনী প্রকাশ
১৯৬৮ সালে তিনি মিউজ়িয়ম অফ মডার্ন আর্টের (মোমা) ফিল্ম কিউরেটর নিযুক্ত হন। “আমার ৪৪ বছরের ফিল্ম কিউরেটর হওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, সত্যজিতের রেট্রোস্পেকটিভ আমাদের কাছে খুব জরুরি এক মাইলস্টোন ছিল সেই সব সিনেমার মধ্যে যা আমাদের ইতিহাস, অগ্রগতি, সংস্কৃতি এবং চলমান ছবিকে বুঝিয়েছে,” বললেন কার্ডিশ।
১৯৮১ সালে মোমায় আয়োজিত সত্যজিতের রেট্রোস্পেকটিভ ছিল তাঁর প্রথম সম্পূর্ণ কাজের প্রতিফলন। এর আগে সত্যজিতের বহু ছবি আমেরিকায় দেখানো হয়নি, তার মধ্যে ‘কাঞ্চনজঙ্ঘা’র মতো ছবিও রয়েছে। এই সূত্রে সিকিম রাজপরিবারের থেকে সত্যজিতের ‘সিকিম’ তথ্যচিত্রের প্রিন্টও পেয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: শীতের আমেজ মেখে জমজমাট চলচ্চিত্র উৎসব
১৯৫৫ সালের ৩ মে মোমায় সুব্রত মিত্রের তোলা ছবি নিয়ে আয়োজিত হয় ‘দ্য স্টোরি অফ অপু অ্যান্ড দুর্গা’। কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে দেখানোর আগে সাবটাইটেল ছাড়া সেখানেই প্রদর্শিত হয় ছবিটি। পরবর্তীতে চিদানন্দ দাশগুপ্তের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ ছিল কার্ডিশের। সেই সূত্রে ভারতীয় ছবির খবর পেতেন তিনি।
সত্যজিৎকে শুধুমাত্র এক বিখ্যাত পরিচালক নয়, বরং বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধের এক মহান শিল্পী বলে বর্ণনা করেন কার্ডিশ।
ছবি: সুফল ভট্টাচার্য