বদলে যাওয়া মূল্যবোধ নিয়ে ‘বিজয়ার পরে’
কলকাতা: দুর্গাপুজো এবং সম্পর্কের গল্প, এই নিয়ে বাংলায় কম ছবি হয়নি। এরকমই একটি বড় পরিবারের গল্প বলতে চেয়েছেন পরিচালক অভিজিৎ শ্রীদাস, তাঁর ‘বিজয়ার পরে’ ছবিতে। অভিনয়ে রয়েছেন মমতা শঙ্কর, দীপঙ্কর দে, স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়, খেয়া চট্টোপাধ্যায়, মীর আফসর আলি, ঋতব্রত মুখোপাধ্যায়, মিশকা হালিম, পদ্মনাভ দাসগুপ্ত, বিদিপ্তা চক্রবর্তী তানিকা বসু ও বিমল গিরি। এবারের কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের বাংলা প্যানোরামা বিভাগে গতকাল ছবিটি প্রদর্শিত হলো। সেই নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে এলেন পরিচালক এবং অভিনেতারা।
কিন্তু কেন এক পরিবারের গল্প, কেনই বা পুজোর প্রেক্ষাপট? অভিজিৎ জানালেন, “আমি উত্তরবঙ্গের মানুষ। এটা আমার প্রথম ছবি। ছবিটা দুর্গাপুজোকে ঘিরে। আমাদের প্রতিদিনের জীবনে যা ঘটে চলেছে সেই নিয়েই এই ছবি। আজকাল অনেককিছুই ঠিক করে দেওয়া হয়, যেমন আমরা কী খাব বা কী খাব না, কী দেখব, কার সঙ্গে মিশব। কিন্তু এভাবে তো আমরা বড় হইনি। বরং সবকিছুর সহাবস্থান নিয়েই আমরা বেড়ে উঠেছি। এটাই বলতে চেয়েছি আমি ছবিটার মাধ্যমে। এই বিষয় নিয়ে সামাজিক ও রাজনৈতিক বার্তা দেবে আমার ‘বিজয়ার পরে’।”
আরও পড়ুন: বড়দিনের লড়াইয়ে জমি ছাড়বেন না সোহম-দেব
প্রথম ছবি হলেও প্রতিষ্ঠিত অভিনেতাদের পেয়েছেন অভিজিৎ। মমতা শঙ্কর প্রথমে চিত্রনাট্য পড়ে বলেছিলেন কাজটা খুব কঠিন, তিনি পেরে উঠবেন না। পরে নিজেই রাজি হন এবং বলেছেন তাঁর জীবনের অন্যতম কঠিন চরিত্র এটি, জানালেন অভিজিৎ।
স্বস্তিকা বললেন, “ইদানিং প্রায় প্রত্যেকটা ছবিই হয় থ্রিলার, নয় ডিটেকটিভ। এই ঘরানার বাইরে খুব একটা বেরোনো যাচ্ছে না। এই গল্পটা পড়ে আমার খুব পছন্দ হয়েছিল। একটা বড় পরিবারের গল্প। পুজোর সময় সব ছেলেমেয়েরা বাড়ি আসে। পুজো শেষ হয়ে যাওয়ার পর তাদের মধ্যে নানারকম সমস্যা, সম্পর্ক ইত্যাদি গড়ে ওঠার মধ্যে দিয়ে ছবিটা এগিয়ে যায়।”
আরও পড়ুন: আবারও বাংলা ছবিতে রাখী
মমতা শঙ্করের সঙ্গে তাঁর একটি নাচের দৃশ্যও রয়েছে। তবে এই ছবির বেশিরভাগই দীপঙ্কর ও মমতা শঙ্করকে নিয়ে, বললেন স্বস্তিকা।
“ছবিতে আমার ভূমিকা কত সেটা তো অবশ্যই দেখি। কতটা কাজের সুযোগ রয়েছে বা আগে করা কোনও চরিত্রের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে কিনা, এগুলো দেখেই কাজটা নেব কিনা ঠিক করি। আমি চেষ্টা করি কোনও চরিত্র যেন আমার আগের অভিনীত চরিত্রগুলোর সঙ্গে মিলে না যায়। এখানে আমি ছবির মূল চরিত্র না হলেও আমার ভূমিকা অনেকটাই,” বললেন স্বস্তিকা।
“আমার সবথেকে ভালো লেগেছে গল্পটা বাঙালিয়ানার,” বললেন দীপঙ্কর। “দুর্গাপুজোকে ঘিরে একটা পরিবারের নানা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, টানাপোড়েন, এইসব নিয়েই গল্প। মমতা শঙ্করের সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে খুব সমস্যা হতো কারণ ওর সহজে শট পছন্দ হয় না। এক একটা দৃশ্য সাত- আটবার করতে হয় ওর জন্য। সব ঠিক হওয়ার পরেও বলবে, এটা ভালো হয়নি। যদিও যাই হোক না কেন, এত বছরের একটা বোঝাপড়া আমাদের যে একসঙ্গে কাজ করতে ভালোই লাগে। আর স্বস্তিকা তো অসাধারণ অভিনেত্রী।”
ছবি: সুফল ভট্টাচার্য