১৯ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালীন ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি ইম্পার
কলকাতা: বর্ধিত সার্ভিস চার্জের দাবীতে রাজ্যের সমস্ত একক প্রেক্ষাগৃহে ১৯ জুলাই থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দিল ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচার অ্যাসোসিয়েশন (ইম্পা)। গতকাল শহরে ইম্পার তরফে এক সাংবাদিক সম্মেলনে সংগঠনের সভাপতি পিয়া সেনগুপ্ত জানান, “১৮ জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করব আমরা। এর মধ্যে প্রশাসন এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনওরকম ব্যবস্থা না নিলে ১৯ জুলাই থেকে রাজ্যজুড়ে ধর্মঘটে যাবে একক প্রেক্ষাগৃহগুলি।”
পিয়া ছাড়াও গতকালের সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আর্টিস্টস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়, সিনে টেকনিশিয়ন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অপর্ণা ঘটক, অভিনেত্রী পল্লবী চট্টোপাধ্যায়, অভিনেতা শান্তিলাল মুখোপাধ্যায় ও অন্যান্যরা। এছাড়াও ছিলেন প্রিয়া সিনেমার কর্ণধার অরিজিৎ দত্তর মত হলমালিকরা।
পিয়া অভিযোগ করেন, “বর্তমানে মাল্টিপ্লেক্সের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় হেরে যাচ্ছে একক প্রেক্ষাগৃহগুলি। ১৯৯৩ সালে সিনেমার টিকিটের ওপর সার্ভিস চার্জ নেওয়ার অনুমতি দেন তৎকালীন রাজ্য সরকার। হল কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি, ২০ শতাংশ হারে বোনাস বৃদ্ধি, বৈদ্যুতিন খরচের বর্ধিত চার্জ, মহার্ঘ ভাতা এবং হল রক্ষণাবেক্ষণের খরচ সবটাই আসে এই সার্ভিস চার্জ থেকে। ২০১৭ সালে জিএসটি আসার পর সার্ভিস চার্জ উঠে যায়। এর ফলে ভয়ঙ্কর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এই হলগুলি। সার্ভিস চার্জ সংক্রান্ত যে সমস্যা চলছে সেগুলো রাজ্য সরকারকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি।”
শহরের রাস্তায় হেনস্থার শিকার অভিনেত্রী
সম্প্রতি বন্ধ হয়ে যাওয়া ইলোরা প্রেক্ষাগৃহের মালিক রতন সাহা বলেন, “দেশের অন্যান্য রাজ্যে যেখানে ২০-২৫ টাকা সার্ভিস চার্জ নেওয়া হয়, সেখানে এ রাজ্যে একক প্রেক্ষাগৃহের মালিকরা এই বাবদ এখনও ২-৩ টাকা নিতে অভ্যস্ত। সার্ভিস চার্জ বাড়িয়ে ৫, ৭ বা ১০ টাকা করা হোক। এর ফলে কোনওভাবেই টিকিটের মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই। তাই দর্শকের উপর কোনও প্রকার চাপ সৃষ্টি হবে না।”
অরিন্দম বলেন, “বর্তমানে আমাদের ইন্ডাস্ট্রির অনেকেই সাংসদ হওয়া সত্বেও এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক এই আন্দোলন আমরা চালাচ্ছি বাংলা ছবির ভবিষ্যতের কথা ভেবে। যেভাবে বাংলা নাট্যজগতের ঐতিহ্য আজ নষ্ট হয়ে গেছে সরকারী উদাসীনতায়, সেভাবেই বাংলা চলচ্চিত্রেরও লুপ্তপ্রায় অবস্থা।”
বিশ্বভারতীর উদ্যোগে নজরুল ইসলাম স্মরণ
ইম্পার অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গে এসে হিন্দী ও ইংরেজি ছবি বিপুল অঙ্কের ব্যবসা করলেও কোনও সার্ভিস চার্জ দিচ্ছে না তার কারণ রাজ্য সরকার এই সংক্রান্ত কোনও লিখিত নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট দেয়নি। ফলত অন্যান্য রাজ্য সার্ভিস চার্জ পেলেও পশ্চিমবঙ্গ তা পাচ্ছে না। রাজ্যে একক প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যা ৯০০ থেকে কমে ২৫০-এরও নীচে নেমে গেছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ইম্পা কর্তৃপক্ষ।
ইম্পার পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে জানতে চাইলে পল্লবী জানান, “আমি অত্যন্ত আশাবাদী যে আমাদের সরকার সত্বর ব্যবস্থা নেবেন। একান্তই সেরকম কিছু না হলে আমরা যেরকম ধর্মঘটের পরিকল্পনা নিয়েছি তা বজায় থাকবে।”
ছবি: প্রতিবেদক