রংমিলান্তি পোশাকে মেট্রো রেলে সওয়ার দেব-রুক্মিণী

কলকাতা: রবিবারের সকাল। অন্যদিনের চেনা ব্যস্ততা থেকে এই দিনটা আলাদা। কবি সুভাষ স্টেশনের সামনে আসতেই বেশ বড় একটা ভিড় চোখে পড়ল। কিসের যেন প্রস্তুতি চলছে চারপাশে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতেই ব্যাপারটা বোঝা গেল। কবি সুভাষ থেকে ট্রেন ছেড়ে যতীন দাস স্টেশনে থামবে। প্রস্তুতির মাঝেই দেখা গেল টিনটিন ও রোহিনীকে।

রাহুল মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘কিশমিশ’ ছবির দুই কেন্দ্রীয় চরিত্র টিনটিন ও রোহিনী। এই দুটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন দেব ও রুক্মিণী মৈত্র। রংমিলান্তি পোশাকে কখনও কানে-কানে ফিসফিস, কখনও আলতো আঙুলে মাথায় বিলি, কখনও চোখের ভাষায় কথা, যেন প্রেমে পাগলপারা নদী, দুটি মন। টিনটিন খামখেয়ালি, গোবেচারা গোছের। আর রোহিনী বুদ্ধিমতী, গৌরবাকাঙ্ক্ষী। এমন দুটি মানুষকে নিয়ে অবশেষে শুরু হলো মেট্রো রেলে ভালোবাসার সফর। গানে, গল্পে, আড্ডায় রবিবাসরীয় সকাল জমিয়ে দিল টিম ‘কিশমিশ’। সাক্ষী রইলেন মেট্রো রেলের কর্মীবৃন্দ ও সাংবাদিকরা।

আরও পড়ুন: নেপথ্যে গাইলেন জলি, স্টেজে দাঁড়িয়ে ঠোঁট মেলালেন রাহুল দেব বর্মণ

রাহুলের প্রথম ছবি ‘কিশমিশ’ আদতে ভালোবাসার গল্প। নামের মতোই, দেখতে কেমন-কেমন হলেও, আদতে মিষ্টি। সময়ের সঙ্গে ভালোবাসার মানুষগুলো বদলে যায়, কিন্তু ভালোবাসাটা রয়ে যায়। প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে প্রচুর ছবি হয়েছে, হবেও। ষাটের দশক কিংবা নব্বইয়ের দশকের ভালোবাসার ছবিগুলো যেমন সেই সময়কার প্রেম নিয়ে, তেমনই নতুন প্রজন্মের ভালোবাসারও একটা সংজ্ঞা আছে। ভলোবাসি না বলেও  ভালোবাসতে চায় এই প্রজন্ম, তারা নিজেদের নিজের মতো করে গুছিয়ে নিতে চায়। ভালোবাসার দুই সময়ের কথা, নানা আবেগের কথা বলবে ‘কিশমিশ’। আসলে সময় চলে গেছে, মানুষ বদলে গেছে, প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে, সংজ্ঞাও পাল্টেছে, চিরন্তন থেকেছে শুধু প্রেম। এই নিয়েই ছবি করেছেন রাহুল।

রেডিওবাংলানেট-কে রাহুল জানালেন, ”আমার মনে হয়েছিল বাংলাতে প্রেমের ছবি খুব কমই হয়। তাই যখন লিখব ঠিক করি, তখন প্রেম বিষয়টাকেই বেছে নিই। অনেক রিজেকশন পেয়েছি। তবু খরাজদার মতো মানুষকে পাশে পেয়েছি। এবং অবশ্যই দেব, আমি যেরকমভাবে চেয়েছি উনি সেভাবেই পাশে ছিলেন।”

চৈত্রের শেষে চেনা গরমে ফুটছিল মহানগর। ক্লান্ত লাগছিল খরাজকে। ‘কিশমিশ’-এর শুরু থেকে, বলা ভালো ছবিটা হওয়ার জন্য তাঁর প্রচেষ্টা নেহাত কম ছিল না। রাহুল আপ্লুত খরাজের মহানুভবে। ছবিতে তাঁর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে উপস্থিত থাকবেন খরাজ। কথায়-কথায় জানালেন, অভিনয় করতে-করতে গুনগুনিয়ে গানও গেয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন: নব্বইয়ের ‘সত্যান্বেষী’, বাদ পড়লেন ব্যোমকেশ

ছবি মুক্তির আগে স্বাভাবিকভাবেই ব্যস্ত পরিচালক ও তাঁর দলবল। কমলেশ্বর জানালেন, ”ছবিটা শুধু প্রেমের নয়, পারিবারিকও। অনেক সম্পর্কের টানাপোড়েন আছে যা দর্শক নিজেদের জীবনের সঙ্গে মেলাতে পারবেন। রাহুলের পরিচালনার মুন্সিয়ানা আমাকে অবাক করেছে। আর আজকের রবিবারটা সত্যি অন্যরকম, বেশ উপভোগ করছি।”

রবিবারের সকালে ওয়েস্টার্ন আউটফিটে অঞ্জনাকে বেশ কেতাদূরস্ত দেখাচ্ছিল। যেন অভিমানের সুরেই বললেন, ”রবিবারের ঘুমটাই হলো না, সেই কোন সকাল থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে ‘কিশমিশ’ অন্যরকম একটা আবেগ, তাই এখানে মায়ের চরিত্রে অভিনয় করতেও পিছপা হয়নি।”

সবশেষে পাওয়া গেল দেব ও রুক্মিণীকে। তবে তাঁদের সঙ্গে কথা বলার জো নেই। মেট্রো রেল আধিকারিকদের সেলফি তোলার আবদার মেটাচ্ছিলেন তাঁরা। তবু তার মাঝেই হাত নেড়ে দেব-রুক্মিণী বললেন, “২৯ এপ্রিল প্রেক্ষাগৃহে দেখা হবে।”




Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *