রাজনৈতিক মদতে অপরাধ, রহস্যের জট ছাড়াতে ‘এফআইআর’
RBN Web Desk: ক্ষমতার বাড়বাড়ন্তই অন্ধকারের জন্ম দেয়। অজস্র অর্থ আর অপরিসীম ক্ষমতা শাসককে অচিরেই শোষক করে তোলে। প্রশাসক পরিণত হয় স্বৈরাচারীতে। প্রকাশ্যে বা আড়ালে থেকে সে চালিয়ে যায় তার পাপের রাজত্ব। এভাবেই বেড়ে চলে অপরাধের ধারা। কিন্তু কোনও রহস্যই আজীবন রহস্য হয়ে থাকে না। কেউ না কেউ এগিয়ে আসে রহস্যের পর্দা সরিয়ে অন্ধকার দূর করতে। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের চিরাচরিত কাহিনীকে এক নতুন রূপে পর্দায় আনতে চলেছেন পরিচালক জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। ছবির নাম ‘এফআইআর’। অভিনয়ে আছেন অঙ্কুশ হাজরা, ঋতাভরি চক্রবর্তী, ফলক রাশিদ রায়, বনি সেনগুপ্ত, অনির্বাণ চক্রবর্তী ও শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়। সম্প্রতি কলকাতায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তাঁরা।
রঘুনাথপুর গ্রাম ক্রাইমের আঁতুর ঘর। অথচ সব জেনেও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নিতে অপারগ। কারণ ক্ষমতাধর ব্যক্তিদের সরাসরি হস্তক্ষেপ। রাজনৈতিক মদতে ঘটে চলে যথেচ্ছাচার। খুনের পর খুন, আবারও খুন। এই অবস্থায় কলকাতা থেকে রঘুনাথপুর এসে পৌঁছয় সিনিয়র ইন্সপেক্টর অভ্রজিৎ দত্ত (অঙ্কুশ)। কিন্তু কীভাবে সে রঘুনাথপুরকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনবে? পুলিশের কেউই এখানে কোনও কাজ করতে রাজি নয়। ওদিকে খুনজখম বেড়েই চলেছে। বার ডান্সার শিউলি (ফলক) ও ডাক্তার এষা (ঋতাভরি) অভ্রজিতের পাশে থাকলেও আদৌ কি রঘুনাথপুরে শান্তি প্রতিষ্ঠা হবে?
আরও পড়ুন: নব্বইয়ের ‘সত্যান্বেষী’, বাদ পড়লেন ব্যোমকেশ
ক্রিমিনাল ও পুলিশের দ্বৈরথ নিয়ে অজস্র ছবি হয়েছে ও হচ্ছে। সেখানে ‘এফআইআর’ নতুন কী সংযোজন করবে? “সে তো রোমান্টিক প্লটেও হাজার খানেক ছবি হয়েছে,” হাসতে-হাসতে রেডিওবাংলানেট-কে বললেন অঙ্কুশ। “হাইজ্যাক বা যুদ্ধ নিয়েও তো কত ছবি হয়। গল্পটা কীভাবে সাজানো হচ্ছে বা সেই অবস্থা থেকে উদ্ধার পাওয়াটা কীভাবে দেখানো হচ্ছে, সেটাই একটা ছবি দেখার মূল কারণ হওয়া উচিত।”
জয়দীপের ছবি ক্রাইম থ্রিলার হলেও গল্পের মধ্যে চমকে দেওয়ার মতো একাধিক উপাদান রয়েছে বলে জানালেন অঙ্কুশ। তবে স্বাভাবিক কারণেই এর বেশি কিছু বলতে নারাজ তিনি।
আরও পড়ুন: সব কান্নার শব্দ হয় না, বেজে উঠল পটদীপ
“জয়দীপদার সঙ্গে প্রথমবার কাজ করে দারুণ লেগেছে,” বললেন অঙ্কুশ। “আমি যে খুব সতর্ক হয়ে চরিত্র নির্বাচন করি তা নয়। চিত্রনাট্য পছন্দ হলে সেটা আমি করবই। সেখানে কমেডি করছি না সিরিয়াস চরিত্রে রয়েছি, সেটা তখন আমার কাছে খুব একটা বিচার্য নয়। জয়দীপদা এখানে কোনও সিনেম্যাটিক লাইসেন্স নেননি। ছবিটা খুব বাস্তবধর্মী। আর তিনি নিজে যেহেতু একজন দারুণ অভিনেতা, তাই কোন জায়গায় কীভাবে কাজটা করতে হবে উনি খুব ভালো বোঝেন।”
শিউলি বার ডান্সার হলেও তার মধ্যে একটা অশিক্ষিত গ্রাম্য ব্যাপার আছে বলে জানালেন ফলক। “সে খুব সাধারণ একটা মেয়ে। অথচ সেই মেয়েই যখন পানশালায় নাচতে যায়, তখন একেবারে অন্যরকম। সে কথায়-কথায় গালাগাল দেয়, যা খুশি বলে দিতে পারে। এরকম কোনও চরিত্রে আগে কাজ করিনি। এর আগে সবই ছোট চরিত্র করেছি। সেই অর্থে ছবির মূল চরিত্র বলতে এটাই আমার প্রথম বড় কাজ। এরকম কোনও মেয়েকে কখনও দেখিনি। তাই ব্যাপারটা নিজের মধ্যে আনাটা বেশ কঠিন ছিল। জয়দীপদা আমাকে ‘চামেলি’, ‘চাঁদনি বার’ ছবির রেফারেন্স দিয়েছিলেন। ওগুলো দেখে শিউলিকে ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করেছি,” বললেন ফলক।
অক্টোবরে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেতে চলেছে ‘এফআইআর’।
ছবি: স্বাতী চট্টোপাধ্যায়