এবার ছোটদের জন্য জুটি বাঁধছেন ঋতুপর্ণা-শাশ্বত
কলকাতা: ছোটদের জন্য জুটি বাঁধতে চলেছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত ও শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়। ‘পার্সেল’-এর পর এবার তাঁদের দেখা যাবে পরিচালক মুরারী রক্ষিতের দ্বিতীয় ছবি ‘ছুটি’র দুই মুখ্য চরিত্রে। এই ছবির অন্যান্য চরিত্রে থাকছেন প্রদীপ মুখোপাধ্যায় ও সুদীপা বসু। গতকাল শহরে ‘ছুটি’র ঘোষণা উপলক্ষে উপস্থিত ছিলেন পরিচালক ও কলাকুশলীরা।
ছবির বিষয়বস্তু ছুটি নিয়ে হলেও তা গ্রীষ্মের ছুটি বা পুজোর ছুটির মতো নির্দিষ্ট কোনও ছুটি নয়। এই ছুটি হলো ব্যস্ত বাবা মায়ের সন্তানদের এক বিশেষ চাওয়া। বর্তমানে অণু পরিবারে বাবা মায়েরা এতটাই ব্যস্ত থাকেন যে বাড়ির ছোটদের জন্য তাদের কাছে সময় থাকে না। ছোটরা বাড়িতে কাজের মাসির কাছে বা কখনও হয়তো দাদু ঠাকুমাদের সঙ্গে থাকলেও তারা সবসময় চায় বাবা মায়ের ছুটি হোক, যাতে তারা বাড়িতে একটু সময় কাটাতে পারে। প্রতিদিনের এই সমস্যাগুলো অধিকাংশ পরিবারেই দেখা যায়। সেই বাচ্চাদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এই পরিস্থিতিগুলো দেখা ও তাদের একাকীত্বের সমস্যা নিয়ে ভাবনা থেকেই ‘ছুটি’র পরিকল্পনা করেছেন পরিচালক।
আরও পড়ুন: পাকদণ্ডীর পথে পথে দেওরিয়াতাল
‘ছুটি’তে এক কর্মরতা মায়ের ভূমিকায় থাকা ঋতুপর্ণার মতে, “খুব প্রাসঙ্গিক একটা বিষয় নিয়ে এই ছবিটা হতে চলেছে। একটা সহজ গল্পকে সহজভাবে বলতে পারাই সবচেয়ে কঠিন কাজ। আশা করা যায় সেটা এই ছবির মাধ্যমে আমরা করতে পারব। আজকাল আমাদের ব্যস্ততা এতটাই বেড়ে গেছে যে একটা ছুটির দিন পেলেও আমরা বাকি কাজগুলো সেইদিন করি। ছোটবেলার মতো ছুটি মানে শুধুই ছুটি, এই ব্যাপারটা যেন আমরা ভুলেই গেছি । এই ছবিতে সেই সমস্যাগুলোকেই তুলে ধরা হবে।”
ছবিতে এক ব্যস্ত মেডিকেল রিপ্রেজ়েন্টেটিভের চরিত্রে দেখা যাবে শাশ্বতকে। “এখানে বাবা মায়ের থেকে ছোটদের আবেগটাই বেশী করে দেখানো হবে। আর সেটাই প্রয়োজন,” বললেন তিনি। “সময়ের সঙ্গে পরিবারগুলো ভেঙে ছোট হয়ে যাচ্ছে। আজকের দিনে বাবা মা দুজনকেই কাজ করতে হয়, তাই বাচ্চারাও একা হয়ে যায়। আমি নিজে ছোটবেলায় এটা খুব ফিল করতাম কারণ বাবা একেবারেই সময় দিতে পারতেন না। আমাকে দাদামশাই বেড়াতে নিয়ে যেতেন। এখন তো সেটাও পায় না সব বাচ্চারা। এইসব বিষয় নিয়েই ছবিটা হতে চলেছে। আশা করছি কাজটা ভালো হবে।”
আরও পড়ুন: বিশ্বনাথের বারাণসী, বারাণসীর বিসমিল্লাহ
ছবিতে দাদুর ভূমিকায় দেখা যাবে প্রদীপবাবুকে। “আজকাল যেটুকু কাজ করি, জানতেই পারি না কি করছি বা কেন করছি। ‘ছুটি’র গল্পটা জেনে আমার মনে হয়েছে এই বিষয় নিয়ে ছবি হওয়া দরকার,” বললেন তিনি।
“আমি বাংলার পরিচালক নই, বিদেশে থাকি,” বললেন মুরারী। “এখানে এসে যেমন দেখি, সেগুলো নিয়েই ছবি করার কথা ভাবি। কর্মসূত্রে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরির কারণে আমিও নিজের বাচ্চাদের জন্য সময় বার করতে পারি না। এগুলো নিয়েই সহজ একটা গল্প লিখেছি এবং সেটাই ছবির মাধ্যমে দেখাতে চাইছি।”
আরও পড়ুন: তিন মূর্তি ও পায়ের তলায় সরষে
‘ছুটি’র সঙ্গীতের দায়িত্বে থাকছেন জয় সরকার। ছবিতে একটা রবীন্দ্রসঙ্গীত থাকছে মোহন সিংয়ের কণ্ঠে। “এছাড়াও তিনটে গান থাকবে যেগুলো নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে,” জানালেন জয়।
ডিসেম্বর থেকেই শুরু হবে ছবির শুটিং।