ফোন ধরার সাহসটুকুও দেখালেন না কেউ, ক্ষোভ কৌশিকের

কলকাতা: “কারা এর জন্য দায়ী এবং কাদের বিরুদ্ধে লড়ছি সেটাই বুঝতে পারছি না।” পরিচালক অনীক দত্তর ছবি ভবিষ্যতের ভূত প্রেক্ষাগৃহ থেকে তুলে নেওয়ার প্রতিবাদে গতকাল শহরে এক পথসভায় এমনটাই বললেন নাট্যকর্মী ও অভিনেতা কৌশিক সেন।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারী মুক্তি পায় ভবিষ্যতের ভূত। মুক্তির ঠিক একদিনের মাথায় কলকাতার সমস্ত প্রেক্ষাগৃহ থেকে তুলে নেওয়া হয় ছবিটি। হল মালিক ও মাল্টিপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন ‘ওপর মহল’ থেকে নির্দেশ এসেছে ছবি বন্ধ করতে হবে। কিন্তু এই ওপর মহল কে বা কারা তা স্পষ্ট করে বলা হয়নি। এই নিয়ে গতকালের প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন এই ছবির কলাকুশলীরা ও বাংলা চলচ্চিত্র ও নাট্যজগতের শিল্পীরা।

দুই বাংলার ৩০০ শিল্পী সমন্বয়ে রবীন্দ্র-নজরুল উৎসব

সভায় কৌশিক বলেন, “শিল্প ও সংস্কৃতির কণ্ঠরোধ আগেও করা হয়েছে, এখনও হচ্ছে। এই শহরেই উইঙ্কল টুইঙ্কল, পশুখামার, দুঃস্বপ্নের নগরী, এমনকি আমার পরিচালনায় বঙ্কুবাবুর বন্ধু নাটকটিও কোনও অজানা কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন সময়ে এরকম কিছু না কিছু ঘটেছে। কিন্তু সে সময় যাদের সঙ্গে সমস্বরে আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম, তাদের প্রায় কাউকেই আজ আর দেখতে পেলাম না। ফোন ধরার সাহসটুকুও তাঁরা দেখালেন না।”

একই সুর অভিনেতা চন্দন সেনের গলায়। “একটা সময় ছিল যখন কিছু লোককে গণতন্ত্রে আস্থা রেখে রাস্তায় শুয়ে প্রতিবাদ করতেও দেখেছি। আজ তাঁদের কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না। কারা ছবিটা বন্ধ করলেন, সেটা স্বীকার করার মতো সাহস দেখালেন না কেউ,” বললেন তিনি।

গান শেষ আর জান শেষ তো একই কথা রাজামশাই

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত বছর কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের এক সেমিনারে, শহরে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত ব্যানার ও হোর্ডিং নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন অনীক। সেই কারণেই হয়ত ছবিটি চলতে দেওয়া হল না, এমন ধারণা অনেকেরই।

ছবি তুলে নেওয়া প্রসঙ্গে অভিনেত্রী সোহাগ সেন বলেন, “ইদানিংকালে বাঙালির সেন্স অফ হিউমার বা রসবোধ উধাও হয়ে যাচ্ছে। যে রসবোধ একটা সময়ে বঙ্গসংস্কৃতির অলঙ্কার ছিল, আজ কোথাওই তার প্রায় কোনও অস্তিত্বই চোখে পড়ে না। একটা শিক্ষিত জাতির পক্ষে এ বড় সঙ্কটের সময়।”

শব্দ যখন ছবি আঁকে

বাচিক শিল্পী সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের ধারণা, “শিল্পীরা এ শহরে আর নিরাপদ নন।”

গতকালের প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, বরুণ চন্দ, অম্বিকেশ মহাপাত্র, দেবজ্যোতি মিশ্র, সব্যসাচী চক্রবর্তী, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায় ও রাজা দাশগুপ্তর মত ব্যক্তিত্বরা। এছাড়াও ছিলেন বাদশা মৈত্র, দেবলীনা দত্ত, চান্দ্রেয়ী ঘোষ, সাহেব চট্টোপাধ্যায়, সায়নী ঘোষ, গৌরব চক্রবর্তী, মনোজ মিশিগান, অপরাজিতা ঘোষ দাস, অরিন্দল বাগচী, সুমিত সমাদ্দার ও আরও অনেকে।

Amazon Obhijaan



Like
Like Love Haha Wow Sad Angry
2

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *