ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস দিতে ‘বিদ্যাং দেহি’
কলকাতা: বিয়ের পর একটি মেয়েকে তার অবিবাহিত জীবনের অনেক অভ্যাসই ছাড়তে হয়। একটি ছেলের জীবনে বিয়ের পর তেমন কোনও হেরফের না হলেও, মেয়েটিকে রাতারাতি বদলে ফেলতে হয় অনেক কিছু। তবু এত কিছু ছেড়ে এসে গৃহবধূ হয়ে যাওয়ার পর মেয়েটির প্রাপ্তির ভাণ্ডারে খুব কিছু জমে কি? তাঁর পড়াশোনা, শিক্ষা কি আদৌ সারাজীবন কোনও কাজে আসে? তাঁর স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি ‘বিদ্যাং দেহি’র মাধ্যমে এই প্রশ্নই তুলেছেন রণজয় রায়চৌধুরী। ছবির বিভিন্ন ভূমিকায় রয়েছেন কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, মীর আফসর আলী, কৌশিক সেন ও বিদ্যুৎ দাস। গতকাল শহরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তাঁরা।
বিদ্যা (কনীনিকা) একজন প্রতিভাবান নৃত্যশিল্পী। অভির (কৌশিক) সঙ্গে বিয়ের পর বিদ্যাকে নাচ ছেড়ে দিতে হয়। সে শুধুমাত্র একজন আদর্শ গৃহবধূ হয়েই থেকে যায়। প্রয়োজনে স্বামীর কাছে প্রতিটি পাই-পয়সার হিসেবও তাকে দিতে হয়। সারাদিন সংসারিক ব্যস্ততায় তার নিজের জন্য কোনও সময় থাকে না। এই অবস্থায় তার নতুন প্রতিবেশীর (মীর) কাছে বিদ্যা খুঁজে পায় সাহসী হয়ে ওঠার মন্ত্র।
আরও পড়ুন: ‘নৈবেদ্য’ নিয়ে এলেন মেখলা
ছবি সম্পর্কে মীর জানালেন, “প্রতিবছর নারী দিবসে নানা ক্ষেত্রে কিছু বিশেষ কাজ হয়ে থাকে। আমাদের বিশ্বাস নারীদের জন্য কোনও আলাদা দিন হয় না। প্রতিটি দিনই নারী এবং পুরুষ দিবস। তবু আন্তৰ্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে এই ছবিটি তৈরি করা হয়েছে কারণ আমার মনে হয় বাইরে গিয়ে বড়-বড় কথা না বলে আমাদের বাড়িতে যারা রয়েছেন সেই স্ত্রী, বোন, মা, বৌদিদের প্রতি সঠিক যত্ন নেওয়াটা প্রয়োজন যাতে তাঁরাও স্বপ্ন দেখার অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন।” এই ছবিতে তাঁর নিজের চরিত্রেই অভিনয় করেছেন মীর।
“প্রতি বছর নারী দিবসে এরকম কিছু কাজ হয় আমরা জানি। যেগুলো আমরা হয়ত একে অন্যকে পাঠাই দেখার জন্য, দেখিও সেগুলো। কিন্তু যখন সেই একই জিনিস বাস্তবে হতে দেখি তখন সবাই চুপ করে থাকি। কারোর গায়ে মারের দাগ দেখলে এড়িয়ে যাই। এটা কেন হবে? কেন এর থেকে আমরা কাউকে বার করে আনতে পারি না? এই ছবির নাম ‘বিদ্যাং দেহি’ হওয়ার কারণই হলো আমরা বিদ্যা চাই, কিন্তু সেটাকে কাজে লাগাই কি? প্রচুর পড়াশোনা করে বা অনেক কিছু শিখে তারপর একটা মেয়ে বিয়ে করে সংসার নিয়ে এত ব্যস্ত হয়ে পড়ে যে সেই শিক্ষা তার আর কোন কাজেই লাগে না। সেইসব মেয়েদের ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস দিতে এই ছবি,” জানালেন কনীনিকা।
আরও পড়ুন: আবারও বাংলায় জনপ্রিয় হিন্দি মেগাধারাবাহিক
রণজয় জানালেন, “নারী নির্যাতনের গল্পে সবসময় একটা পিঠই দেখানো হয়। আমার তাই মনে হয়েছিল এটার উল্টো পিঠটাও দেখানো দরকার। একটা মেয়ে কেন শুধু মার খাবে? কেন তার উল্টোটা হবে না? একটা দিক যদি নির্যাতন হয়, তবে উল্টোপিঠটা যা হওয়া উচিত সেটাই এই ছবিতে দেখাব আমরা।”
৮ মার্চ টার্টল ফিল্মের ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তি পাবে ‘বিদ্যাং দেহি’।