ভবিষ্যতের ভূত মুক্তির দাবীতে পথ হাঁটলেন বিদ্বজনেরা

কলকাতা: পরিচালক অনীক দত্তর ছবি ‘ভবিষ্যতের ভূত’ মুক্তির দাবীতে আক্ষরিক অর্থে পথে নামলেন বিদ্বজনেরা। আজ দুপুরে মধুসুদন মঞ্চ প্রাঙ্গন থেকে ছবির কলাকুশলী ও শুভাকাঙ্খীদের নিয়ে মিছিল বেরোয়। মিছিলে উপস্থিত ছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অপর্ণা সেন, আজিজুল হক, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়,  বরুণ চন্দ, রাজা সেন, সোহাগ সেন, সুজয়প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, সমীর আইচ, দেবজ্যোতি মিশ্র, অভীক মুখোপাধ্যায়, পরমা বন্দোপাধ্যায়ের মত মানুষেরা। আনোয়ার শাহ রোডে তালতলার মাঠে গিয়ে শেষ হয় মিছিল।

১৫ ফেব্রুয়ারী মুক্তি পায় ভবিষ্যতের ভূত। কিন্তু ঠিক একদিনের মাথায় কলকাতার সব প্রেক্ষাগৃহ থেকে তুলে নেওয়া হয় ছবিটি। প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষ জানায়, কোনও এক ‘ওপর মহলের’ নির্দেশে ছবিটি চালাতে তারা অপারগ।

আজ মিছিল শেষে জমায়েতে অনীক বলেন, “ছবিটা শেষ হওয়ার পর যে এসব হচ্ছে তা কিন্তু নয়। শ্যুটিং শুরুর দিন থেকে সমস্যা তৈরী করা হয়েছে। এতেও যদি ছবি মুক্তি না পায় তাহলে আমাদের অন্যরকম ব্যবস্থা নিতে হবে।”

হারানো লেত্তি, হারানো লাট্টু

তালতলার মাঠে দাঁড়িয়ে অপর্ণা বলেন, “সেন্সর বোর্ড যে ছবিকে ছাড়পত্র দিয়ে দিয়েছে সেই ছবিকে আটকে রাখার কারোর কোনও অধিকার নেই। সেই অধিকার কেড়ে নেবার চেষ্টা করা হলে আমরা বারবার পথে নামব।”

ছবি মুক্তির দাবীতে শিল্পী ও কলাকুশলীদের সঙ্গে পথে নামেন সাধারণ মানুষও। ভূতের পোশাকে একদল ছেলেমেয়ে সেই মিছিলের নেতৃত্ব দেয়। তাদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। তার কোনওটায় লেখা, ‘আমাকে আমার কথা বলতে দাও’, আবার কোনটায় ‘আমরা হাঁটব দলে দলে, ছবি ফিরছে না কেন হলে?’ গোটা মিছিলে পুলিশের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।

সত্যজিৎ ও রেলভূত

মিছিলের সঙ্গে গান গাইতে গাইতে হাঁটেন দেবজ্যোতি, পরমা ও অন্যান্যরা। গলা মেলান পথচলতি মানুষও।

লাঠিতে ভর করে মিছিলে হাঁটলেন বিশিষ্ট অভিনেতা জয়ন্ত কৃপালানীও। পকেটে ভারতের সংবিধান। সেই বই তুলে ধরে জয়ন্ত বললেন, “ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী কেউ আমার বাক স্বাধীনতা বা ছবি করার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারে না। যদি করে তবে তার শাস্তি হওয়া উচিত।”

শব্দ যখন ছবি আঁকে

বরুণ চন্দ বলেন, “সমালোচনা ছাড়া দেশের উন্নতি সম্ভব নয়। তাই যে কোনওরকম সমালোচনাকে স্বাগত জানানো উচিত। স্যাটায়ার সাহিত্য, শিল্প ও সিনেমার অঙ্গ। তাকে এভাবে থামিয়ে দেওয়া যায় না।”

শহরের ইতিহাসে সম্ভবত এই প্রথম একটি ছবি মুক্তির দাবীতে পথ হাঁটলেন বিশিষ্টজনেরা।

ছবি: প্রতিবেদক

Amazon Obhijaan



Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *