খুব ভালো অভিনয়ও করতেন, বললেন তাঁর অভিনেতারা

RBN Web Desk: সেই পঞ্চাশের দশক থেকে শুরু করে ২০১৮ সাল পর্যন্ত অক্লান্তভাবে বানিয়ে গেছেন একের পর এক ছবি। সে ছবিতে কখনও উঠে এসেছে গ্রাম বাংলার চালচিত্র, আবার কখনও শোনা গেছে শহুরে মধ্যবিত্ত জীবনের রোজনামচার কথা। প্রায় ৬৩ বছরের দীর্ঘ পরিচালক জীবন অবশেষে থেমে গেল আজ। প্রয়াত হলেন সিনেমার কথাশিল্পী তরুণ মজুমদার। বাংলা ছবিকে যাঁরা অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন সেই কতিপয় পরিচালকদের মধ্যে সম্ভবত তিনিই ছিলেন শেষতম।

“এত গুণী একজন মানুষ চলে গেলেন, খুব খারাপ লাগছে,” রেডিওবাংলানেট-কে বললেন খরাজ মুখোপাধ্যায়। “গ্রাম বাংলার এত বিষয় নিয়ে কত সুন্দর ছবি করেছেন। ছোটবেলা থেকে ওঁর প্রচুর ছবি দেখেছি। তরুণবাবুর পরিচালনায় আমার প্রিয় ছবি ‘ফুলেশ্বরী’। ওঁর ‘চাঁদের বাড়ি’ ছবিতে একটা চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম আমি। পরিচালনার টেকনিক্যাল দিকগুলো দিয়ে খুব সচেতন তো ছিলেনই, খুব ভালো অভিনেতাও ছিলেন। ছবির প্রত্যেকটা চরিত্র উনি অভিনেতাদের করে দেখিয়ে দিতেন। নিজে ভালো অভিনেতা না হলে এমনটা করা যায় না। এই ক্ষতি পূরণ হবার নয়। মৃণাল সেন, সত্যজিৎ রায়, তপন সিংহদের ছবির যে উচ্চতা, তার শেষ প্রদীপ ছিলেন তরুণবাবু। সেই প্রদীপটা আজ নিভে গেল।”

আরও পড়ুন: ঘাট সংরক্ষণে সচেতনতা বাড়ুক, তথ্যচিত্রে উদ্দেশ্য দুই তরুণীর

২০০৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘আলো’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন অভিনেতা ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়। আজ সারাদিন মনখারাপ নিয়েই কেটেছে তাঁর। তিনি বললেন, “তরুণজ্যেঠুর সঙ্গে ‘আলো’ ছবিতে তো বটেই, এছাড়াও ‘রাঙা মাটির পথ’ এবং ‘ও আমার দেশের মাটি’, দুটো স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবিতে আমি অভিনয় করেছি। সময়ের থেকে এগিয়ে থাকা মানুষ ছিলেন, না হলে ২০০৪-০৫ নাগাদ যখন এরকম ছবি নিয়ে কেউ এত কথাই বলতো না, তখন উনি শর্ট ফিল্ম বানিয়েছেন।”

আরও পড়ুন: শেষের সেদিন, উপস্থিত ছিলেন শুধু মহেশ ও ড্যানি

তরুণবাবু সেই ছবির সিক্যুয়েলও বানিয়েছেন, যেটা ওই সময়ে কেউ ভাবতে পারতো না বলে জানালেন ভাস্বর। “খুব ভালো পরিচালক ছিলেন সে তো সকলেই জানেন। তবে তার চেয়েও বড় কথা, উনি খুব ভালো অভিনেতা ছিলেন। সেটে প্রত্যেক শিল্পীকে উনি নিজে অভিনয় করে দেখিয়ে দিতেন, সেটা ঋতুপর্ণাই (সেনগুপ্ত) হোক বা আমি। সেই অভিনয়টা প্রত্যেকের জন্য আলাদা-আলাদা হতো। শ্যুটিং সেটে গম্ভীর থাকলেও বাইরে খুব হাসিখুশি, ভালো মানুষ ছিলেন তরুণজ্যেঠু। এখনও মনে আছে আমাকে বলেছিলেন, তুমি যতবার চাইবে আমি দেখিয়ে দেব, কিন্তু তারপরে যেন ভুল না হয়। তখন নতুন ছিলাম তো, ভুল হলে বকুনি খেয়েছি। কিন্তু শেখাটা আজও মনে রয়ে গেছে,” বললেন ভাস্বর। 

ছবি: প্রতিবেদক ও অর্ক গোস্বামী




Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Swati

Editor of a popular Bengali web-magazine. Writer, travel freak, nature addict, music lover, foody, crazy about hill stations and a dancer by passion. Burns the midnight oil to pen her prose. Also a poetry enthusiast.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *