বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার তরুণ মজুমদার প্রয়াত
কলকাতা: চলে গেলেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার তরুণ মজুমদার। আজ সকালে এসএসকেএম হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। গত মাসে সংকটজনক অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল অবস্থার আরও অবনতি ঘটে। কিডনির সমস্যার সঙ্গে হার্ট ফেলিওরের প্রবণতা থাকায় সংক্রমণের সম্ভাবনা ছিলই। এছাড়া ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্টের সমস্যাও ছিল। মেডিকেল বোর্ডের তত্বাবধানে ক্রিটিকাল কেয়ার ইউনিটে রেখে বর্ষীয়ান পরিচালকের চিকিৎসা চলছিল। তবু শেষরক্ষা হলো না।
১৯৩১ সালে জন্ম হয় এই কিংবদন্তী পরিচালকের। বাবা বীরেন্দ্রনাথ মজুমদার ছিলেন স্বদেশী আন্দোলনের বিপ্লবী। রসায়ন নিয়ে পড়াশোনা করে প্রথমে সেন্ট পলস ক্যাথিড্রাল মিশন কলেজ ও পরে স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে স্নাতক হন তরুণবাবু। প্রথম জীবনে তিনি শচীন মুখোপাধ্যায় ও দিলীপ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যাত্রিক নাম নিয়ে পরিচালনা করেন উত্তমকুমার ও সুচিত্রা সেন অভিনীত ‘চাওয়া পাওয়া’ ছবিটি। এরপর একে-একে তাঁর একক পরিচালনায় মুক্তি পায় ‘বালিকা বধূ’, ‘শ্রীমাণ পৃথ্বীরাজ’, ‘কুহেলী’, ‘ঠগিনি’, ‘পলাতক’, ‘ফুলেশ্বরী’, ‘সংসার সীমান্তে’, ‘গণদেবতা’, ‘দাদার কীর্তি’, ‘ভালবাসা ভালবাসা’, ‘আপন আমার আপন’, ‘আলো’র মতো সুপারহিট ছবি। মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়, অয়ন বন্দোপাধ্যায়, মহুয়া রায়চৌধুরী ও তাপস পালের মতো অভিনেতাদের প্রতিভাকে তিনিই আবিষ্কার করেছিলেন। তাঁর ২০টি ছবির নায়িকা ছিলেন অভিনেত্রী সন্ধ্যা রায়।
আরও পড়ুন: সেরা পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করুক কিয়ারা, চান বরুণ
১৯৯০ সালে ভারত সরকার কর্তৃক পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হন তরুণবাবু। এর আগে বিভিন্ন ছবির জন্য পাঁচবার জাতীয় পুরষ্কার ও সাতবার বিএফজেএ পুরষ্কারে সন্মানিত হয়েছেন জনপ্রিয় এই পরিচালক। এছাড়াও তাঁর বহু ছবির জন্য অজস্র পুরষ্কার পেয়েছেন তিনি।
বাঙালির অন্যতম প্রিয় পরিচালকের মৃত্যুতে বাংলার সাংস্কৃতিক জগতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।