গোয়েন্দার ভূমিকায় অরুণিমা, হলো ছবির মহরত

কলকাতা: ১৯২৮ সালে প্রকাশিত হয় ইংরেজ ঔপন্যাসিক ডেভিড হারবার্ট লরেন্সের শেষ উপন্যাস ‘লেডি চ্যাটারলি’স লাভার’। সে যুগে তো বটেই, আজও সেই উপন্যাস একইরকম জনপ্রিয় ও বিতর্কিতও। লেডি চ্যাটারলির দুষ্টুমিষ্টি চরিত্রের ছায়াকে মাথায় রেখে বাংলায় আবির্ভাব হতে চলেছে পরিচালক সাগ্নিক (সমু)  চট্টোপাধ্যায়ের ছবি ‘লেডি চ্যাটার্জি’র, যদিও একেবারেই আলাদা কাহিনীতে। ছবিটি ক্রাইম থ্রিলার। একটি হত্যাকে ঘিরে গল্প আবর্তিত হয়। রহস্য সমাধানের জন্য লেডি চ্যাটার্জির ডাক পড়ে। ছবির নামভূমিকায় অভিনয় করবেন অরুণিমা ঘোষ। অন্যান্য চরিত্রে থাকবেন দেবাশিস মণ্ডল, শ্রীতমা দে, তথাগত বন্দোপাধ্যায়, সৌমন বসু, অলিভিয়া সরকার ও রানা বসু ঠাকুর। আজ গণেশ পুজো করে হয়ে গেল ছবির মহরত। 

লেডি চ্যাটার্জির সঙ্গে অরুণিমার মিল কতটা?

“কোনও মিল নেই” রেডিওবাংলানেট -কে বললেন অরুণিমা, “আমার চরিত্রের নাম যাজ্ঞসেনী চ্যাটার্জি। খুব অগোছালো, এলোমেলো আর ঘেঁটে যাওয়া একটা চরিত্র। লেডি চ্যাটার্জি সেই অর্থে পেশাদার গোয়েন্দা নয়। সে খুব মেজাজি আর পাগলাটে একটা মেয়ে। কথায়-কথায় রেগে যায়, নেশা করে থাকে। লোকে দেখলে বলবে, এ তো নিজেকেই সামলাতে পারে না। অর্থাৎ কোনওভাবেই তার ওপর ভরসা করা যায় না। তবে সে যখন কোনও তদন্তে নামে তখন তার মাথায় ওটাই চলতে থাকে। আমি নিজে একেবারেই এরকম নই, তাই চরিত্রটা আমার কাছে খুব চ্যালেঞ্জিং মনে হয়েছে।” 

আরও পড়ুন: শেষ যাত্রায় ব্রাত্য, পথ হেঁটেছিলেন মাত্র কয়েকজন

ছবিতে সৌমন রয়েছেন ইন্দ্র নামের একটি চরিত্রে। “ইন্দ্রের পারকিনসন আছে। খুব জটিল একটা চরিত্র। ছবির ঘটনাগুলো সবই ইন্দ্রকে কেন্দ্র করে ঘটে। আমি কোনও কাজ নেওয়ার সময় এটাই দেখি যে আমার চরিত্রটা বাদ দিলে গল্পটা এগোবে কিনা। এখানে ইন্দ্র এই গল্পের ক্ষেত্রে একটি কেন্দ্রিয় চরিত্র,” জানালেন সৌমন।

ছবিতে পুলিশের জয়েন্ট কমিশনারের চরিত্রে রয়েছেন তথাগত। তিনি জানালেন “আমার ভাগ্নির চরিত্রে অভিনয় করছে অরুণিমা। এর আগেও ওর সাহায্যে বেশ কিছু তদন্তে আমরা সাফল্য পেয়েছি। তাই আমি ওকে দিয়ে কাজগুলো করাতে চাই। ওর চরিত্রটা খুবই অগোছালো ধরণের, যা খুশি করতে পারে। কিন্তু মামার কথাটুকু ও শোনে। আমাদের দুজনের সম্পর্কটা খুব সুন্দর, এটা ফিল গুড ব্যাপার রয়েছে যেটা দর্শকের ভালো লাগবে।”



ছবির একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন শ্রীতমা। ডেপুটি পুলিশ কমিশনারের ভূমিকায় থাকবেন দেবাশিস। যাজ্ঞসেনীর বোনের চরিত্রে থাকছেন অলিভিয়া এবং থানার বড়বাবুর চরিত্রে দেখা যাবে রানাকে।

“লেডি চ্যাটার্জি খুব খারাপ একজন মেয়ে। সেই কারণেই বলা যায় আমি লেডি চ্যাটারলি চরিত্রটার নামের সঙ্গে মিল রেখেছি,” বললেন সাগ্নিক। “দুটো চরিত্র বা তাদের গল্প একেবারে আলাদা। তবে সাধারণত যেরকম দেখানো হয় যে খারাপ চরিত্রের কোনও মহৎ দিক আছে, যাজ্ঞসেনীর কিন্তু সেসব নেই। ও আপাদমস্তক খারাপ।”

আরও পড়ুন: বেহিসেবী জীবনযাপন, আজ স্মৃতির অতলে সৌমিত্র

যাজ্ঞসেনী টাকা রোজগারের জন্য করতে পারে না এমন কোনও কাজ নেই। এমনকি অর্থের বিনিময়ে সে যে কোনও অপরাধও করে ফেলতে পারে বলে জানালেন সাগ্নিক। “ওকে ঠিক রাখার জন্যই ওর মামা ওকে এই তদন্তগুলোয় টেনে আনে। কারণ ওর মাথাটা খুব পরিষ্কার। আর এগুলোয় ব্যস্ত থাকলে ওর রোজগার হয় আর কোনও খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়ার ভয়ও থাকে না। পুরনো এক বনেদি বাড়িতে একটা খুন হয়ে যায়। সেই খুন থেকে বাড়ির প্রাচীন কিছু ইতিহাস উঠে আসে যেগুলো এতকাল জানা ছিল না। খুব টানটান গল্প এটা, বললেন সাগ্নিক।”

এ মাসেই কলকাতার কোনও বনেদি বাড়িতে শুরু হবে ছবির শুটিং। পুজোর সময় মুক্তি পেতে পারে ‘লেডি চ্যাটার্জি’। 

ছবি অর্ক গোস্বামী ও স্বাতী চট্টোপাধ্যায়




Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *