‘নয়ন রহস্য’ নিয়ে চিন্তা নেই তেমন নয়: অভিজিৎ গুহ
RBN Web Desk: ‘হত্যাপুরী’ ছবির সঙ্গে ‘নয়ন রহস্য’-এর চ্যালেঞ্জের তফাৎ আছে বলেই মনে করেন অভিনেতা অভিজিৎ গুহ (Abhijit Guha)। আর কিছুদিনের মধ্যেই মুক্তি পেতে চলেছে পরিচালক সন্দীপ রায়ের (Sandip Ray) পরবর্তী ছবি। সত্যজিৎ রায়ের কাহিনি অবলম্বনে এই ছবিতে আগের মতোই থাকছেন ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত (Indraneil Sengupta), আয়ুষ দাস (Ayush Das) ও অভিজিৎ। জটায়ু হিসেবে দুই ছবির জার্নিকে আলাদাভাবে কঠিন মনে করেন অভিজিৎ।
গতবার তো জটায়ু হিসেবে প্রথম ছবি ছিল। তাই কিছুটা হলেও টেনশন ছিলই, এবারের ছবিটা ঠিক কীরকম?
“আমার মনে হয় প্রথমবার জটায়ু করে একটা অভিজ্ঞতা তৈরি হয়েছে,” বললেন অভিজিৎ। “আজ এই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে নতুন কিছু করতে গেলেই নেগেটিভিটি শুরু হয়ে যায়। শুধু ফেলুদা নয়, যে কোনও নামী বা চেনাজানা গল্প বা চরিত্র নিয়ে কাজ শুরু করতে গেলেই লোকে দেখার আগেই বাধা দেবে। আমাকে তো আবির (চট্টোপাধ্যায়) ‘হত্যাপুরী’র অনেক আগেই বলেছিল, রিলিজ়ের তিনমাস আগে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে বেরিয়ে যেও। ছবি মুক্তি পাওয়ার আগে অনেকেই অনেক কিছু বলেছিল। কিন্তু মুক্তির পর কোনও বড় পত্রিকার রিভিউ সেকশন কিন্তু খুব খারাপ লেখেনি। এমন তো নয় যে তাদের ভালো লেখার জন্য টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া আর কোথাওই ওরকম নেগেটিভ কথা আমি শুনিনি। তবে ‘হত্যাপুরী’ (Hatyapuri) উতরে গেছে বলেই ‘নয়ন রহস্য’ (Nayan Rahasya) নিয়ে চিন্তা নেই তেমন নয়।”
আরও পড়ুন: ‘নকল’ মুকুলের দাবি মেনে শিক্ষিকাদের সরিয়ে দিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়
বরং অনেক অপ্রত্যাশিত প্রশংসা পেয়েছেন তিনি জটায়ু চরিত্রের জন্য, এমনটাই দাবি করলেন অভিজিৎ। “আমার স্বল্প পরিচিত অত্যন্ত পণ্ডিত এক অধ্যাপক মানুষ নিজে ফোন করে আমাকে বলেছেন, তাঁর সবথেকে ভালো লেগেছে এটাই যে আমি জটায়ু হিসেবে কারও নকল করিনি। নিজের মতো করে চরিত্রটা সাজিয়েছি। এমন আরও অনেক চেনা-অচেনা মানুষ প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। যেখানে এত মানুষ সাহস দিচ্ছেন তাহলে সোশ্যাল মিডিয়াতে কে কী বলল সেই নিয়ে মাথা ঘামাতে যাব কেন? সবার কথা শুনতে গেলে তো কিছুই করা চলে না।”
১৯৯২ সালের ২৩ এপ্রিল যখন সত্যজিৎ রায়ের মৃত্যু সংবাদ আসে সেই সময় অভিজিৎ ছিলেন ভুবনেশ্বরে, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের (Prosenjit Chatterjee) প্রথম পরিচালনা ‘পুরুষোত্তম’ ছবির কাজে প্রধান সহকারী হিসেবে। সেদিন সেটেই এক মিনিট নীরবতা পালন করেছিলেন সকলে।
আরও পড়ুন: আবারও কানে ‘মন্থন’
“ওঁকে অনেকবার দূর থেকে দেখেছি। আমি তখন সাধারণ একজন টেকনিশিয়ন। ওঁর সামনে গিয়ে কথা বলার সুযোগ বা সাহস কোনওটাই ছিল না। পরে বাবুদার (সন্দীপ) সঙ্গে আলাপ হয়েছে। আমার নিজের পরিচালনায় সৌমিত্রবাবু (চট্টোপাধ্যায়) কাজ করেছেন। সন্তোষ দত্ত, রবি ঘোষকে সামনে থেকে দেখেছি। কত কথা হয়েছে। তখন তো জানতাম না নিজে কখনও এই চরিত্র করব। আমি তো অভিনেতাই ছিলাম না। কাজেই তাঁদের দেখে নকল করার কথা মাথাতেও আসেনি। বাবুদার শুটিংয়ের ব্যাপারে বলতে পারি খুব সহজ এবং স্বচ্ছ একজন মানুষ। আমি আমার মতো করে চরিত্রটাকে রূপ দিতে গিয়ে কখনও যদি ওঁকে বলি এখানটা এরকম করলে কেমন হয়, উনি তক্ষুণি বলবেন, করো না, যেটা মনে হচ্ছে অবশ্যই করবে। উনি শুনবেনও না কী বলছি, আগেই বলবেন, হ্যাঁ নিশ্চয়ই করবে। এরকম একজন পরিচালকের বিশ্বাস যে অর্জন করতে পেরেছি, এটাই আমার কাছে অনেকখানি পাওয়া,” বললেন অভিজিৎ।
ছবি: RBN আর্কাইভ