পরবর্তী কোন ফেলুকাহিনী পছন্দ, জানালেন টোটা
RBN Web Desk: তাঁর সবচেয়ে পছন্দের ফেলুকাহিনীতে তিনি আগেই অভিনয় করে ফেলেছেন। সন্দীপ রায় পরিচালিত ‘টিনটোরেটোর যীশু’ ছবিতে টোটা রায়চৌধুরী ছিলেন রাজশেখর নিয়োগীর চরিত্রে। ইতিমধ্যেই মুক্তি পেয়েছে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘ফেলুদা ফেরত’-এর প্রথম সিজ়ন ‘ছিন্নমস্তার অভিশাপ’। এই সিরিজ়ে সত্যজিৎ রায়ের গোয়েন্দা চরিত্র ফেলুরূপে তাঁর হাতেখড়ি হয়েছে। মুক্তির অপেক্ষায় ‘যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডুতে’।
‘টিনটোরেটোর যীশু’তে অ্যকশনভিত্তিক চরিত্রে অভিনয় করলেও ‘ছিন্নমস্তার অভিশাপ’-এ ফেলুদাকে মগজাস্ত্রের সাহায্যেই মূলত কাজ করতে হয়েছে। তিনি নিজে কোন ধরণের চরিত্রে অভিনয় করতে বেশি ভালোবাসেন? “একটু সেরিব্রাল গল্পই আমার পছন্দ,” রেডিওবাংলানেট-কে বললেন টোটা। “শুধু অ্যাকশন থাকলে গল্পের ধার থাকে না।” সুযোগ পেলে ‘দার্জিলিং জমজমাট’-এ কাজ করতে খুব ভালো লাগবে বলে জানালেন তিনি।
উল্লেখ্য, ‘দার্জিলিং জমজমাট’, ‘টিনটোরেটোর যীশু’, ‘হত্যাপুরী’, ‘কৈলাসে কেলেঙ্কারি’ ও ‘এবার কাণ্ড কেদারনাথে’ তাঁর পছন্দের তালিকায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন সৃজিত। তবে দর্শকের পছন্দ বুঝে তবেই তিনি আগামী পরিকল্পনা নেবেন।
আরও পড়ুন: জটায়ুর সাহস
ফেলুদা বলতে আজও বাঙালি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কেই চেনে। তাঁর জুতোয় পা গলানো নিয়ে টোটা বললেন, “ফেলুদা একজনই। তিনি সৌমিত্র। ‘সোনার কেল্লা’ ও ‘জয়বাবা ফেলুনাথ’কে একশো বছরেও কেউ ছুঁতে পারবে না। আমি নিজে এই দুটো ছবি চল্লিশ-পঞ্চাশবার দেখেছি। তবে অভিনয় করার সময় নিজের মতো করে করেছি।”
তবে আসল ফেলুদার প্রভাবকে অস্বীকার করছেন না তিনি। “সৃজিত বলেছিল হাঁটাচলা, কথাবার্তা আমার নিজের মতোই রাখতে। শুধু মগজাস্ত্র ব্যবহার করার সময় আসল ফেলুদার চোখটার কথা মাথায় রাখতে বলে দিয়েছিল,” জানালেন টোটা।
তবু ফেলু-পাগল বাঙালির আবেগ যে নতুন ফেলুদাকে বিনা সমালোচনায় মেনে নেবে না সে কথা তিনি খুব ভালো করেই জানেন। প্রসঙ্গ উঠতেই বললেন, “ফেলুদা তো শুধু চরিত্র নয়। ফেলুদা একটা আবেগের নাম। সে হলো সত্যজিতের অল্টারইগো। ফেলুদা একজন আন্তর্জাতিক বাঙালি। সে পাশের বাড়ির চেনা মানুষের মতো হলেও তার হাবভাবে সাহেবিয়ানা রয়েছে। ইলাস্ট্রেশনগুলো দেখলেই বোঝা যাবে ফেলুদার হাঁটাচলা, তাকানো সবই ভীষণ স্মার্ট। সেই সময় কটা বাঙালি বেড়াতে গিয়ে কোট আর স্কার্ফ পরতো? সত্তরের দশকে যখন ফেলুদা লেখা হচ্ছে তখনও সে সময়ের থেকে অনেকটা এগিয়ে। তখন বাঙালি বেড়াতে গেলে সোয়েটার আর মাঙ্কি ক্যাপ পরতেই অভ্যস্ত ছিল, যেটা সত্যজিৎ অন্য চরিত্রদের পরিয়েছেন। ফেলুদার বাঙালিয়ানা নিয়ে যতটা হইচই হয়, তার মধ্যে সাহেবিয়ানাও ঠিক ততটাই ছিল। সত্যজিৎ নিজে ভীষণ ডিসিপ্লিনড ছিলেন, আর ফেলুদাও তাই। যেটা বাঙালির অভিধানে কোনওকালেই নেই। স্রষ্টা নিজে যাকে এঁকেছেন, আমাকে তো তার মতোই হয়ে উঠতে হবে। ওই সময়ে কটা বাঙালি মার্শাল আর্টের খোঁজ রাখত? কাজেই আমার মনে হয়েছে বইয়ের পাতায় যে মানুষটার কথা রয়েছে, তাকে আগে জানা দরকার।”
ছবি: গার্গী মজুমদার