অর্ঘ্যদীপের প্রেমের ছবিতে তনুশ্রী, ঈশান
RBN Web Desk: জীবনে এমন পরিস্থিতিও আসে যখন মানুষ একা হয়ে যায়। জীবনের আঁকাবাঁকা চোরাগলিতে চলতে গিয়ে পথ হারিয়ে হয়তো বা কোনও অন্ধকার কানাগলিতে গিয়ে পড়তে হয় তাকে। তবে হারিয়ে যাওয়ার, হেরে যাওয়ার সেই হতাশা কাটিয়ে আবার জীবনের মূল রাস্তায় ফিরতে একটা ক্ষীণ আলোর রেখাই যথেষ্ট। তবু চাইলেই ভরসা করা যায় কি সবসময়? আলোয় ফেরা কি সত্যি সহজ? এমনই এক জটিল পরিস্থিতে ভালোবাসার ছবি ‘চিরসখা হে’ নিয়ে আসছেন অর্ঘ্যদীপ চট্টোপাধ্যায়। অভিনয়ে রয়েছেন তনুশ্রী চক্রবর্তী, ঈশান মজুমদার, মিঠু চক্রবর্তী ও বরুণ চন্দ। সম্প্রতি দক্ষিণ কলকাতায় ছবির ট্রেলার মুক্তি অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন তাঁরা।
ঈশান (ঈশান) ও তিলোত্তমাকে (তনুশ্রী) ঘিরে গড়ে উঠেছে ‘চিরসখা হে’। ঈশান একজন ফ্রিল্যান্স ফটোগ্রাফার। সে একজন চিত্রশিল্পীও। বনেদি পরিবারের ছেলে ঈশান মা আর জ্যেঠুর সঙ্গে কলকাতা ছেড়ে উত্তরবঙ্গের পাহাড়ে থাকে। তিলোত্তমার স্বামী মারা গেছে সাত বছর আগে। তার জীবনে রয়েছে এক মর্মান্তিক সত্য। অতীতকে মেনে নিয়ে সে একাকীত্বের জীবন বেছে নিয়েছে। তার এই কুয়াশাময় জীবনের মধ্যেই একদিন শীতের মিষ্টি রোদের মতো এসে হাজির হয় ঈশান। স্বভাব-কঠিন তিলোত্তমা কি নিজের পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করে ঈশানের হাত ধরতে পারবে?
আরও পড়ুন: প্রেমে-অপ্রেমে জুটি বাঁধছেন ঋতুপর্ণা ও ইন্দ্রনীল
“তিলোত্তমা খুব স্পষ্টবক্তা,” রেডিওবাংলানেট-কে বললেন তনুশ্রী। “তবে সে কোনওভাবেই কোথাও ইমোশনালি জড়িয়ে পড়তে চায় না। তার চরিত্রের মধ্যে একটা ধোঁয়াশা রয়েছে। সেটা ছবির গল্পটা এগোনোর সঙ্গে-সঙ্গে বোঝা যাবে। আমি বরাবরই পরপর দুটো ছবিতে আলাদা কিছু করার চেষ্টায় থাকি। সেরকম চরিত্রের খোঁজেও থাকি। দর্শক যাতে আমার থেকে অন্যরকম কিছু পায়, আমার দিক থেকে সেটার একটা চেষ্টা থাকে। তিলোত্তমার চরিত্রে সেই ব্যাপারটা ছিল, লুকটাও আমার বেশ পছন্দ হয়েছিল। আশা করব দর্শকেরও ভালো লাগবে।”
তনুশ্রীর বিপরীতে এই প্রথম নায়কের ভূমিকায় দেখা যাবে ঈশানকে। নিজের অভিনীত চরিত্র সম্পর্কে তিনি জানালেন, “ফটোগ্রাফার ছাড়াও ঈশান একজন শিল্পী। বাবা না থাকায় সে জ্যেঠুর কাছে মানুষ। একটু বোহেমিয়ান জীবন বলতে যা বোঝায় ঈশান তেমনভাবেই থাকতে ভালোবাসে। তবে সে খুব পরোপকারী।”
আরও পড়ুন: সৌরভের ভূমিকায় রণবীর
ছবিতে তাঁর লুক একসময় অর্ঘ্যদীপের নিজের লুক ছিল বলে জানালেন ঈশান। “তনুশ্রীর মতো সহশিল্পী খুব কম পাওয়া যায়। ওর সঙ্গে এর আগে ‘মায়া’ ছবিতে স্ক্রিন শেয়ার করেছি। সেটা এখনও মুক্তি পায়নি। তবে সেটা এরকম রোমান্টিক ধরণের চরিত্র ছিল না। আমারই শুরুতে একটু অস্বস্তি হচ্ছিল নিজেকে নিয়ে। তনুশ্রী আমার সেই অস্বস্তি কাটিয়ে দিয়েছিল। অত বড় একজন নায়িকার সঙ্গে কাজ করছি এটা ও কোথাও বুঝতে দেয়নি,” জানালেন তিনি।
মূলত থ্রিলার গোত্রীয় ছবি করে থাকেন অর্ঘ্যদীপ। এই প্রথম তিনি ভালোবাসার ছবি বানালেন। এই প্রসঙ্গে তিনি জানালেন, “আমি এতদিন যে ক’টা ছবি করেছি সব ক’টাই থ্রিলার ছিল। কারণ আমি ওটা বানাতে ভালোবাসি। তবু একটা সময়, যখন লকডাউন এল, তখন মনে হলো কাছের মানুষকে আমরা সকলেই পাশে চাইছি। সকলের মধ্যে একটা ইমোশনাল চাহিদা তৈরি হয়েছিল। সেই জায়গা থেকে এই ভালোবাসার গল্পটা লিখেছিলাম। অন্য ধরণের ছবি হিসেবে ‘চিরসখা হে’ আমার কাছে চ্যালেঞ্জও ছিল। মনে হয়েছিল এবার একটা প্রেমের ছবি করব, যেটা স্থানকাল ভেদে একটা চিরাচরিত ভালোবাসার গল্প বলবে।”
ছবির চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন অভীক রায় ও সুজয়নীল বন্দোপাধ্যায়। চিত্রগ্রহণ করেছেন শুভদীপ নস্কর। সম্পাদনায় আছেন অনির্বাণ মাইতি। সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন সৌম্য ঋত।
১০ মার্চ মুক্তি পেতে চলেছে ‘চিরসখা হে’।