‘আমি তো আছি’, বলেছিলেন সৌমিত্রজ্যেঠু: সুদীপ্তা
RBN Web Desk: গত বছর ১৫ নভেম্বর দিনটার কথা ভুলতে পারবেন না সুদীপ্তা চক্রবর্তী। সেই দিনই বাঙালি দর্শককূলকে কাঁদিয়ে চলে যান কিংবদন্তী অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। সম্প্রতি কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সৌমিত্রর স্মরণে একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুদীপ্তা। যেদিন তিনি মারা যান, সেদিন কোভিড আক্রান্ত হয়ে একটা ঘরে বন্দী ছিলেন সুদীপ্তা। “বারবার মনে পড়ছিল জ্যেঠুর সঙ্গে শেষ কবে দেখা হয়েছে, বা কী কথা হয়েছে। ২০১৮-এর নভেম্বরে আমি ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’র শুটিং করতে বোলপুর গিয়েছিলাম। সৌমিত্রজ্যেঠুরাও তখন বোলপুরে, ‘বেলাশুরু’ ছবির শুটিংয়ে। আমার বাবা (বিপ্লবকেতন চক্রবর্তী) মারা যাওয়ার ঠিক তিনদিনের মাথায় আমি শুটিং শুরু করি। জ্যেঠু কলকাতায় খবর পেয়েছিলেন যে বাবা আর নেই কিন্তু আমার সঙ্গে দেখা হয়নি। একদিন শুটিংয়ের পর আমি জ্যেঠুর সঙ্গে দেখা করতে যাই। তিনি নিস্পলকভাবে তাকিয়ে আমার মাথায় হাত দিয়ে বললেন, ‘আমি তো আছি’। আসলে এমন একটা পরিবারে আমার জন্ম যে আমি কিছু বিখ্যাত মানুষকে জ্যেঠু, কাকুর পরিচয়ে চিনতাম। তাই মাঝেমধ্যে বুঝতে পারতাম না কাকে বেশি ভালোবাসব, অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে নাকি আমার সৌমিত্রজ্যেঠুকে,” বললেন সুদীপ্তা।
২০১৭ সালে অতনু ঘোষের ‘ময়ূরাক্ষী’ ছবিতে একসঙ্গে অভিনয় করেছিলেন সৌমিত্র, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ও সুদীপ্তা। “লোকজন মজা করে বলত, আমি নাকি স্যান্ডউইচ ছবির শুটিংয়ে যাচ্ছি। একদিকে সৌমিত্রজ্যেঠু অন্যদিকে বুম্বাদা (প্রসেনজিৎ)। শুটিংয়ে আমরা নিজেরাই কলটাইম ঠিক করে নিতাম। জ্যেঠু সেটে কখন ঢুকছেন সেটা বুম্বাদা অতনুদার থেকে জেনে নিতেন। জ্যেঠু দুপুর বারোটায় এলে বুম্বাদা আসতেন এগারোটায়। আমি যেতাম সাড়ে নটায়। সৌমিত্রজ্যেঠুর আসার আগে আমরা শুটিংয়ের জন্য তৈরি হয়ে থাকতাম। জ্যেঠুর শরীরটা তখন খারাপের দিকে যাচ্ছে। উনি চার-পাঁচ ঘন্টার বেশি কাজ করতে পারতেন না।”
আরও পড়ুন: ২০ দিনে ₹১.৮৭ কোটি আয়, কেক কাটল টিম ফেলুদা
সুদীপ্তা জানালেন যে শেষ বয়সে মৃত্যু সংক্রান্ত অনেক কথা বলতেন সৌমিত্র। “টেলিভিশন, খবরের কাগজে লক্ষ্য করতাম জ্যেঠু মৃত্যু নিয়ে প্রচুর কথা বলছেন। হয়ত ওঁর সমবয়সী এমনকি বয়সে ছোটরাও একে-একে চলে যাচ্ছিল বলেই মৃত্যু যে অবশ্যম্ভাবী, এটা তিনি বুঝতে শুরু করেছিলেন।”
ছবি: অর্ক গোস্বামী