‘শ্লীলতাহানির পরে’র লড়াই, মুক্তি পেল ট্রেলার
কলকাতা: প্রতিদিন সকালে কাগজ খুললেই যে খবরটা প্রায় নিয়মিত চোখে পড়ে তা হলো শ্লীলতাহানি কিংবা ধর্ষণ ও তাই নিয়ে নানা মুনির নানা মত। সারা পৃথিবীতে হওয়া অপরাধের থেকেও সম্ভবত বেশি সংখ্যক শ্লীলতাহানি হয় এ দেশের মেয়েদের। এই নিয়েই সম্প্রতি মুক্তি পেল মল্লিকা সেনগুপ্তর উপন্যাস অবলম্বনে পরিচালক রেশমি মিত্রর ছবি ‘শ্লীলতাহানির পরে’র ট্রেলার ও সঙ্গীত। এই ছবির বিভিন্ন ভূমিকায় রয়েছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, অভিষেক চট্টোপাধ্যায়, শ্রীলা মজুমদার, দেবলীনা কুমার, রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়, মৌবনী সরকার, ঈশান মজুমদার ও শুভম।
ছবির ঘটনা একটি মেয়ের শ্লীলতাহানিকে কেন্দ্র করে। রিকি (দেবলীনা) নামের এই মেয়েটির শ্লীলতাহানি হয় এমন একজনের হাতে যার স্ত্রী সক্রিয় রাজনৈতিক নেত্রী। তিনি তাঁর আদর্শের জায়গা থেকে স্বামীর কাজের প্রতিবাদ করেন, ফলে তাঁকেও মানসিকভাবে শ্লীলতাহানির শিকার হতে হয় দিনের পর দিন। সেখান থেকে লাগাতার লড়াই চালিয়ে রিকি ও তার বন্ধুদের সসম্মানে বেরিয়ে আসার কাহিনী থাকবে ছবিতে।
আরও পড়ুন: তিন মূর্তি ও পায়ের তলায় সরষে
ছবির বিষয় সম্পর্কে রেশমি জানালেন, “এই মুহূর্তে চারপাশে যেসব ঘটনা ঘটছে তাতে বোঝা যাচ্ছে দু’বছরের বাচ্চা থেকে বয়স্ক মহিলা কেউই এখন আর নিরাপদ নয়। তাই একটা সচেতনতা গড়ে তোলা জরুরী। মল্লিকাদির এই উপন্যাসটা একটা সত্য ঘটনার ওপর লেখা, যেখানে দেখানো হয়েছে শ্লীলতাহানির পরে কীভাবে সেই অবস্থাটা থেকে বেরিয়ে এসে আবার জীবনের মূলস্রোতে ফেরা যায়। এই সময় আমার মনে হয় এই ধরণের সামাজিক সচেতনতামূলক ছবি আরো হওয়া দরকার।”
ছবিতে এক আইনজীবী ও একটি ব্যান্ডের সদস্যের ভূমিকায় দেখা যাবে ঈশানকে। “রাহুলের অভিনীত চরিত্রটি, রিকি ও আরও কয়েকজন বন্ধুদের নিয়ে এই ব্যান্ড,” জানালেন ঈশান। “নিজেদের কাজের বাইরে এই ব্যান্ডটা আমাদের সকলের একটা ভালো লাগার জায়গা। এর মধ্যে রিকির সঙ্গে একটা ঘটনা ঘটে, সেখান থেকে বেরোবার জন্য আমরা সবাই ওর পাশে থাকি। খুব ভালো লেগেছে সৌমিত্রজেঠুর সঙ্গে কাজ করে। রাহুল ও দেবলীনার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাও খুব ভালো।”
আরও পড়ুন: পাকদণ্ডীর পথে পথে দেওরিয়াতাল
ছবির অন্যতম মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন দেবলীনা। তিনি জানালেন, “শ্লীলতাহানির ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময়ই অপরাধীর চেয়ে বেশি যে সেই অপরাধের শিকার, তাকেই দাগিয়ে দেওয়া হয়। সেই আঘাতের জায়গাটা থেকে উঠে দাঁড়াবার ঘটনা নিয়েই এই ছবি। বিষয়টা আমার খুব পছন্দ হয়েছিল। আর রেশমির সাহায্য ছাড়া এত কঠিন একটা চরিত্র আমি করতে পারতাম না। সেটে ও সবাইকে খুব স্বাধীনতা দেয়।”
মন্দিরার চরিত্রে থাকা শ্রীলা মনে করেন একেবারে ঠিক সময়ে আসতে চলেছে ‘শ্লীলতাহানির পরে’। “শুধু বক্স অফিস দিয়ে এখন আর ছবি হয় না,” বললেন শ্রীলা। “তাই ছবির কাস্টিং খুব গুরুত্বপূর্ণ। আজ দীপিকা পাড়ুকোনের মতো গ্ল্যামারাস নায়িকাও ‘ছপক’ করছেন। মানে সকলেই বুঝছেন, যে যার জায়গা থেকে এই নিয়ে একটা বক্তব্য রাখা দরকার। আজও সমাজে মেয়েদের অবস্থান যা তার জন্য লড়াইটাও মেয়েদেরই করতে হবে। নাহলে অবস্থা আরও খারাপ হবে।”
ছবিতে সঙ্গীতের দায়িত্বে রয়েছেন গৌতম সুস্মিত। একটি বিশেষ চরিত্রে দেখা যাবে জ্যোতিষ তপন শাস্ত্রীকে।
মার্চে মুক্তি পেতে চলেছে ‘শ্লীলতাহানির পরে’।