বাবা-মেয়ের ইগোর লড়াইয়ে তুহিনা, শান্তিলাল
RBN Web Desk: রক্তের সম্পর্কের মধ্যে যেমন আকর্ষণ থাকে, তেমন কখনও-কখনও বিকর্ষণও জন্মায়। সে বিকর্ষণ স্বভাবজনিত হতে পারে, বা পরিস্থিতিজনিত। তবে সেই প্রবল বিকর্ষণেও থেকে যায় আত্মিক যোগাযোগ, থাকে জোরের জায়গা। রক্তের সম্পর্কের দূরত্বকে বিষয় করে তাঁর দ্বিতীয় ছবি ‘অপরাজিতা’ করতে চলেছেন পরিচালক রোহন সেন। অভিনয়ে রয়েছেন তুহিনা দাস, শান্তিলাল মুখোপাধ্যায়, দেবতনু, রানা বসু ঠাকুর ও অমৃতা দে। সম্প্রতি কলকাতায় শুরু হয়েছে ছবির শুটিং।
ছবির কাহিনী অপরাজিতা নামের একটি মেয়েকে ঘিরে আবর্তিত। অপরাজিতা কর্পোরেট চাকুরে। তবে পেশাগতভাবে সফল হলেও তার ব্যক্তিগত জীবন যথেষ্ট জটিল। একই বাড়িতে সে তার বাবার সঙ্গে থাকলেও কেউ কারও সঙ্গে কথা বলে না। কোনও এক অজানা কারণে বাবা-মেয়ের ইগোর লড়াইয়ে কেউই এই দূরত্বের প্রাচীর ভেঙে এগিয়ে আসতে পারে না। শুধুমাত্র একটি ডায়রির মাধ্যমে দুজনের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষিত হয়। অপরাজিতা সকালে অফিস বেরোনোর সময় ডায়রিতে প্রতিদিনের করণীয় নানা গেরস্থালি দায়িত্বের কথা লিখে রেখে যায়। আবার রাতে ফিরে এসে সে ডায়েরি দেখে জানতে পারে সারাদিনের দায়িত্ব নিয়ে তার বাবার বক্তব্য। মেয়ে বা বাবা কেউই প্রায় একে অপরের মুখ দেখে না। মেয়ে যখন সকালে বাড়ি থেকে বেরোয় তখন বাবা থাকেন গভীর ঘুমে আবার রাতে সে যখন ফেরে তখনও তিনি শুয়ে পড়েন। ফলে তাদের মুখোমুখি হওয়ার সুযোগও খুব একটা আসে না।
আরও পড়ুন: মৃণাল সেনের টেলিভিশন সিরিজ় এবার ইন্টারনেটে
অপরাজিতার কাছের মানুষ যারা, সেই প্রবাসী দিদি বা তার বয়ফ্রেন্ড সাহেব, কেউই এই জটিল সম্পর্কের জট খুলতে পারে না। কিন্তু কেন এই দূরত্ব? কোনওদিন কি অপরাজিতা ও তার বাবার সম্পর্ক সহজ হবে না? জটিল ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিষয় নিয়েই রোহন তাঁর নতুন ছবিতে হাত দিয়েছেন।
মাত্র উনিশ বছর বয়সে তাঁর প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি ‘এভাবেই গল্প হোক’ পরিচালনা করেন রোহন। দ্বিতীয় ছবির কাহিনী প্রসঙ্গে তিনি রেডিওবাংলানেট-কে জানালেন, “বাবা-মেয়ের সম্পর্কটা আসলে খুব আন্তরিক তো। সাধারণত মেয়েদের জীবনে বাবার একটা বিরাট ভূমিকা থাকে। কিন্তু এখানে দুজনের সম্পর্কের দূরত্বটাই ছবির মূল বিষয়। এমন নয় যে তারা একে অন্যকে ভালোবাসে না বা একে অন্যের সম্পর্কে উদাসীন। তবু কী এমন ইগো দুজনের সম্পর্কে কাজ করে আর তা শেষ পর্যন্ত সম্পর্কটাকে কোথায় নিয়ে যায়, সেই নিয়েই আমার এই ছবি। গল্পটা এই প্রজন্মের জন্য খুব প্রাসঙ্গিক।”
ছবিতে চিত্রগ্রহণের দায়িত্বে রয়েছেন রিপন হোসেন, সম্পাদনায় থাকবেন সায়ন্তন নাগ। সঙ্গীতের দায়িত্বে রয়েছেন কৃষ্ণেন্দু আচার্য।
আগস্টে ছবির কাজ শেষ হওয়ার পর কয়েকটি চলচ্চিত্র উৎসব পরিক্রমা করে পুজোর আগে ছবিটি মুক্তির পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানালেন রোহন।