ছয় দফা দাবী নিয়ে পথে নামল কালচারাল কনফেডারেশন
কলকাতা: বাংলা চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির জন্য ছয় দফা দাবী নিয়ে পথে নামল নবগঠিত ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচার অ্যান্ড কালচারাল কনফেডারেশন। সংগঠনের পক্ষ থেকে গতকাল টালিগঞ্জে উত্তমকুমারের মূর্তির পাদদেশ থেকে দাসানি স্টুডিও পর্যন্ত এক পদযাত্রার আয়োজন করা হয়। পদযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন জর্জ বেকার, দেবিকা মুখোপাধ্যায়, রাহুল বর্মণ, রণদীপ সরকারের মত শিল্পী, পরিচালক ও কলাকুশলীরা।
কনফেডারেশনের সভাপতি ফ্যাশন ডিজ়াইনার অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, “বর্তমানে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির ভয়াল অবস্থা। আজ আমরা এই ইন্ডাস্ট্রিতে দীর্ঘদিন ধরে ঘটতে থাকা দুর্নীতির প্রতিবাদ জানাতে একত্রিত হয়েছি। আমি নিজে সেন্সর বোর্ডের সদস্য। আমরা বহু ভালো বাংলা ছবি দেখি যেগুলো কোনও অজ্ঞাত কারণে মুক্তি পায় না। যারা কাজ পাচ্ছেন, তারাও ঠিক সময়ে পারিশ্রমিক পাচ্ছেন না।”
অগ্নিমিত্রার দাবী যে কিছুদিন আগে তাদের সংগঠন তৈরি হওয়ার পরেই টেকনিশয়ন ও অভিনেতা-অভিনেত্রীরা তাঁদের বকেয়া পারিশ্রমিক পেয়েছেন।
যে জন থাকে মাঝখানে
কনফেডারেশনের ছয় দফা দাবীর মধ্যে ছিল কলাকুশলীদের বকেয়া টাকা অবিলম্বে প্রদান করতে হবে, জোর করে কোনও প্রোডাকশনে টেকনিশয়ন নিতে বাধ্য করা যাবে না, প্রযোজকদের সুরক্ষা নিশ্চিৎ করতে হবে, বিনা কারণে শ্যুটিং বন্ধ করা যাবে না, পরিচালকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার অধিকার দিতে হবে, জোর করে কোনও রাজনৈতিক দলের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করা যাবে না ও রাজ্যের বিভিন্ন মাল্টিপ্লেক্সে বাংলা ছবির প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করতে হবে।
কনফেডারেশনের সহসভাপতি সংঘমিত্রা চৌধুরী অভিযোগ করেন, “বর্তমান বাংলা চলচ্চিত্র জগৎ প্রায় মৃত। বহু টেকনিশিয়ন কর্মহীন। যারা কাজ পাচ্ছে তারা একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় লালিত। এই অরাজকতা আমরা কিছুতেই মানতে পারব না। প্রায় এক লাখ মানুষ বর্তমানে কর্মহীন। আমরা সেই সব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে নেমেছি। কর্মহীন মানুষদের টেকনিশিয়ন কার্ড দেওয়া হবে যাতে সবাই কাজ পায়।”
শব্দ যখন ছবি আঁকে
দেবিকা বলেন, “শিল্পীদের ওপরে কোনও রাজনৈতিক রং লাগানো যাবে না। তাঁদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। আমরা যখন কাজ করেছি তখন আমাদের এই ধরণের কোনও রাজনৈতিক দলের মুখাপেক্ষী হতে হয়নি। সেটাই এখন চলছে যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”
ইন্ডাস্ট্রিতে একটি বিশেষ সংগঠনের সদস্য না হলে কাজ পাওয়া যায় না, এমনটাই অভিযোগ করলেন জর্জ বেকার। “সম্প্রতি অশোক ধানুকার মত প্রযোজককেও লন্ডন থেকে ফিরে আসতে হয় শুধুমাত্র নুন্যতম সংখ্যক টেকনিশয়ন নিয়ে যাননি বলে। এমনটা চলতে দেওয়া যায় না,” বললেন রাহুল বর্মণ।
“এই ধরণের নৈরাজ্য চলতে থাকলে আমার মত নতুন পরিচালকদের কেরিয়ারে প্রভাব পড়বে। কোন ছবি করতে কতজন লোক লাগবে বা কোথায় শ্যুটিং হবে সেটা নির্ধারণ করবেন পরিচালক বা সেই কাজের সঙ্গে যুক্ত মানুষ। কোনও তৃতীয় পক্ষ সেটা ঠিক করে দিতে পারে না,” বললেন রণদীপ।
ছবি: প্রতিবেদক