ডাক্তারদের কুর্নিশ, পাভেলের ছবিতে পিতা-পুত্র প্রসেনজিৎ-ঋদ্ধি

কলকাতা: গত দু’বছর ধরে যে ভয়ঙ্কর ভাইরাসের বিরুদ্ধে সারা পৃথিবী লড়ে চলেছে তার প্রথম সারিতে শুরু থেকেই রয়েছেন ডাক্তাররা। দিনরাত এক করে অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে এই পরিস্থিতি তাঁরা যেভাবে মোকাবিলা করেছেন তার কোনও তুলনা হয় না। তবু ডাক্তারদের নামে মাঝেমধ্যেই উঠে আসে নানা অভিযোগ, শোনা যায় সমালোচনাও। তবু একটা সময় ছিল যখন ডাক্তাররা সত্যিই পরিবারের অংশ হয়ে উঠতেন। প্রায় প্রতিটি পরিবারের নিজস্ব হাউজ ফিজ়িশিয়নরূপে থাকতেন পাড়ার কোনও প্রবীণ ডাক্তার। এই বিষয়ের ওপর ভিত্তি করেই পরিচালক পাভেল তৈরি করতে চলেছেন তাঁর আগামী ছবি ‘ডাক্তারকাকু’। ছবির নামভূমিকায় থাকছেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। অন্যান্য চরিত্রে রয়েছেন ঋদ্ধি সেন ও এনা সাহা। গতকাল শহরে এক ঘরোয়া অনুষ্ঠানে হয়ে গেল ছবির মহরৎ।

অনেকের মতে চিকিৎসা ব্যবস্থা আজকাল এক বৃহৎ ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। তবু একটা সময় ডাক্তারদের মধ্যে দিয়ে মানুষ ঈশ্বরকে প্রত্যক্ষ করতেন। তাঁদের চেম্বারগুলো এখনকার মত ঝাঁ চকচকে না হলেও, চিকিৎসায় থাকত এক অন্যরকম আন্তরিকতা। ‘ডাক্তারকাকু’সেই হারিয়ে যাওয়া হাউজ ফিজি়শিয়নদের গল্পই বলবে। 

আরও পড়ুন: নব্বইয়ের ‘সত্যান্বেষী’, বাদ পড়লেন ব্যোমকেশ

“নিজের পরোয়া না করে মানুষের সেবায় জীবন কাটানো সাধারণ মধ্যবিত্ত সেই সব ডাক্তারদের নিয়ে এই ছবি। এই ডাক্তারকাকু ডাকটাই সেইসব চিকিৎসকদের খুব কাছের মানুষ করে তুলত,” বললেন পাভেল। প্রসেনজিতের সঙ্গে প্রথমবার কাজ করা নিয়ে উচ্ছ্বসিত তিনি। “আমার আর বুম্বাদার এটা প্রথম কাজ। যদিও ‘অসুর’-এ ভয়েসওভারটা বুম্বাদা করেছিল। তবে একসঙ্গে ছবি বলতে এটাই প্রথম। আর সেটা এরকম একটা বিষয় নিয়ে হচ্ছে বলে আমি খুবই এক্সাইটেড। বুম্বাদার সঙ্গে কাজ করতে গেলে একটা ‘ডাক্তারকাকু’র মতো চিত্রনাট্য লাগে,” বললেন ‘রসগোল্লা’র পরিচালক। 

আরও পড়ুন: শেষের সেদিন, উপস্থিত ছিলেন শুধু মহেশ ও ড্যানি

পাভেলের সব ছবিই তিনি দেখেছেন বলে জানালেন প্রসেনজিৎ। ‘ডাক্তারকাকু’ গত বছরেই হওয়ার কথা থাকলেও নানা সমস্যায় কাজটা শুরু করা যায়নি। অবশেষে সেটা শুরু হতে চলেছে বলে তিনি খুশি। “চিকিৎসকদের নিয়ে সারা পৃথিবীতে নানারকম আলোচনা ও সমালোচনা হয়। কিন্তু গত দু’বছরে চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সকলেই নিজেদের জীবন বিপন্ন করে মানুষের পাশে থেকেছেন। যেভাবে আমরা ঈশ্বরকে ডাকি, সেই জায়গায় আমরা ডাক্তারদেরও রাখি। ডাক্তারকাকুর চরিত্রটা খুব যত্ন করে লিখেছে পাভেল। আগে একটা সময় যে ডাক্তাররা ভালোবেসে, যত্ন করে চিকিৎসা করতেন, এটা তাঁদের গল্প। তাছাড়া ঋদ্ধির সঙ্গে প্রথমবার কাজ করাও একটা বড় পাওনা,” জানালেন প্রসেনজিৎ।




এর আগে বহুবার পাভেলের সঙ্গে নানা কাহিনী নিয়ে কথা হলেও কাজগুলো আর শুরু হয়নি বলে জানালেন ঋদ্ধি। “তবে ‘ডাক্তারকাকু’র চিত্রনাট্যটা নিয়ে কাজ হোক এটা বরাবরই চেয়ে এসেছি। চিকিৎসকরা হলেন আমাদের সমাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ। তাঁদেরই ট্রিবিউট দেবে এই ছবি। বুম্বাকাকু আমার বাবার চরিত্রে থাকছেন। সেটা আমার কাছে বিশাল একটা ব্যাপার। এর আগে অনেকবার কথা হলেও কখনওই একসঙ্গে কাজ করা হয়ে ওঠেনি। প্রথমবার একসঙ্গে পিতা-পুত্রের চরিত্রে কাজ করব আমরা। এই সুযোগটা করে দেবার জন্য পাভেলদাকে ধন্যবাদ,” বললেন ঋদ্ধি। 

১ জুলাই, পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও বিশিষ্ট চিকিৎসক বিধানচন্দ্র রায়ের জন্ম ও মৃত্যুদিনে মুক্তি পাবে ‘ডাক্তারকাকু’।



Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *