নোবেলের তৃতীয় স্থান পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ বাংলাদেশে
RBN Web Desk: গত সপ্তাহেই শেষ হয়েছে সঙ্গীতভিত্তিক জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো ‘সারেগামাপা’। ২৮ জুলাই ছিল এই অনুষ্ঠানের ফাইনাল। ২০১৯-এর ‘সারেগামাপা’ সেরার শিরোপা পেয়েছে গোবরডাঙার অঙ্কিতা ভট্টাচার্য। যুগ্মভাবে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছেন কলকাতার গৌরব সরকার ও উত্তর দিনাজপুরের স্নিগ্ধজিৎ ভৌমিক। একইভাবে যুগ্মভাবে তৃতীয় স্থান পেয়েছেন নৈহাটির প্রীতম রায় ও বাংলাদেশের মইনুল আহসান নোবেল।
তবে নোবেলের তৃতীয় স্থান পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের দর্শকদের একাংশ। অনেকেই বিচারকদের সিদ্ধান্তকে মানতে নারাজ। সোশ্যাল মিডিয়াতে এই বিষয়ে একাধিক অভিযোগ এসেছে বাংলাদেশী দর্শকদের পক্ষ থেকে। একজন শ্রোতা লিখেছেন, “সবাই হিন্দি গানে মগ্ন ছিল, তুমি (নোবেল) বাংলা গান করে দেশকে খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরলে। তোমাকে স্যালুট জানাই। কয়জনই বা পেরেছিল, সবাই তো জেতার তাগিতে লড়াইয়ে নেমেছিল। নোবেলকে কখনও ডেঞ্জার সিটে বসতে হয়নি। তাই তুমি নোবেল, বাংলাদেশের নোবেল।”
বহু বাংলাদেশী শ্রোতার মতে নোবেল যেহেতু ভারতীয় নন, তাই তিনি যোগ্য বিজয়ী হওয়া সত্বেও তাঁকে তৃতীয় স্থান দেওয়া হয়েছে। কেউ আবার বলছেন, প্রতিযোগিতার শুরু থেকে শেষ অবধি প্রায় প্রতিদিন নোবেল বিচারকদের কাছে প্রশংসা পেয়েছেন, তাহলে কেন তাঁকে বিজয়ী ঘোষণা করা হল না।
একশোরও বেশি ছবিতে অভিনয়, এই প্রথম একক গানে লিপ বিশ্বনাথের
শুধুমাত্র বাংলাদেশের শ্রোতাদের ধরে রাখবার কারণেই নোবেলকে রেখে দেওয়া হয়েছে, এমন অভিযোগও আগে উঠেছে বেশ কয়েকবার। নোবেল যতই ভালো গান না কেন, আসলে ভারতীয়দেরকেই বিজয়ী করবেন বিচারকরা, অভিযোগ তাঁদের। প্রসঙ্গত বলা যায় ‘সারেগামাপা’ প্রতিযোগিতার বিচারব্যবস্থা এর আগেও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
ফাইনালের পরের দিন বহু নোবেলভক্ত সোশ্যাল মিডিয়াতে পোস্ট দিয়েছেন, “বিচারকরা ইচ্ছে করে নোবেলকে হারিয়ে দিয়েছেন।”
‘গুমনামী’র সম্ভাব্য মুক্তির তারিখ জানালেন সৃজিত
তবে বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর দৈনিক সংবাদপত্র ‘প্রথম আলো’তে কিছু অন্যরকম মন্তব্যও দেখা গিয়েছে। ফাইনালে নোবেল তাঁর দেশের গান ‘বাংলাদেশ’ গেয়েছিলেন। অনেকেই এই ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছেন, কেন কোনও জনপ্রিয় ভারতীয় গান না গেয়ে বাংলাদেশের দেশাত্মবোধক গান তিনি ফাইনাল রাউন্ডে গাইতে গেলেন। অনেকের মতে এই গানের ভাবার্থ বা অন্তর্নিহিত আবেগ কোনও ভারতীয় বুঝবে না। এই গান গেয়ে নিজের দেশের প্রতি টানকে হয়ত বোঝানো যায়, কিন্তু অন্য দেশে গিয়ে এই গান গেয়ে বিজয়ী হওয়ার আশা করা যায় না।
তবে অনেকেই অঙ্কিতার যোগ্যতাকে স্বীকার করে নিয়ে বলেছেন যে তাঁকে এদিন কেউ ছুঁতে পারেনি। অনেকেই অবশ্য বিচারকদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। এক শ্রোতা লিখেছেন, “‘বাংলাদেশ’ গানটি জেমস এর মত আবেগ দিয়ে নোবেল গাইতে পারে নাই। এটার উপর বিচার করে যদি পঞ্চম হয়ে থাকে, তাহলে ঠিক আছে।”
তবে নোবেলের তৃতীয় হওয়াকে বাংলাদেশের অনেকেই এখনও মেনে নিতে পারেননি।
শ্রোতারা নানারকম মতামত দিলেও নোবেল নিজে বিচারকদের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, “‘সারেগামাপা’ আমার জন্য একটা দীর্ঘ জার্নি। এই জার্নিতে আমি অনেক কিছু শিখেছি, জেনেছি এবং ভক্তসহ সবার ভালোবাসা পেয়েছি। আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। বিচার প্রক্রিয়া কিংবা আমার রানারআপ হওয়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না। শুধু বলব, আমরা বাংলাদেশের সবাই এক একটা নোবেল। আমরা দেখিয়ে দিয়েছি। তাই আমরা সবাই চ্যাম্পিয়ন।”
এই প্রসঙ্গে বলা যায় কিছুদিন আগে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের ‘ভিঞ্চিদা’ ছবিতে অনুপম রায়ের সুরে নোবেলের গাওয়া গান শ্রোতাদের প্রশংসা পেয়েছে।