দোলের দিন আর নয় বসন্ত উৎসব, সিদ্ধান্ত বিশ্বভারতীর
বোলপুর: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বসন্ত উৎসব পালনের রীতিতে আসতে চলেছে বড়সড় পরিবর্তন। দোলের দিন আর পালন করা হবে না এই উৎসব। বরাবর এই অনুষ্ঠান দোলপূর্ণিমার দিনেই উদযাপিত হয়ে থাকে। কিন্তু এই বছর উৎসবকে ঘিরে নানান অপ্রীতিকর ঘটনার জেরে বিশ্বভারতীর রিভিউ কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আগামী বছর থেকে দোলের দিন এই উৎসব আর পালন করা হবে না।
সম্প্রতি এই উৎসব সংক্রান্ত বৈঠকে যোগ দেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য, কর্মসচিব, অধ্যাপক ও অন্যান্য পদাধিকারীরা। উপস্থিত ২০ জন সদস্যের সম্মতিতে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। আগামী বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ মার্চের মধ্যে কোনও একদিন পালন করা হবে বসন্ত উৎসব। বৈঠকে এও জানানো হয়, বসন্ত উৎসবকে এখন থেকে বিশ্বভারতীর আভ্যন্তরীণ অনুষ্ঠান হিসেবে গণ্য করা হবে এবং বহিরাগতদের প্রবেশাধিকার দেওয়া হবে না। বাইরে থেকে অতিথিদের আসাও বন্ধ করা দেওয়া হবে।
নাগরিক নিঃসঙ্গতাকে বিষয় করে আসছে সোহাগ সেনের নতুন নাটক
২১ মার্চ দোলের দিন বহিরাগত দর্শনার্থীদের আগমনে বিশ্বভারতী সংলগ্ন এলাকা তথা সমগ্র শান্তিনিকেতনে প্রবল বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। ভেঙে পড়ে ট্র্যাফিক ব্যবস্থা। কলকাতা ও অন্যত্র থেকে আসা মানুষের ঢল পথে নামে রাত থাকতেই। সকাল সাড়ে নটা থেকে কয়েক ঘণ্টা শহরের যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে যায়। এমনকি অ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশের গাড়িও আটকে পড়ে। বিপদে পড়েন স্থানীয় মানুষ। ভিড়ের চাপে আহত হন অনেকেই। নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও নষ্ট করা হয় প্রচুর পলাশ গাছ। প্লাস্টিকের ব্যবহারে কোনও নিয়ন্ত্রণ চোখে পড়েনি। বহু মানুষকে যত্রতত্র মদ্যপান করতে দেখা যায়। শান্তিনিকেতনের চিরাচরিত নিয়ম ভেঙে রঙ খেলতেও দেখা যায় মানুষকে। এই চরম অব্যবস্থার জন্য এলাকার মানুষ স্থানীয় প্রশাসন ও বিশ্বভারতীকে দায়ী করেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রিভিউ কমিটির বৈঠকে উৎসবের দিন পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ছোটদের জন্য ছবি প্রযোজনায় এগিয়ে এলেন গ্রামের সাধারণ মানুষ
বৈঠকের শুরুতেই উপাচার্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম থেকে তাঁর কাছে আসা বসন্ত উৎসব সংক্রান্ত নানান বার্তা পড়ে শোনান। তারপরে এই নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। বলা হয় দিন পরিবর্তনের কারণে অনুষ্ঠানসূচীতে কোনও পরিবর্তন আসবে না। তবে আবির খেলা নাও হতে পারে। বিশ্বভারতীর গেস্ট হাউস বুকিং-এর ওপরেও এই সময় নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন আশ্রমিক, প্রাক্তনী ও শান্তিনিকেতনের বাসিন্দারা।