‘মিট্টি’র মাধ্যমে শান্তির বাণী প্রচার
কলকাতা: বর্তমানে যখন বডি শেমিং মানুষের আত্মবিশ্বাসের দেওয়াল ভেঙে গুঁড়িয়ে দিচ্ছে, ঠিক তখনই দেহ সঞ্চালনার মাধ্যমে সেই ভেঙে পড়া আত্মবিশ্বাসকে পুনর্জীবিত করতে শুরু হয়েছে ডান্স থেরাপি। গতকাল শহরে এরকমই একটি কর্মযজ্ঞের আয়োজন করল ‘পাঠশালা ইনস্টিটিউট অফ পারফর্মিং আর্টস অ্যান্ড ফিটনেস’।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্যায়ে ‘পাঠশালা’র ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের শিক্ষকদের সঙ্গে নাচের নানান ফর্মের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাবনা তুলে ধরলেন। বিশেষভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করল খুদে নৃত্যশিল্পীরা।
দ্বিতীয় পর্যায়ে ছিল পূর্ণাঙ্গ নৃত্যনাট্য ‘মিট্টি’। ‘একতা নগর’ নামে ভারতের কোনও একটি গ্রামে পরস্পর বিরোধী দুটি দল ‘ধানকা’ ও ‘কাঠোরী’র মধ্যে রেষারেষিতে তৈরি হয় সীমানা। এই সীমানার ঠিক মাঝখানে পড়ে যায় একটি পাঠশালা। কিন্তু এই ঘৃণা, বিদ্বেষ কাটিয়েও দল দুটি কিভাবে এক হয়ে প্রেম ও শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেয়, সেই গল্পই বলে ‘মিট্টি’। ধ্রুপদী নৃত্যশৈলী ছাড়াও, হিপ-হপ, সমসাময়িক ও হিন্দী ছবির গানের সঙ্গে নাচও ছিল ‘মিট্টি’তে। নৃত্যনাট্যটি লিখেছেন ঋষি পান্ডে, পরিচালনা করেছেন ‘পাঠশালা’র কর্ণধার প্রতিম রায়।
গান শেষ আর জান শেষ তো একই কথা রাজামশাই
অনুষ্ঠান প্রযোজনার দায়িত্বে থাকা মৌমিতা দত্ত বললেন, “‘মিট্টি’ একতার গল্প। বর্তমান পরিস্থিতিতে যেখানে মানুষ বড়ই একা, সেখানে ‘মিট্টি’ একসঙ্গে বাঁচার কথা বলে।”
প্রতিম রেডিওবাংলানেট-কে জানালেন, “নাচের পাশাপাশি এই বছর আমরা অভিনয়কেও গুরুত্ব দিচ্ছি। এই প্রথমবার একটি পূর্ণাঙ্গ নৃত্যনাট্য উপস্থাপন করলাম আমরা।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ‘সোয়েটার’ ছবির পরিচালক শিলাদিত্য মৌলিক। জানালেন, “দারুণ লাগলো অনুষ্ঠানটি। বিশেষ করে বাচ্চাদের নাচ তুলনাহীন। বর্তমানে যখন দেখি ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা মোবাইল হাতে মগ্ন, তখন ভবিষ্যতের কথা ভেবে ভয় লাগে। কিন্তু নাচগানের মাধ্যমে এরকম একটি সুন্দর কাজের সঙ্গে তারা জড়িত দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগছে।”
শব্দ যখন ছবি আঁকে
উপস্থিত ছিলেন বাংলা টেলিভিশনের জনপ্রিয় শিল্পী তিতাস ভৌমিকও। “২০১৮ সালে আমি ‘পাঠশালা’র সঙ্গে যুক্ত হই। ‘পাঠশালা’ এখন আমার পরিবারের মত। আজ এই অনুষ্ঠান দেখে ভীষণ ভালো লাগছে। অনেক শুভেচ্ছা ‘পাঠশালা’কে,” বললেন তিতাস।
এছাড়াও ছিলেন ইন্দ্রনীল মল্লিক, অনুরাধা মুখোপাধ্যায়, সোহিনী সান্যাল ও উষশী রায়ের মত তারকারা। ‘বকুল কথা’ খ্যাত উষশী এবং সোহিনী দুজনেই একসময় ‘পাঠশালা’র সদস্য ছিলেন। “নাচের মাধ্যমে কিভাবে একটা সুন্দর দিন শুরু করা যায় সেটা ‘পাঠশালা’র থেকে শিক্ষণীয়। আমি নিজেও পাঠশালার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম যদিও বর্তমানে কাজের চাপে ও একটু অলসতার কারণে সেভাবে আসা হয় না,” জানালেন ‘ত্রিনয়নী’ খ্যাত ইন্দ্রনীল।
পরবর্তীকালে ‘মিট্টি’কে কলকাতার বাইরে বা শহরেই অন্য কোথাও দেখা যাবে কি না, সে ব্যাপারে প্রতিম জানালেন, “আসলে সবটাই নির্ভর করছে দর্শকদের ওপর। তারা চাইলে ‘মিট্টি’ অন্য জায়গায় আরও ভালোভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব।”