বিলুপ্তির পথে টোটো, ঢাকায় রাজাদিত্যর নতুন তথ্যচিত্র

RBN Web Desk: বৈচিত্র্যের দেশ ভারতবর্ষ। বিভিন্ন জাতি, ধর্মের পাশাপাশি এদেশে রয়েছে একাধিক ভাষা। তবু স্বাধীনতার পর থেকে ভারতের প্রায় দেড়শো ভাষার মৃত্যু ঘটেছে। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি চার মাসে হারিয়ে যাচ্ছে অন্তত একটি করে ভাষা। এর মধ্যে যে ৩০টি ভাষা বিলুপ্তপ্রায় অবস্থায় আছে তার মধ্যে অন্যতম টোটো। ভারত-ভুটান সীমান্তের শেষ গ্রাম টোটোপাড়ার নিজস্ব ভাষা টোটো। ১,৫৮৫ জন মানুষ এই ভাষায় কথা বলেন যার মধ্যে  প্রায় ৩০০-৪০০ জন রোজগারের তাগিদে গ্রামের বাইরে পাড়ি দিয়েছেন। বর্তমানে এই ভাষাভাষী মানুষের সংখ্যা  ১,০০০ থেকে ১,৩০০-এর মধ্যে। ইউনেস্কো সম্প্রতি এই ভাষাকে ক্রিটিকালি ইন ডেঞ্জার হিসেবে চিহ্নিত করেছে।    

ক্রমশ বিলুপ্তির পথে যাওয়া টোটো ভাষা নিয়ে রাজাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায় তৈরি করেছেন তাঁর নতুন তথ্যচিত্র ‘লস্ট ফর ওয়ার্ডস’। ২০তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের সিনেমা অফ ওয়ার্ল্ড বিভাগের প্রতিযোগিতায় দেখানো হবে এই ছবি।

ছবির মূল বিষয় বিলুপ্তপ্রায় টোটো ও এই ভাষাভাষী মানুষদের জীবনযাপন। ৯০ মিনিটের এই তথ্যচিত্রের মূল ভাবনা পরিচালকের নিজস্ব। চিত্রগ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন তন্ময় কর্মকার, গীরিধারী গড়াই ও শুভজিৎ রায়। ছবির শব্দগ্রহণ ও সুরারোপের দায়িত্বে ছিল ব্যাকবেঞ্চার্স। ছবিটি সম্পাদনা করেছেন সুমন্ত সরকার।




এরকম একটি বিষয় নিয়ে তথ্যচিত্র কেন?

“ভাষা আমাদের জীববৈচিত্র্যের এক প্রতিচ্ছবি। আর সেদিক থেকে আমার এই ছবিও আমাদের জীবনের একটা প্রতিবিম্ব,” বললেন রাজাদিত্য। “এই বৈচিত্র্য বর্তমানে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। টোটো গ্রামের কয়েকজন মানুষে, যাঁরা তিব্বত থেকে এসেছিলেন, তাঁরাই এই ভাষা রক্ষা করার চেষ্টা করে চলেছেন। তাঁদের মধ্যে ধনীরাম টোটো, সত্যজিৎ টোটো ও বিপ্লব নায়ক অন্যতম। টোটো ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য এই তিনজনের আপ্রাণ প্রচেষ্টার যে লড়াই তাকে জনসমক্ষে নিয়ে আসার জন্যই আমার এই ছবি। বহুবছর গবেষণার পর ছবিটি তৈরি করেছি।”

বিলুপ্তির পথে

ধনীরাম টোটো

ধনীরামই প্রথম টোটো ভাষায় উপন্যাস লেখেন এবং ২০১৪ সালে এই ভাষার বর্ণমালা সৃষ্টি করেন। ভাষাতত্ত্ব, ফোনেটিক, লিপির বিজ্ঞান সংক্রান্ত নানা বই সংগ্রহ করতে ভালোবাসেন ধনীরাম।

“টোটো এমনই এক জাতি যাদের ভাষার কোনও লিপি নেই,” বললেন ধনীরাম। “এই অবস্থায় এই জাতির অস্তিত্বের সংকট ক্রমশ প্রবল হচ্ছে। বুদ্ধিজীবীরা কী জানেন না যে ইংরেজি শিখেও আজকাল ছেলেমেয়েরা চাকরি পাচ্ছে না? সেখানে দাঁড়িয়ে টোটো ভাষা চাকরি আনতে পারবে কিনা আমি জানি না। তবে এই ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখা আমাদের জাতিসত্ত্বার প্রশ্ন।”

আরও পড়ুন: বাকি আর এক মাস, ভারতে নয় ‘ইন্ডিয়ানা জোন্স’

১৯ ও ২০ জানুয়ারি পাবলিক লাইব্রেরি অডিটোরিয়াম ও বাংলাদেশ শিল্পকলা অ্যাকাডেমির জাতীয় আর্ট গ্যালারিতেও প্রদর্শিত হবে লস্ট ফর ওয়ার্ড। 



Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *