আগে সকলের সুস্থ থাকাটা জরুরি: কিঞ্জল
RBN Web Desk: শুটিং বন্ধ হয়ে যাওয়ায় টালিগঞ্জ স্টুডিওপাড়ায় বহু শিল্পী ও কলাকুশলী অসুবিধায় পড়লেও, বর্তমান পরিস্থিতিতে আগে সকলের সুস্থ থাকাটা বেশি জরুরি বলেই মনে করেন অভিনেতা কিঞ্জল নন্দ। ১৬ মে থেকে পশ্চিমবঙ্গে লকডাউন শুরু হওয়ার ফলে সিনে টেকনিশিয়ন ফেডারেশন আগামী ১৫ দিন রাজ্যে সমস্ত ছবির ও টেলিভিশনের কাজ স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করেছে। গত একমাসে রাজ্যের কোভিড পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হতে থাকায় টালিগঞ্জে কাজের পরিমাণ স্বাভাবিকভাবেই কমে গিয়েছিল। তা সত্বেও ধারাবাহিকের শুটিং চালু রাখা হয়েছিল যেহেতু সেগুলি সপ্তাহে সাতদিন সম্প্রচারিত হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে সেগুলির শুটিং বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অর্থসঙ্কটে পড়বেন অনেকেই।
তবে ইস্টার্ন ইন্ডিয়া মোশন পিকচার্স অ্যাসোসিয়েশনের অধ্যক্ষ পিয়া সেনগুপ্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এক চিঠিতে লিখেছেন, যদি ৫০ জন লোক নিয়ে বিবাহ বাসরের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে, তাহলে সবরকম সাবধানতা অবলম্বন করে অল্প কিছু লোক নিয়ে শুটিং করতে অসুবিধা কোথায়?
আরও পড়ুন: সব প্রতিযোগীদের প্রশংসা করতে বলা হয়েছিল, বিস্ফোরক অমিত কুমার
কিঞ্জল রেডিওবাংলানেট-কে জানালেন, “একজন ডাক্তার হিসেবে আমি চাইব পরিস্থিতি আগে একটু স্বাভাবিক হোক। আমরা সকলেই দেখতে পাচ্ছি চারদিকে বেড নেই, অক্সিজেনের অভাব, ওষুধ অমিল। এমনকি যথেষ্ট পরিমাণে ডাক্তার, নার্স বা ওয়ার্ড বয়েরও অভাব রয়েছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমি কখনওই চাইব না পরিস্থিতি একেবারে হাতের বাইরে চলে যাক। এই মুহূর্তে অবস্থাটা সত্যিই চিন্তার।”
অভিনেতা যীশু সেনগুপ্তর তত্ত্বাবধানে দক্ষিণ কলকাতায় একটি সেফ হোম শুরু করার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন কিঞ্জলসহ আরও অনেকেই। “এমন নয় যে অভিনেতারা সবসময় কাজ করেন,” বললেন কিঞ্জল। “সেটা ভেবে যদি আমরা এই পনেরো দিন একটু কষ্ট করে কাটিয়ে দিতে পারি তাহলে হয়ত সকলের জন্যই ভালো হবে। তবে আমার অভিনেতা সত্বা অবশ্যই চাইছে কাজে ফিরতে। আমার নিজের শুটও ২৫ মে থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল। এই পরিস্থিতিতে সবই বন্ধ হয়ে গেল। তবে এটাও ঠিক যে অল্প লোক নিয়ে শুটিং করা সম্ভব, যদি কাজ শুরুর আগে সকলের রাপিড টেস্টের করা যায়।”
আরও পড়ুন: সত্যজিতের নাম ব্যবহৃত হোক, চান না সন্দীপ
গতবছর লকডাউনের ঠিক পরেই খুব অল্প লোকজন নিয়ে ‘একেনবাবু’ সিরিজ়ের শুটিং করেছিলেন তাঁরা। সেখানে সকলের জন্য টেস্ট ও স্যানিটাইজ়েশনের ব্যবস্থা ছিল বলে জানালেন কিঞ্জল। প্রত্যেকটি কর্মীর স্বাস্থ্যের দিকটা আগে মাথায় রাখা দরকার বলেই মনে করেন তিনি। “আমার মতো অনেকেই শুটিং ফ্লোরে ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন। তবে সেক্ষেত্রে সবচেয়ে আগে এই জিনিসগুলোর সঠিক ব্যবস্থা করা জরুরি,” বললেন ‘হীরালাল’ ছবির নামভূমিকার অভিনেতা।
তবে ধারাবাহিকের শুটিং বন্ধ হলে অজস্র শিল্পী ও টেকনিশিয়ন বিপদে পড়বেন। তাই তাঁদের কথা মাথায় ছোট ইউনিট নিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব, এমনই মত কিঞ্জলের। “ধারাবাহিকে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের পক্ষে অনির্দিষ্টকাল কাজ বন্ধ করে বসে থাকা সত্যিই কষ্টকর। তবে ছোট ইউনিটের ক্ষেত্রেও সুরক্ষার দিকটা আগে দেখা দরকার। দুঃস্থ শিল্পীদের সহায়তার জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনেকেই এগিয়ে আসেন সেটা আমরা গত বছর দেখেছি। সমষ্টিগতভাবে কাজটা ফেডারেশনের তরফে দেখা উচিত। এই অবস্থায় আবার সিনেমা সিরিয়ালের শুটের কী দরকার, এগুলো বন্ধ রাখাই ভালো, এমন কথা আগেরবার অনেক জায়গায় শুনেছি। কিন্ত মানুষ যখন একা বাড়িতে বসে থাকেন, তখন সময় কাটানোর জন্য একটা ওয়েব সিরিজ় বা সিনেমাই তাঁদের অনেকটা স্বস্তি দেয়। গত লকডাউনে এ কথা প্রমাণিত যে বিনোদন মানুষকে মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে কতটা সাহায্য করে। তাই এই নিয়ে কোনও দ্বিমত থাকা উচিত নয়” জানালেন কিঞ্জল।