এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগদীশ বসু জন্মজয়ন্তী পালন
এডিনবরা: গত ৩০ নভেম্বর, জগদীশচন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল ভবনে স্মরণ করা হল এই প্রবাদপ্রতীম বাঙালি বৈজ্ঞানিককে। স্কটিশ পদার্থবিদ ম্যাক্সওয়েলের তত্ত্বকে কলকাতায় বসে ‘অদৃশ্য আলোক’-এর পরীক্ষা করে জগদীশ বসু প্রথম প্রমাণ করেন যে বিনা তারে সংবাদ প্রেরণ সম্ভব। এই অনুসন্ধানই বেতার আবিষ্কারের কালজয়ী সূচনা। জগদীশচন্দ্রের জন্মদিনে তাই ম্যাক্সওয়েল ভবনেই এই অনুষ্ঠান একটি আবেগঘন মুহূর্ত সৃষ্টি করে।
এডিনবরার কতিপয় বাঙালির প্রচেষ্টায় এক জমজমাট আলোচনা সভার মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানো হয় এই বিজ্ঞানীকে। উল্লেখযোগ্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন মেঘমালা দাস, মোম মুখোপাধ্যায়, মিঠুন সাঁতরা ও স্বাগতম সেন।
গান শেষ আর জান শেষ তো একই কথা রাজামশাই
অনুষ্ঠানের সূচনা হয় বসু বিজ্ঞান মন্দির-এর প্রার্থনাগীতি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘মাতৃ মন্দির পুণ্য অঙ্গন’ সমবেত সংগীতের মাধ্যমে। গিটারে এই গানটি তুলে ধরেন শুভ্রনীল ভদ্র। আলোচনা সভায় উঠে আসে জগদীশ বসুর জীবন সংগ্রাম, কর্মজীবনের নানান ঘটনা ও উল্লেখযোগ্য আবিষ্কারের কথা। স্মরণ করা হয় রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁর গভীর বন্ধুত্ব ও ভগিনী নিবেদিতার সহযোগিতার কথা। এছাড়াও ‘অব্যক্ত’ পুস্তক থেকে তুলে ধরা হয় রবীন্দ্রনাথের কিছু দার্শনিক চিন্তাভাবনা যা আজও সমান প্রাসঙ্গিক। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অবাঙালি বিজ্ঞানপ্রেমী গবেষণারত ছাত্রছাত্রীরাও।
অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয় জগদীশ বসু স্মরণে জন্মদিনের কেক কাটার মাধ্যমে। এই বিজ্ঞানীর আজীবন গভীর ভালোবাসা ছিল গাছপালার প্রতি। তাই কেকের উপর সবুজ গাছের অলঙ্করণ করেন উৎসা কর্মকার।
তিন মূর্তি ও পায়ের তলায় সরষে
বাঙালিরা রবীন্দ্রনাথ, স্বামী বিবেকানন্দ ও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন পালন করেন সাড়ম্বরে। কিন্তু বিলেতের মাটিতে প্রায় বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যাওয়া বিজ্ঞানীর জন্মদিন পালন এক অভিনব প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে। এই ধারা বজায় রেখে আগামী বছর আরও অনেক বরেণ্য বাঙালির জন্মজয়ন্তী পালন করার উৎসাহ প্রকাশ করেছেন এডিনবরার বাঙালিরা।