প্রেক্ষাগৃহ বনাম ওটিটি: কী বলছেন বাংলার পরিচালকরা?

RBN Web Desk: করোনার দাপটে বন্ধ সব প্রেক্ষাগৃহ। অবস্থা এমনই যে অমিতাভ বচ্চন ও আয়ুষ্মান খুরানা অভিনীত পরিচালক সুজিত সরকারের ছবি ‘গুলাবো সিতাবো’ মুক্তি পেতে চলেছে ওভার দ্য টপ (ওটিটি) প্ল্যাটফর্মে, অর্থাৎ ওয়েব মাধ্যমে। বিদ্যা বালন ও যীশু সেনগুপ্ত অভিনীত অনু মেননের ‘শকুন্তলা দেবী’ও মুক্তি পাবে ওটিটিতে। পিছিয়ে নেই বাংলাও। নাট্যকার ও পরিচালক দেবেশ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ইয়ে’ সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে একটি নতুন ওয়েব মাধ্যমে। তাহলে কি ওটিটিই হতে চলেছে আগামীদিনে ছবির ভবিষ্যৎ? কী বলছেন বাংলার পরিচালকরা?

দেবেশ চট্টোপাধ্যায়: এখন যা পরিস্থিতি তাতে মানুষ হলে আসার সাহস পাবেন না। প্রচুর ছবি আটকে রয়েছে। তাছাড়া আমাদের মতো যারা কম বাজেটের ছবি করে, তাদের ছবি মাল্টিপ্লেক্সে মুক্তির জন্য নানারকম সমস্যার সৃষ্টি করা হয়। কাজেই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেলে সেই একটা সপ্তাহ আমাকে লড়াইটা করতেই হতো। সেই অবস্থায় ওটিটিতে ছবি মুক্তি পেলে আমি যে ধরণের দর্শকের জন্য সেটা বানিয়েছি তাঁদের কাছে পৌঁছে দিতে পারব।

অনিকেত চট্টোপাধ্যায়: ‘হবুচন্দ্র রাজা গবুচন্দ্র মন্ত্রী’র মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল ১ মে। এই ছবির পোস্ট-প্রোডাকশনের বেশ কিছু কাজ বাকি তাই মুক্তি নিয়ে চিন্তাভাবনার সময় এখনও আসেনি। ওটিটি অচিরেই একটা বড় মাধ্যম হয়ে উঠবে। তবে বড়পর্দার ছবি আর ওটিটির জন্য তৈরি করা ছবি কখনওই এক হতে পারে না। যদি ওটিটির জন্য ছবি করি তাহলে সেভাবেই শুট করব। সেক্ষেত্রে খরচও কম হবে, এক্সপেরিমেন্টও করা যাবে। ‘হবুচন্দ্র’ যে স্কেলের ছবি তাতে বড়পর্দায় না দেখাতে পারলে লাভ নেই। তবে মানুষের হাতে টাকা না থাকলে মাল্টিপ্লেক্সে ছবি দেখার খরচ তাঁরা কতটা ব্যয় করতে পারবেন তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।

আরও পড়ুন: বাইপোলার ডিসঅর্ডার থেকে চরম অবসাদ, হোমসে ‘ডুবে’ গিয়েছিলেন জেরেমি

ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায়: এটা আদৌ কোন দ্বন্দ্বই নয়। দুটো সম্পূর্ণ আলাদা মাধ্যম, একটা অন্যটার পরিপূরক হয়ে উঠবে বলে মনে হয় না। এখনকার পরিস্থিতিটা একেবারেই সাময়িক। কয়েকমাস পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এই ধাক্কাটা ধীরে-ধীরে কাটিয়ে ওঠা যাবে। স্প্যানিশ ফ্লু যখন এসেছিল তখনও বলা হয়েছিল লোকে আর হলে গিয়ে ছবি দেখবে না। সে কথা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। টেলিভিশন যখন প্রথম এলো লোকে বলেছিল আর কেউ হলে যাবে না। কই তেমনটা তো হয়নি। কাজেই আমার মনে হয় দুটো মাধ্যম নিজেদের মতো করে সমান্তরাল পথে চলবে। মানুষ কখনোই প্রেক্ষাগৃহ থেকে মুখ ফেরাবেন না। এই পরিস্থিতি কেটে গেলে মানুষকে ভয় ভেঙে হলে যাওয়ার অভ্যেসে আবার ফেরত নিয়ে যেতে হবে।

শিলাদিত্য মৌলিক: এখন অনেকেই অন্যরকম ভাবছেন ঠিকই তবে বরাবর এই ছবিটাই থাকবে না। যে সব প্রযোজকদের টাকা আটকে রয়েছে, তারা যদি সেটা বার করার জন্য এই মুহূর্তে ওটিটিতে ছবি দেখান, তাহলে তাদের দোষ দেওয়া যায় না। আমার পরবর্তী ছবি ‘হৃৎপিণ্ড’ নিয়ে আমি প্রযোজকের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা লকডাউন ওঠা অবধি অপেক্ষা করব। তারপর আশা করছি পরিস্থিতি পাল্টাবে, তখন সিদ্ধান্ত নেব। তবে ওটিটিতে ছবি করার প্রোডাকশন কস্ট কমবে বলে মনে হয় না। বড়পর্দার একটা অন্য আবেগ আছে। বাড়িতে বসে ছবি দেখা মানে তো ফোন ঘাঁটতে-ঘাঁটতে একবার উঠে গিয়ে ভাতটা হলো কিনা দেখে এসে আবার দেখতে বসা। সিনেমাহলে ছবি দেখার আমেজ বাড়িতে থাকে না।

Amazon Obhijaan



Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Swati

Editor of a popular Bengali web-magazine. Writer, travel freak, nature addict, music lover, foody, crazy about hill stations and a dancer by passion. Burns the midnight oil to pen her prose. Also a poetry enthusiast.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *