১০০ দিনে ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’, দর্শক তৈরিতে জোর ধ্রুবর

কলকাতা: ১০০ দিন অতিক্রম করল ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’। ২৪ মে মুক্তি পেয়ে ১ সেপ্টেম্বর বক্স অফিসে ১০০ দিন পূর্ণ করল ধ্রুব বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত এই ছবি। এই সিরিজ়ের প্রথম ছবি ‘গুপ্তধনের সন্ধানে’ মুক্তি পেয়েছিল গত বছর। দুটি ছবিরই মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন আবীর চট্টোপাধ্যায়, অর্জুন চক্রবর্তী ও ইশা সাহা।

সম্প্রতি শহরের এক প্রেক্ষাগৃহে কেক কেটে ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’-এর সাফল্য উদযাপন করলেন পরিচালক সহ ছবির কলাকুশলীরা। আবীর, অর্জুন ও আরিয়ান ভৌমিক ছাড়াও উপস্থিত ছিল শিশুশিল্পী কুচো।




মৌলিক গল্প হিসেবে সোনাদা (ধ্রুবর ‘গুপ্তধন’ সিরিজ়ের কেন্দ্রীয় চরিত্র ইতিহাসবিদ সুবর্ণ সেন) যেভাবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে তার মূল কারণ হিসেবে বলা যায় বহুদিন ধরে ছোটদের জন্য, বা বলা ভালো গোটা পরিবারের সঙ্গে বসে দেখার মতো ছবি বাংলায় তৈরি হচ্ছিল না। সেই ফাঁকা জায়গাটা ‘গুপ্তধন’ সিরিজ এসে কিছুটা হলেও পূর্ণ করেছে বলেই মনে করেন ধ্রুব। “অনেকগুলো বছর হলো বাংলা ছবিতে আমরা ছোটদের ব্রাত্য করে দিয়েছি,” রেডিওবাংলানেট-কে জানালেন পরিচালক। “পাঁচ থেকে তিরিশ, এই বয়সের ছেলেমেয়েরা বাংলা ছবি দেখেই না। আমরা যদি তাদের কথা মনে না রাখি তাহলে কিন্তু খুব বড় ভুল করা হবে, আগামীদিনের দর্শক তৈরি করতে পারব না। তাই ‘গুপ্তধন’ সিরিজ বাঙালিকে তার শিকড়ে ফিরিয়ে আনার জন্যই বানানো হয়েছে বলা যায়।”

তবে গত কয়েক বছরে শিশু ও কিশোরদের কথা ভেবে ছবি তৈরি হওয়া শুরু হয়েছে টালিগঞ্জে। বছর দশেক আগেও এই ট্রেন্ড ছিল না। ‘রেনবো জেলি’, ‘চাঁদের পাহাড়’, ‘অ্যাডভেঞ্চারস অফ জোজো’, ‘আলিনগরের গোলকধাঁধা’ বা ‘জেনেরেশন আমি’র মতো ছবি শুধু স্কুল বা কলেজ পড়ুয়ারা নয়, আট থেকে আশি সকলেই দেখেছেন। এর সঙ্গে বাংলা সাহিত্যের কল্যাণে যোগ হয়েছে ফেলুদা, শংকর, কাকাবাবু ও যকের ধনের মতো সিরিজ়গুলো।

আরও পড়ুন: গান শেষ আর জান শেষ তো একই কথা রাজামশাই

ধ্রুবর দাবী, এমন একটা ছবি তিনি বানাতে চেয়েছিলেন যেখানে বাবা মায়েরা নির্দ্বিধায় ছেলেমেয়েদের হলে নিয়ে যেতে পারবেন। বাংলার ইতিহাস সম্পর্কে পরবর্তী প্রজন্ম একেবারেই ওয়াকিবহাল নয়, বাংলার বাইরে সেই অবস্থাটা আরও খারাপ বলে মনে করেন তিনি। সেখান থেকেই তাঁর এই ছবির ভাবনা, যেখানে ছোটদের মনে হবে মাঝে মাঝে সোনাদার সঙ্গে বেরিয়ে পড়তে পারলে অনেক মজা আর অ্যাডভেঞ্চারের সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা ইতিহাসও জানা হয়ে যাবে। আর তার সঙ্গে অবশ্যই থাকবে বাঙালিয়ানা।

কেমন সাড়া পাওয়া গেল এই শিশু কিশোর বা সদ্য যুবাদের মধ্যে থেকে দুর্গেশগড় নিয়ে?

“সাংঘাতিক। ছোটরা অসম্ভব উৎসাহ নিয়ে ছবিটা দেখতে এসেছে। এমন কি বিদেশেও বাবা মায়েরা বাঙালিয়ানা শেখাবার জন্যই ছবিটা বাচ্চাদের দেখাতে নিয়ে গেছেন। সেখানেও খুব ভালো সাড়া পেয়েছি। আমার মনে হয় এবার ছোটদের জন্য আরও ছবি তৈরি হবে, যেটা বাংলা ছবির জন্যেও সুদিন বয়ে আনবে,” জানালেন ধ্রুব।

আরও পড়ুন: রক্তবরণ মুগ্ধকরণ

তাঁর পরবর্তী ছবির ক্ষেত্রেও এই ছোটদের ভালো লাগার ব্যাপারটাকে মাথায় রেখেই তিনি কাজ করবেন বলে জানালেন পরিচালক।

একই কথা শোনা গেল আবীরের মুখেও। ছবির ১০০ দিন পূর্ণ করার সমস্ত কৃতিত্ব দর্শকদের দিলেন তিনি। “এই সিরিজ়ের সব ছবিই ছোটদের কথা মাথায় রেখেই বানানো হবে। ছোটরা সোনাদাকে ভালোবেসে ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’ দেখেছে, সেই কারণেই ছবিটা এত সফল। একটা ছবি টেলিভিশনে দেখানোর পরেও হলে চলছে এটা ভাবাই যায় না। বাংলা ছবির জন্য এটা খুব সুখবর বলেই আমার মনে হয়,” বললেন আবীর।

ছবি: অর্ক গোস্বামী

Amazon Obhijaan



Like
Like Love Haha Wow Sad Angry

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *