এগিয়ে এলেন আড়ংঘাটার মানুষ, মুক্তির পথে ‘দুধপিঠের গাছ’
কলকাতা: বাংলায় যখন ছোটদের জন্য ছবি একরকম বন্ধই হয়ে গেছে, তখনই এক অভিনব দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চলেছে পরিচালক উজ্জ্বল বসুর ‘দুধপিঠের গাছ’। উজ্জ্বলের ছবি প্রযোজনা করতে এগিয়ে এলেন নদীয়ার আড়ংঘাটার গ্রামের ৯৩০টি পরিবার ও দেশ বিদেশের আরো ১৯৬ জন মানুষ। ছবির বিভিন্ন ভূমিকায় অভিনয় করেছেন হর্ষিল দাস, দেবঙ্গনা গণ, রিয়া দাস, দামিনী বসু, কৌশিক রায় ও শিবানী মাইতি। ১৩ মার্চ শহরে ছবির ট্রেলার মুক্তি উপলক্ষ্যে উপস্থিত ছিলেন পরিচালকসহ ছবির শিল্পী ও কলাকুশলীরা।
ছবির কাহিনী গৌর নামের সাত বছরের একটি ছেলেকে কেন্দ্র করে। কিছু সমস্যার কারণে গৌর পরিষ্কারভাবে কথা বলতে পারে না। কিন্তু তাতে তার স্বপ্ন দেখা থেমে থাকে না। গৌরের স্থির বিশ্বাস যদি আম, জাম, কাঁঠালের বীজ মাটিতে পুঁতলে তার থেকে গাছ বেরোয় তাহলে একইভাবে পিঠেরও গাছ হওয়া সম্ভব। সে সত্যিই মাটিতে পিঠে পুঁতে রোজ সেখানে জল দেয়, আর গাছ বেরোবার অপেক্ষা করতে থাকে। সত্যিই কি গাছ বেরোয়? গৌরের স্বপ্নপূরণের কাহিনী নিয়েই ‘দুধপিঠের গাছ’ তৈরি করেছেন উজ্জ্বল।
আরও পড়ুন: ফাগুন লেগেছে বনে বনে
“আজকাল খুব শোনা যায় বাংলায় ভালো ছবি তৈরি হচ্ছে না। আমার মনে হয়েছিল ভালো ছবি তৈরির সম্ভাবনা যথেষ্টই আছে। অনেকের কাছেই ভালো চিত্রনাট্য আছে কিন্তু তাঁরা সুযোগ পান না। যেহেতু ছবি করা একটা ব্যয়বহুল ব্যাপার, তাই আমি যদি সাধারণ মানুষের সাহায্যে ছবি করে একটা মডেল তৈরি করতে পারি এবং গণমাধ্যমে প্রচার করে সেই ছবিটা মুক্তি পায়, তাহলে আরো অনেকেই এর থেকে উৎসাহিত হবেন। ইন্ডাস্ট্রি আরো অনেক প্রতিভা পাবে,” জানালেন উজ্জ্বল।
ছবিতে গৌরের মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন দামিনী। “ক্রাউডফান্ডিং কথাটা এখন হ্যাশট্যাগের দৌলতে অনেকেই জানেন, কিন্তু সেটা মূলত শহরকেন্দ্রিক ব্যাপার,” বললেন দামিনী। “উজ্জ্বলবাবুকে ওই গ্রামে ঢুকতে দেখে বাচ্চারা কীভাবে ‘মাষ্টারমশাই’ বলে ছুটে আসে, সেটা না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। এরকম দৃশ্য সিনেমায় দেখা যায়, বাস্তবে নয়। একটা মানুষকে কতটা বিশ্বাস করলে গ্রামের সকলে মিলে একটা ছবি তৈরির জন্য নিজেদের জমানো টাকা দিয়ে দিতে পারেন, এটা আমার নিজের চোখে দেখা। এইসব কারণেই আমি ছবিটা করতে চেয়েছিলাম। আশা করছি আমাদের কাজ সকলের ভালো লাগবে।”
ছবির সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন জয় সরকার।
৩ এপ্রিল মুক্তি পেতে চলেছে ‘দুধপিঠের গাছ’।