মহাকাশ যাত্রা ও রুদ্ধশ্বাস থ্রিলারের কোলাজ নিয়ে আসছে ‘দিন রাত্রির গল্প’
কলকাতা: কেমন হবে যদি একটি মেয়ে হঠাৎ করে একদিন বাড়ি না ফেরে? তারপর কারা যেন বাড়িতে এসে বলে তাঁদের মেয়েকে নাসা থেকে মঙ্গলগ্রহে পাঠানো হয়েছে। কেউ কিছুই জানল না, অথচ সেই মেয়ে চলে গেল মঙ্গলে? আবার ঝড়ের রাতে উপায় না দেখে কারোর বাড়িতে আশ্রয় নেওয়ার পর যদি দেখা যায় সেই বাড়ি জুড়ে শুধুই মৃত্যুর চিহ্ন? কী করণীয় তখন? এরকমই অদ্ভুত দুটো কাহিনী নিয়ে পরিচালক প্রসেনজিৎ চৌধুরী তৈরী করেছেন তাঁর প্রথম ছবি ‘দিন রাত্রির গল্প’। বাংলা ছবিতে মহাকাশে যাওয়ার গল্প এই প্রথম। ছবির কাহিনীকার সুপ্রীতি চৌধুরী ও প্রসেনজিৎ। অভিনয়ে আছেন প্রদীপ মুখোপাধ্যায়, রুমকি চট্টোপাধ্যায়, সৌরভ চক্রবর্তী, রজতাভ দত্ত, দেবেশ রায়চৌধুরী, রায়তী ভট্টাচার্য ও সুপ্রীতি নিজে। গতকাল শহরে এক অনুষ্ঠানে মুক্তি পেল ছবির ট্রেলার।
দুটো আলাদা গল্প থাকছে প্রসেনজিতের ছবিতে। প্রথমটি দিনের, পরেরটি রাত্রির। প্রথম গল্প অরুণিমাকে নিয়ে। আকাশ ছুঁতে কে না চায়, কিন্তু আকস্মিকভাবে যদি সে চাওয়া সত্যি হয়ে যায় তাহলে কী মানুষ খুশি হয়? সাতদিন ধরে নিখোঁজ অরুণিমার বাবা মা হঠাৎ জানতে পারেন তাঁদের মেয়েকে মঙ্গলগ্রহে পাঠাচ্ছে নাসা। পৃথিবী থেকে অরুণিমাই প্রথম মঙ্গলে পা রাখতে চলেছে। হতভম্ব বাবা মা বুঝতে পারেন না কী বলবেন।
পরের গল্প এক ঝড়জলের রাতের। একটি অসহায় মেয়ের সঙ্গে দেখা হয় একটি লোকের। সেই লোকটি নিজের বাড়িতে তাকে আশ্রয় দেয়। কিন্তু গোটা বাড়িটাই যেন রহস্যে মোড়া। মৃত্যুর নেশায় সারাক্ষণ বুঁদ হয়ে থাকে এই লোকটি। তার বিশ্বাস, সে মৃত্যুর সঙ্গে মুখোমুখি বসে কথা বলতেও সক্ষম। মেয়েটিকে সে একটি বিশেষ ঘরে যেতে বারণ করে। কিন্তু কথা শোনে না মেয়েটি। কী হয় তারপর?
আরও পড়ুন: পাকদণ্ডীর পথে পথে দেওরিয়াতাল
“সামাজিক আর সাংসারিক গল্প দেখে বিরক্ত হয়ে গেছে দর্শক,” দাবী প্রসেনজিতের। “এবার অন্য কিছু দেখানোর সময় এসেছ। দুটো গল্পই একটি মেয়ের স্বীকারোক্তি হিসেবে থাকছে। ছবিটা কিন্তু সায়েন্স ফিকশন নয়। বরং এইসবের মধ্যে দিয়ে ছবিটা আসলে মানুষের আবেগের গল্প। দুটো গল্পই ঈশ্বর, মৃত্যু ও ভালোবাসায় গিয়ে মিলে যায়।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিড়লা তারামণ্ডেলর ডিরেক্টর দেবীপ্রসাদ দুয়ারী। “আমি এই ছবির সঙ্গে জড়িত হয়েছি শুধুমাত্র একজন বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ হিসেবে,” বললেন তিনি। “মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান সচেতনতা গড়ে উঠুক এটাই আমার একমাত্র উদ্দেশ্য। বাংলায় এরকম ছবি আগে কখনও হয়নি। আগামী দিনে হোক এটাই চাইব। ২০৩০ সালে নাসা থেকে মঙ্গলে মানুষ পাঠাবার কথা। আমরাও আশা করতে পারি ভারত থেকে কোনও একদিন এই প্রচেষ্টা সফল হবে। তাই এই বিষয়ে ছবি হলে সাধারণ মানুষ মহাকাশ সম্পর্কে আরও আগ্রহী হবেন।”
আরও পড়ুন: বিশিষ্টজনের স্মৃতিচারণে জেগে রইলেন নবনীতা
অরুণিমার ভূমিকায় রয়েছেন রায়তী। তাঁর কাছে জানা গেল ছবির শুটিং পর্ব ছিল অত্যন্ত কঠিন। “আমি এমনিই রোগা। তবু প্রসেনজিৎদা আমাকে আরও রোগা হতে বলেছিল। কারণটা তখন বুঝিনি। তারপর ওয়র্কশপে এসে বুঝলাম কাজটা ঠিক কতটা কঠিন। মহাকাশে ভেসে থাকার দৃশ্যতে আমাকে দু’মাস মাইম ট্রেনিং করতে হয়েছে। শুরুটা খুব কঠিন হলেও পরেরদিকে ব্যাপারটা আয়ত্তে চলে আসে। প্রথম ছবি হিসেবে এই স্মৃতিটা চিরকাল মনে থাকবে,” বলেলন রায়তী।
ছবির একটি গান গেয়েছেন সোমলতা আচার্য। কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ইতিমধ্যেই প্রদর্শিত হয়েছে ছবিটি।
মহাকাশ যাত্রা ও রুদ্ধশ্বাস থ্রিলারের কোলাজ নিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পেতে চলেছে ‘দিন রাত্রির গল্প’।